ভারতীয় সাংবাদিকদের সফর সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করবে

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০৬:৫২ পিএম, ০৮ জানুয়ারি ২০২৩

ভারতীয় সাংবাদিকদের বাংলাদেশ সফর দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করবে শুধু নয়, মানুষে মানুষে আত্মিক সম্পর্ক আরও গভীরতর করতে অত্যন্ত ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।

রোববার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে বাংলাদেশ সফরে আসা ভারতের কলকাতা থেকে ২৫ জন, আসাম ও গৌহাটি থেকে আসা নয় সিনিয়র সাংবাদিকের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, এখন আর আকাশ থেকে কুঁড়েঘর দেখা যায় না, বাস্তবিক অর্থে কুঁড়েঘর হারিয়ে গেছে, এটিই বদলে যাওয়া বাংলাদেশ। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের সঙ্গে ১৪ বছর ধরে আমাদের যে সুসম্পর্ক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে নতুন উচ্চতায় উন্নীত হয়েছে। সেই গভীর সম্পর্ক আমাদের উন্নয়ন অভিযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

ড. হাছান মাহমুদ বলেন, আমরা দু’দেশের নাগরিক বটে, কিন্তু আমরা একই পাখির কলতান শুনি, একই নদীর অববাহিকায় বেড়ে উঠি। একই মেঘ আমাদের এখানে ভারি বর্ষণ করে। কাঁটাতারের বেড়া আমাদের এই বন্ধনকে বিভক্ত করতে পারেনি। কাঁটাতারের বেড়া আমাদের সংস্কৃতি ঐতিহ্য কৃষ্টি ভাষা, সবশেষে আমাদের ভালোবাসাকে বিভক্ত করতে পারেনি।

তিনি বলেন, হাজার হাজার বছর ধরে আমাদের এ আত্মিক সম্পর্ক রক্তের বন্ধনে একাত্ম হয়েছে ’৭১ সালে। যখন আমাদের মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে ভারতের সেনাবাহিনী রক্ত ঝরিয়েছে। আমাদের কষ্টের সঙ্গে ভারতের মানুষও কষ্ট স্বীকার করেছেন। এক কোটির বেশি মানুষ ভারতে আশ্রয় নিয়েছে। যতই কাঁটাতারের বেড়া দিক, কিংবা অন্য কোনো আইন-কানুন হোক না কেন, রক্তের অক্ষরে লেখা হৃদয়ের এ বন্ধন কখনো বিভক্ত করা যাবে না।

মন্ত্রী বলেন, ভারতের সাংবাদিকদের বাংলাদেশে আগমন, বিভিন্ন জায়গা পরিদর্শন এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ স্বচক্ষে দেখা, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ যে বদলে গেছে, আজ যে ছেলেটি ১৪ বছর আগে বিদেশ গেছে সে এসে নিজের শহর চিনতে পারবে না, নিজের গ্রাম চিনতে পারে না। ‘পায়ে চলা মেঠোপথ গেছে বহুদূর, রাখালি বাঁশির সুর সরল মধুর’ সেটি শুধু কবিতায় আছে, এখন সহজে পায়ে চলা মেঠোপথ গ্রামেও খুঁজে পাওয়া যায় না।

তিনি বলেন, সাংবাদিকরা সমাজের তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়, মানুষের আত্মিক খোরাক জাগায়, অনুম্মোচিত বিষয়কে উম্মোচিত করে। সমাজ এবং রাষ্ট্রকে সঠিক পথে প্রবাহিত করার ক্ষেত্রে সাংবাদিকরা ভূমিকা রাখে। এখান থেকে গিয়ে যখন আপনারা কলম ধরবেন কিংবা টেলিভিশনে রিপোর্টিং হবে তখন দুই দেশের সম্পর্ক আরও গভীরতর হবে। আমাদের দেশের বদলে যাওয়ার গল্পটা ভারতবাসী জানবেন, বিশ্ববাসী জানবেন।

আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক বলেন, বাংলাদেশ একটি ছোট্ট দেশ। আমরা মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে তৃতীয়, সবজি উৎপাদনে চতুর্থ, ধান উৎপাদনে তৃতীয়, আলু উৎপাদনে সপ্তম। কিন্তু আয়তনের দিক দিয়ে পৃথিবীতে ৯২তম। ঝড়-বন্যা জলোচ্ছ্বাসের দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত এখানে নিত্যসঙ্গী। কিন্তু সবকিছুকে পরাভূত করে সব প্রতিবন্ধকতাকে উপড়ে ফেলে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ উন্নয়নের সোপানে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছে আমাদের এ প্রিয় মাতৃভূমি।

তিনি বলেন, পুরো পৃথিবী আজ বাংলাদেশের প্রশংসা করে। কিন্তু আমাদের দেশের বিরোধী দলের রাজনীতিবিদরা দেখেও দেখে না, শোনেও শোনে না। তারা ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে গিয়ে বলে কোনো উন্নয়ন হয়নি। পদ্মা সেতু দিয়ে ওপাড়ে পার হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে বক্তৃতায় বলে কিছুই হয়নি। এটিই হচ্ছে আমাদের দুর্ভাগ্য।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সভাপতি সালাহউদ্দিন মোহাম্মদ রেজার সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সম্পাদক শহীদুল্লাহ শাহরিয়ারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বশর মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান, কলকাতা প্রেস ক্লাবের সভাপতি স্নেহাশীষ সুর, সাধারণ সম্পাদক কিংসুক প্রামাণিক, আসামের সিনিয়র সাংবাদিক মনোজ কুমার গোস্বামী প্রমুখ।

এর আগে তথ্যমন্ত্রী ভারতীয় সাংবাদিকদের নিয়ে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধু টানেল ও ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা প্রীতিলতা ওয়াদ্দেদারের আত্মাহুতির স্থান পাহাড়তলীর ইউরোপিয়ান ক্লাব পরিদর্শন করেন।

ইকবাল হোসেন/আরএডি/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।