ছোট মেয়েকে নিয়ে আত্মগোপনে ইমরান শরিফ, উদ্ধার করলো র্যাব
বাংলাদেশি বাবা ও জাপানি মায়ের দুই শিশু সন্তানকে মা নাকানো এরিকোর জিম্মায় রাখার আদেশ দিয়েছেন আদালত। রোববার (২৯ জানুয়ারি) ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক দুরদানা রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। তবে সেই রায় উপেক্ষা করে আত্মগোপন করায় ছোট মেয়েসহ বাবা ইমরান শরিফকে হেফাজতে নিয়েছে র্যাব।
বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) ভোরে রাজধানীর কালাচাঁদপুরে আত্মগোপনে থাকা বাবা ইমরান শরিফকে ছোট মেয়েসহ উদ্ধার করা হয়।
আরও পড়ুন>>> দুই সন্তান জাপানি মায়ের কাছে থাকা মঙ্গল: আদালত
দুপুরে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব জানান। তিনি বলেন, আদালতের রায় ছিল জাপানি মায়ের কাছে থাকবে দুই সন্তান। কিন্তু রায় প্রতিপালনে থানা পুলিশ বাবাসহ ছোট মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছিল না। আদালতের রায় উপেক্ষা করে মায়ের কাছে সন্তানকে হস্তান্তর না করে ছোট মেয়েসহ বাবা আত্মগোপনে চলে যান। এমন অভিযোগ পাওয়ার পর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর গুলশান থানার কালাচাঁদপুর এলাকায় আত্মগোপনে থাকা বাবা ইমরান শরিফকে ছোট মেয়েসহ হেফাজতে নিয়েছে র্যাব।
আদালতের রায় প্রতিপালনে আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন। এদিকে সন্তানদের ফিরে পেতে আদালতে আজ নতুন করে আবেদন করেছেন জাপানি মা।
আরও পড়ুন>>> জাপানি মা নাকানো এরিকোর আবেগঘন চিঠি
অন্যদিকে, আদালতের রায় অমান্য করে জাপানি মা নাকানো এরিকোও দ্বিতীয়বারের মতো তার বড় মেয়ে জেসমিন মালিকাকে নিয়ে গত রাতে পালানোর চেষ্টা করেন। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের হযরত শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দিয়েছে। তবে তিনি কোন দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন তা জানা যায়নি। মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারি) রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে তাকে বিমানবন্দর থেকে ফিরিয়ে দেয় ইমিগ্রেশন পুলিশ।
এর আগেও এই জাপানি মা তার দুই মেয়েকে নিয়ে জাপানে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আদালতের রায়ের কারণে সেদিনও বিমানবন্দর থেকে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের ফিরিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন>>> স্বামী-সন্তানদের নিয়ে টোকিওতে থাকতে চান জাপানি মা
রোববার (২৯ জানুয়ারি) ঢাকার দ্বিতীয় অতিরিক্ত সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের দেওয়া রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক উল্লেখ করেন, শারীরিক, মানসিক ও পারিপার্শ্বিক তথা বাচ্চাদের সর্বাঙ্গীণ কল্যাণ কার কাছে নিশ্চিত হবে রায়ে সেটির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দুই সন্তান বাবার কাছে থাকা মঙ্গল হবে বলে বাদী যে দাবি করেছেন, সেটি প্রমাণ করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন।
রায়ের পর্যবেক্ষণে বিচারক আরও বলেন, নাবালিকা দুই শিশুর সর্বশেষ বসবাসের স্থান জাপান। তাদের মা জাপানের চিকিৎসক। তাই মায়ের হেফাজতেই শিশুরা শারীরিক-মানসিক নিরাপত্তায় থাকবে বলে মনে করেন আদালত।
রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন মা জাপানি চিকিৎসক নাকানো এরিকো। এছাড়া বড় মেয়ে নাকানো জেসমিন মালিকাও এ রায়ে খুশি।
টিটি/কেএসআর/জেআইএম