ভারত থেকে মার্চে বিদ্যুৎ আসবে বাংলাদেশে: বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৭:১৬ পিএম, ০৩ জানুয়ারি ২০২৩
ঝাড়খণ্ডে নসরুল হামিদ

ভারতের ঝাড়খণ্ডে নির্মাণাধীন দেশটির শীর্ষ ব্যবসায়িক গোষ্ঠী আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে আগামী মার্চ মাসে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ আসবে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ।

মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) ভারতের আদানি পাওয়ার লিমিটেডের ঝাড়খণ্ডে নির্মাণাধীন এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভারত থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ দেওয়ার জন্য ডেডিকেটেড সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। মার্চের মাঝামাঝি সময় থেকে বিদ্যুৎ আমদানি করা সম্ভব হবে।

তিনি বলেন, প্রথম ইউনিট থেকে ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ মার্চের মাঝামাঝি পাওয়া যেতে পারে। আগামী গ্রীষ্মের চাহিদা পূরণে আরও বিদ্যুৎ প্রয়োজন। জ্বালানির বিকল্প উৎসও আমরা খুঁজছি। সাশ্রয়ী মূল্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করছি।

আরও পড়ুন: ডিসেম্বরেই বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানি করতে চায় আদানি গ্রুপ

বিদ্যুৎ বিভাগ জানিয়েছে, ২০১৭ সালের ৫ নভেম্বর বিদ্যুৎ বিভাগের সঙ্গে হওয়া এক চুক্তির আওতায় আদানি পাওয়ার লিমিটেড ভারতের ঝাড়খণ্ডে ১৬০০ (৮০০ মেগাওয়াট করে দুটি) মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে। ডেডিকেটেড সঞ্চালন লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও বগুড়ায় দুটি সাব-স্টেশন ও অন্যান্য সঞ্চালন কাজ পিজিসিবি নির্মাণ করেছে।

আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মধ্যে বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ভারতের কয়লা খনি প্রধান অঞ্চল হলেও ঝাড়খণ্ডের ওই বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে প্রধানত আমদানি করা কয়লা পোড়ানো হবে। দেশটির পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ২০১৭ সালের অনুমোদন নথি সূত্রে এমনটাই জানা যায়।

২০১৫ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বাংলাদেশ সফরের সময় হওয়া সমঝোতার চুক্তির ভিত্তিতে ঝাড়খণ্ডের গোড্ডা জেলায় ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার এ তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করেছে আদানি পাওয়ার।

আরও পড়ুন: ভারত থেকে চড়া দামে বিদ্যুৎ আমদানি করছে সরকার

চুক্তি মোতাবেক ২০২২ সালের ডিসেম্বর নাগাদ ৭৪৮ মেগাওয়াট এবং ২০২৩ সালে আরও ৭৪৮ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির কথা থাকলেও সঞ্চালন লাইনের কাজ শেষ না হওয়ায় গত বছর বিদ্যুৎ আনা সম্ভব হয়নি।

এরই মধ্যে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে বিশ্বজুড়ে গ্যাস ও কয়লার দাম বাড়তে থাকে। এতে বহু দেশের মতো বাংলাদেশও জ্বালানি সংকটে পড়ে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে এলএনজি বা কয়লার মতো জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর ব্যাপক আমদানিনির্ভরতা রয়েছে বাংলাদেশের। বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম বাড়ায় বাংলাদেশে গত ৭-৮ মাস ধরে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

বিদ্যুৎ সংকট নিরসনে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সঞ্চালন লাইন সংযোগের বিষয়ে গত বছরের সেপ্টেম্বরে দিল্লি সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে কার্যকরী আলোচনার কথা জানিয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

ওই সফরের সময় ভারতের শীর্ষ ব্যবসায়িক গোষ্ঠী আদানি গ্রুপের কর্ণধার ধনকুবের গৌতম আদানিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

আরএমএম/এমকেআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।