উনি একটু অসন্তুষ্ট হয়েছেন, হিরো আলম প্রসঙ্গে ইসি রাশেদা
বগুড়ায় উপ-নির্বাচন নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলমের অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে নির্বাচন কমিশনার বেগম রাশেদা সুলতানা বলেছেন, ‘রেজাল্ট হান্ড্রেড পারসেন্ট সঠিক।’ এসব নির্বাচনে সিসি ক্যামেরা থাকলে পর্যবেক্ষণ করা ভালো হয় বলেও জানান তিনি।
রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘পত্রিকায় যেটুকু দেখেছি হিরো আলম তার একটু আপত্তি (জানিয়েছেন) বা উনি একটু অসন্তুষ্ট হয়েছেন। গণমাধ্যমে আসার পর আমরা মূলত এটা সকাল থেকে আমলে নিয়ে রেকি করার চেষ্টা করেছি। বগুড়ার ডিসির সঙ্গে কথা বলা, জেলা নির্বাচন অফিসার, উপজেলা নির্বাচন অফিসার, টিএনও- প্রত্যেকের সঙ্গে আমরা কথা বলেছি। সিইসি নিজে কথা বলেছেন। ডিসি আমাদের নিশ্চিত করেছেন যে, রেজাল্ট হান্ড্রেড পারসেন্ট সঠিক।’
বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আরও পড়ুন>>এ পরিস্থিতি থাকলে আর নির্বাচন করবো না: হিরো আলম
তিনি বলেন, ‘ভোটের আগের যে প্রক্রিয়াগুলো বা আচরণবিধি যে খুব একটা ভঙ্গ হয়েছে তা আমাদের কাছে মনে হয়নি। কোনো কিছু আমার নোটিসে (নজড়ে) এলে সঙ্গে সঙ্গে আমি ডিসি-এসপিদের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের দৃষ্টিতে দিয়েছি। কোনো প্রার্থী কিন্তু কমিশনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেননি। নির্বাচনের আগের প্রস্তুতি ভালো ছিল। আর ভোটের দিন ব্যাপক কী, কোনো অনিয়মই হয়নি আমার দৃষ্টিতে। বিশেষ করে নর্থ বেঙ্গলে বড় ধরনের কারচুপি, ভেতরে ভোট ডাকাতি বা ‘এর ভোট ও দিয়েছে’ এ রকম কিছু হয়নি। আমার মনে হয় পুরো ভোটটা সন্তোষজনক হয়েছে।’
এই নির্বাচনের বিষয়ে আর তদন্তে যাবেন কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘না, আমরা সন্তুষ্ট। আমাদের কাছে যে রেজাল্টশিট আছে, আমরা নিজেরাও একটু ক্যালকুলেট করে দেখলাম কোথাও কোনো ব্যত্যয় নেই। আমাদের দেশের কালচারটা কিন্তু এরকমই যে, একজন প্রার্থী যখন হেরে যান তখন নানা ধরনের প্রশ্নবিদ্ধ করার প্রবণতা দেখা যায়। শুধু হিরো আলম নন, আমরা যতগুলো নির্বাচন করলাম সব জায়গায়ই এ ধরনের প্রবণতা লক্ষ্য করেছি।’
আরও পড়ুন>> আমি এ ফলাফল মানি না: হিরো আলম
হিরো আলমের এজেন্টকে কেন্দ্রভিত্তিক ফলাফল দেওয়া হয়নি- এমন অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি যে, উনি নন্দিগ্রামে এজেন্ট দেননি। ডিসির সঙ্গে আমার যেটা কথা হয়েছে, তিনি আমাকে বলেছেন যে তিনি নিজে কেন্দ্র ভিজিট করেছেন অনেকগুলো। ওনার কোনো এজেন্ট পাননি। কাহালুতে ওনার কিছু এজেন্ট ছিল। সেখানে অন্য প্রার্থীদের এজেন্ট নেই বা রেজাল্ট দেওয়া হয়নি এমন কোনো অভিযোগ কিন্তু নেই। উনি (হিরো আলম) হেরে গেছেন, ওনার কষ্ট হয়েছে। কষ্ট নানাভাবে প্রকাশ করছেন। উনি এটা করতেই পারেন। একজন মানুষ বললেই তো আর সেটা হয়ে যায় না। প্রমাণ তো থাকতে হবে।’
ওয়েবসাইটে ফলাফল প্রকাশ করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এখনো সরকারিভাবে ফলাফল প্রকাশ করা হয়নি। আমরা যেটি পেয়েছি সেটি বেসরকারিভাবে। আসার পরে আমরা ওয়েবসাইটে দিয়ে দেবো।’
অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অনেকেই মুখে বলে ঝড় তোলেন কিন্তু প্রমাণ নিয়ে আমাদের কাছে আসেন না। আমাদের কালে যত নির্বাচন হয়েছে তারা কেউ আদালতে গেছেন বলে আমার তো জানা নেই। কুমিল্লা (কুমিল্লা সিটি করপোরেশন) নিয়ে এত কথা হলো। কই ওনারা তো আদালতে গেলেন না। উনি (হিরো আলম) বলেছেন যাবো, গেলে যাবেন। আমি তো অনেক কথাই মুখে বলতে পারি। তা প্রমাণ তো হতে হবে। অভিযোগ দেওয়া আর অভিযোগ প্রমাণ করা দুটার মধ্যে কিন্তু অনেক ফারাক।’
আরও পড়ুন>> দুই আসনেই হারলেন হিরো আলম
ইভিএমের ভোটে রেজাল্ট দিতে দেরি হওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের পর কিন্তু অনেক কাজ থাকে। চারটা, পাঁচটা রেজাল্ট শিট তৈরি করতে হয়। সবগুলো যখন কম্পাইল্ড করতে যায় বা দিতে যায় বারে বারে কিন্তু তা চেক, ক্রসচেক করতে হয়। তা না হলে হুট করে যদি একটা ভুল হয়ে যায়, ভুল হতেই পারে। এজন্য মেলাতে সময় লেগে যায়। সবগুলো মিলিয়ে প্রস্তুত করতে সময় লেগে যায়। আর একটা জিনিস আমি বলবো, সব মানুষের এক ধরনের ক্যাপাসিটি থাকে না। নতুনদের কাজগুলো রপ্ত করতে সময় লাগে। সবাই হান্ড্রেড পারসেন্ট দ্রুত গতিতে কাজ করতে পারবে এটা আশা করা যায় না।’
সিসি ক্যামেরা না থাকার কারণে ভোট পর্যবেক্ষণে সমস্যা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখন ডিরেক্ট একটা জিনিস আমি দেখতে পাচ্ছি। সেটা যে ধরনের আর ভায়া মাধ্যম হয়ে আসতে এটার যে অসুবিধা, এটা তো থাকবেই। আমি স্বীকার করলেই কী আর না করলেই কী। এটা তো অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই। সিসি ক্যামেরা থাকলে অবশ্যই ভালো হয়। সিসি ক্যামেরা থাকলে আমরা নিজের চোখ দিয়ে দেখতে পাচ্ছি। তাই যদি না হবে তাহলে সব মহল থেকে কেন বলবেন যে সিসি ক্যামেরা ব্যবহার করেন। আমি মনে করি সিসি ক্যামেরা থাকলে আরও অনেক বেশি স্বচ্ছভাবে কাজ করা সহজ হয়। এটি বলতে কোনো দ্বিধা নেই।’
এইচএস/ইএ/জেআইএম