জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত মেট্রোরেল, প্রথম দিনেই উপচেপড়া ভিড়

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:৫৯ এএম, ২৯ ডিসেম্বর ২০২২

ঢাকাবাসীর দীর্ঘদিনের ভোগান্তি আর অপেক্ষা শেষে চালু হলো স্বপ্নের মেট্রোরেল। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত হলো এ উড়াল ট্রেন। এদিন সকাল ৮টায় মেট্রোরেলের এক নম্বর স্টেশন উত্তরার দিয়াবাড়ী থেকে যাত্রী নিয়ে আগারগাঁওয়ের উদ্দেশ্যে ছেড়েছে মেট্রোরেল। এ নগর পরিবহনটি চালুর প্রথম দিন সকাল থেকে স্টেশনগুলোতে ছিল যাত্রীদের উপড়েপড়া ভিড়।

সরেজমিনে সকালে আগারগাঁও মেট্রো স্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, মেট্রোরেলে চড়তে ভোর থেকেই লাইনে দাঁড়িয়েছেন যাত্রীরা।

মেট্রোরেলে চড়ার প্রথম অভিজ্ঞতা নিতে রাজধানীর শ্যামলী থেকে আসা ফরহাদ হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, দেশে প্রথম মেট্রোরেল চালু হয়েছে। প্রথম দিনেই চড়তে এসেছি। স্টেশনে এসেই দেখি যাত্রীদের দীর্ঘ সারি।

ফার্মগেট থেকে আসা রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরে প্রথম দিনেই মেট্রোরেলে চড়তে এলাম ইতিহাসের সাক্ষী হতে। নগরবাসীর দীর্ঘদিনের ভোগান্তি অনেকটাই দূর হবে এবার।

মাহফুজুর রহমান নামের এক যাত্রী বলেন, তীব্র যানজটের এই শহরে মেট্রোরেলে চড়তে পারবো, তা কখনো চিন্তা করিনি। দেশের জন্য এটা একটা নতুন যুগ।

জানা গেছে, শুরুতে সীমিত পরিসরে উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত চলবে মেট্রোরেল। বৃহস্পতিবার থেকে মেট্রোরেলে যাত্রী পরিবহন শুরু হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী বছরের ডিসেম্বর নাগাদ মেট্রোরেলে চড়ে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত যাতায়াত করা যাবে। আপাতত মেট্রোরেল উত্তরা থেকে আগারগাঁও চলার সময় মাঝের কোনো স্টেশনে যাত্রাবিরতি করবে না।

সাধারণ যাত্রীদের অবগতির জন্য মেট্রো স্টেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মেট্রোরেলে কোনো ধরনের পোষা প্রাণী বহন করা যাবে না। বিপজ্জনক বস্তু বহন করা যাবে না। মেট্রোর প্ল্যাটফর্মে পানের পিক বা থু থু ফেলা যাবে না। প্ল্যাটফর্ম ও মেট্রো ট্রেনে খাওয়া-দাওয়াও নিষেধ। প্ল্যাটফর্মের কোথাও কোনো ময়লা ফেলা যাবে না।

এছাড়া মেট্রোরেলে ওঠা-নামার সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না। কোচের দরজায় হেলান দিয়ে দাঁড়ানো যাবে না। মোবাইল ফোনের স্পিকার অন করে রাখা যাবে না। কথা বলতে হবে নিচু স্বরে।

ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএএন ছিদ্দিক জাগো নিউজকে বলেন, ট্রেনে উঠার আগে স্টেশন থেকে একক যাত্রার কার্ড ও র্যাপিড পাস কার্ড নেওয়া যাবে। একক যাত্রার কার্ড মাত্র ৩০ সেকেন্ডে টিকিট কাউন্টার ও টিকিট বিক্রয় মেশিন থেকে নেওয়া যাবে। আর র্যাপিড পাস কার্ড নেওয়ার জন্য ফরম ওয়েবসাইট ও স্টেশনে পাওয়া যাবে।

এর আগে গতকাল বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টা ৫ মিনিটে বহুল প্রতীক্ষিত ও দেশের প্রথম মেট্রোরেলের ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর বেলা ১টা ৩৯ মিনিটে মেট্রোর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। টিকিট কেটে পরের ট্রেনে প্রথম যাত্রী হিসেবে মেট্রোরেলে ওঠেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার ছোট বোন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা।

ওইদিন দুপুর ১টা ৫৩ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী মেট্রোরেল উত্তরা স্টেশন থেকে যাত্রা শুরু করে। প্রায় ১৭ মিনিট পর ২টা ১১ মিনিটের দিকে প্রধানমন্ত্রী আগারগাঁও স্টেশনে ট্রেন থেকে নেমে আসেন।

মেট্রোরেলকে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রার মুকুটে আরেকটি পালক হিসেবে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমরা বাংলাদেশের অহংকারের আরেকটি পালক সংযোজন করতে পারলাম। এটাই বড় কথা।

আরএসএম/এমকেআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।