মোটরসাইকেল

গতিসীমা ৩০ কিলোমিটারের প্রতিবাদে ঢাকায় মানববন্ধনের ডাক

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৮:৩৮ পিএম, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৩
ফাইল ছবি

মোটরসাইকেল চলাচল নীতিমালা-২০২৩-এর খসড়া প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধনের ডাক দিয়েছেন মোটরসাইকেল চালকেরা। আগামী বুধবার (১ মার্চ) জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজা সংলগ্ন রাস্তায় বিকেল ৩টায় ফুটপাতে এ কর্মসূচি পালন করবেন তারা।

মানববন্ধন কর্মসূচির অনুমতি চেয়ে গত শনিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কাছে আবেদন করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত চিঠিতে বলা হয়েছে, দেশের সব মোটরসাইকেল ব্যবহারকারীর পক্ষ থেকে এ কর্মসূচি পালিত হবে। কর্মসূচিটি হবে শান্তিপূর্ণ।

আরও পড়ুন: ‘গতির ঝড়’ তুলতে মোটরসাইকেলে প্রাণ ঝরছে শিশু-কিশোরদের

ডিএমপিকে দেওয়া চিঠিতে সই করেছেন তিন মোটরসাইকেল ব্যবহারকারী। তারা হলেন শাখাওয়াত হোসেন, এ ক ম ইকবাল মাহমুদ ও অনন্ত জান্নাত। চিঠিতে খসড়া নীতিমালাকে ‘জনবিরোধী’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।

এরই মধ্যে মানববন্ধন কর্মসূচি আয়োজনে ডিএমপির পক্ষ থেকে অনুমতি মিলেছে বলে আবেদনকারী শাখাওয়াত হোসেন জাগো নিউজকে জানিয়েছেন।

jagonews24

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘জনবিরোধী মোটরসাইকেল চলাচল নীতিমালা প্রত্যাহারের নিমিত্তে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন’ শীর্ষক ইভেন্ট পেজ খোলা হয়েছে। যেখানে প্রায় ২৪০০ জন ফেসবুক ব্যবহারকারী অংশ নিয়েছেন। ইমাহা বাইক রাইডার ক্লাব, বাইক বিডি, ডেসি বাইকারসহ একাধিক গ্রুপ এতে একাত্মতা জানিয়েছে।

মোটরসাইকেল ব্যবহারকারী শাখাওয়াত হোসেন জানান, তারা মানববন্ধন কর্মসূচির জন্য পুলিশের অনুমতি পেয়েছেন। শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খলভাবে কর্মসূচিটি পালন করতে চান। কোনো সংগঠনের ব্যানারে নয়, সাধারণ চালক হিসেবে এ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: জোরে মোটরসাইকেল চালানোর প্রতিযোগিতায় প্রাণ গেলো ৩ যুবকের

তিনি জানান, মোটরসাইকেল চালকদের অনেক ক্লাব রয়েছে। তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। এক হাজার ব্যবহারকারী মোটরসাইকেল নিয়ে কর্মসূচিতে অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

jagonews24

সম্প্রতি সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় গঠিত ৯ সদস্যের একটি কমিটি মোটরসাইকেল চলাচলের খসড়া একটি নীতিমালা করেছে। কমিটিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ), বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), পুলিশ এবং সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা রয়েছেন।

খসড়া নীতিমালায় শহরের ভেতরে মোটরসাইকেলের সর্বোচ্চ গতিসীমা ধরা হয়েছে ৩০ কিলোমিটার। মহাসড়কে ১২৬-এর কম সিসির (ইঞ্জিনক্ষমতা) মোটরসাইকেল চলাচল করতে পারবে না। পাশাপাশি পেছনে আরোহী নিয়ে মহাসড়কে মোটরসাইকেল চালানো যাবে না।

আরও পড়ুন: মোটরসাইকেলের কারণেই দুর্ঘটনা বেশি হয়: কাদের

খসড়া নীতিমালায় মোটরসাইকেল চলাচল নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা কমানো, মোটরসাইকেলের নিরাপদ ব্যবহার ও অপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকিপূর্ণ মোটরসাইকেল ব্যবহারে উৎসাহ তৈরি এবং মোটরসাইকেল চালকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানো- এ তিনটি উদ্দেশের কথা বলা হয়েছে।

খসড়া নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, জরুরি প্রয়োজনে স্বল্প দূরত্বে যাতায়াতের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহার করা হয়। সাম্প্রতিক সময়ে দূরের পথে মহাসড়কসহ সর্বত্র মোটরসাইকেলের চলাচল দেখা যায়। বিশেষ করে উৎসবের সময় মোটরসাইকেলের ব্যবহার বহুগুণ বেড়ে যায়। এক্ষেত্রে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিপুল প্রাণহানি ঘটছে। এজন্য মোটরসাইকেলের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।

jagonews24

নীতিমালায় ঈদের সময় মহাসড়কে ১০ দিন মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ রাখার কথা বলা হয়েছে। এছাড়া আরও কিছু বিষয় যুক্ত করেছে কমিটি।

এ বিষয়ে যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর জাগো নিউজকে বলেন, মোটরসাইকেলকে বিকশিত করার জন্য সব ধরনের পদক্ষেপ সরকার নিয়েছে। প্রতিবছর ৫ লাখ মোটরসাইকেল রাস্তায় নামছে। বেকাররা প্রশিক্ষণ ছাড়া রাইড শেয়ারিংয়ে নামছেন। এ জায়গায় সরকারের নীতি সহায়তা প্রয়োজন। স্পষ্ট একটা গাইডলাইন থাকা প্রয়োজন। নীতিমালাটিও যাত্রী ও চালকবান্ধব হওয়া প্রয়োজন।

আরও পড়ুন: নিম্নমানের হেলমেটের ছড়াছড়ি

তিনি বলেন, নীতিমালাটি আরও বেশি গবেষণা করে প্রণয়ন করা জরুরি। এটা হয়ে যায়নি, কেবল খসড়া হয়েছে। সবার সঙ্গে কথা বলে এটা প্রণয়ন করা উচিত। এটা আমাদের এখনো জানানো হয়নি। স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে বসে নীতিমালা করা উচিত।

ঈদের সময় মহাসড়কে ১০ দিন মোটরসাইকেল চলাচল বন্ধ রাখা প্রসঙ্গে মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, উন্নত গণপরিবহন ব্যবস্থা নিশ্চিত না করে এ ধরনের নীতিমালা করা হলেও তা বাস্তবায়ন করা সহজ হবে না। আমাদের অনেক আইন আছে, কিন্তু সড়কে বিশৃঙ্খলা কমে না। এখানে আইন বাস্তবায়ন করা যায় না। অযৌক্তিক কোনো নীতিমালা তৈরি হলে তা বাস্তবায়ন করা যাবে বলে আমি মনে করি না।

এসএম/এমকেআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।