বিশ্বে বাড়ছে সুপেয় পানির শঙ্কা
তিন ভাগের দুই ভাগ পানিতে ভরা এই পৃথিবী। তারপরও দিন দিন বাড়ছে সুপেয় পানির সমস্যা। ভবিষ্যতে এই পানি পাওয়া নিয়ে রয়েছে শঙ্কা। বাংলাদেশেও এর বাইরে নয়। ফলে এখন থেকেই সচেতন হয়ে পানি সংরক্ষণ আর ব্যবস্থাপনা না করলে আগামী প্রজন্ম আরও বেশি সমস্যার সম্মুখীন হবে।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও পানি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড. কাজী মতিন আহমেদ।
‘সুপেয় পানি প্রাপ্ত ও চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলায় করণীয়’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়। যা আয়োজন করে বাংলাদেশ সাধারণ নাগরিক সমাজ। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিতি ছিলেন ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান।
সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন ঢাকা ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান
সভায় বলা হয়, পৃথিবীর ৯৭ দশমিক ৫ শতাংশ পানিই লবণাক্ত। যা মানুষের প্রয়োজনে সরাসরি ব্যবহার করা যায় না। মাত্র ২ দশমিক ৫ শতাংশ মিষ্টি পানির বড় অংশ মেরু অঞ্চলের বরফে থাকায়, তাও সরাসরি ব্যবহার করা যায় না।
পানি বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ড.কাজী মতিন আহমেদ বলেন, আমাদের পৃথিবীতে সরাসরি ব্যবহারযোগ্য সুপেয় পানির প্রায় ৯৮ শতাংশ ভূগর্ভস্থ পানি। যার কারণে আমরা এ কথা সহজেই বলতে পারি যে, এটি পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ। মানব সংখ্যা বাড়া, বেশি করে ফসল ফলানো, নগরায়নের উচ্চহার এবং শিল্পায়নের কারণে পানির চাহিদা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলছে। অন্যদিকে অতিব্যবহার, দূষণ, অসমপ্রাপ্তি আর জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে মাথাপিছু পানির প্রাপ্তি প্রতিনিয়ত কমে যাচ্ছে। ফলে এই শতাব্দীর অন্যতম প্রধান সমস্যা হলো সবার জন্য সুপেয় পানি নিশ্চিত করা।
তিনি আরও বলেন, তিন ভাগের দুই ভাগ পানি দিয়ে পূর্ণ আমাদের গ্রহে যে সুপেয় পানির সংকট আছে এবং এটা আগামী দিনে আরও প্রকট হবে তা পৃথিবীর সব মানুষের জানা দরকার। বাংলাদেশেও যে সুপেয় পানির সমস্যা আস্তে আস্তে বাড়ছে এবং এখন থেকে সচেতন হয়ে পানি সংরক্ষণ আর ব্যবস্থাপনা না করলে আগামী প্রজন্ম আরও বেশি সমস্যার সম্মুখীন হবে।
পানি নিয়ে ভাবনা শুধু পানি বিজ্ঞানী আর ব্যবস্থাপকদের কাজ নয় উল্লেখ করে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, এটা আমাদের সবার ভাবনা হওয়া উচিত, যাতে করে সবাই মিলে সঠিকভাবে পানি ব্যবহার করে আগামী প্রজন্মের জন্য পানির অধিকার সুনিশ্চিত করতে পারি।
এমএমএ/জেডএইচ/এমএস