মোংলা বন্দর আধুনিকায়ন প্রকল্প: ব্যবস্থাপনা পরামর্শক চুক্তি সই

জাগো নিউজ ডেস্ক
জাগো নিউজ ডেস্ক জাগো নিউজ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:১৯ পিএম, ২৬ ডিসেম্বর ২০২২
ছবি: সংগৃহীত

মোংলা বন্দরের আধুনিকায়নে (আপগ্রেডেশন) প্রকল্প ব্যবস্থাপনা পরামর্শক সংক্রান্ত চুক্তিপত্র সই হয়েছে। সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর হোটেল রেডিসনে চুক্তি সই হয়। চুক্তিপত্রে সই করেন মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ মুসা এবং ইজিস ইন্ডিয়া কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার্স প্রাইভেট লিমিটেড গ্রুপের সিইও লরেন্ট জার্মেইন।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, ক্রমবর্ধমান চাহিদা মোকাবিলায় মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ‘আপগ্রেডেশন মোংলা বন্দর প্রকল্প’ গ্রহণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ছয় হাজার ১৪ কোটি টাকা। এরমধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থ এক হাজার ৫৫৫ কোটি এবং প্রকল্প সহায়তা চার হাজার ৪৫৯ টাকা। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুলাই। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং ভারতের লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি) আওতায় ইজিস ইন্ডিয়া কনসাল্টিং ইঞ্জিনিয়ার্স প্রাইভেট লিমিটেড।

আপগ্রেডেশন প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণ, কনটেইনার হ‍্যান্ডেলিং ইয়ার্ড নির্মাণ, কনটেইনার ডেলিভারি ইয়ার্ড নির্মাণ, নিরাপত্তা ব্যবস্থাসহ সংরক্ষিত এলাকা সম্প্রসারণ, সার্ভিস ভেসেল জেটি নির্মাণ, আটটি জলযান সংগ্রহ, বন্দর আবাসিক কমপ্লেক্স এবং কমিউনিটি সুবিধা নির্মাণ, বন্দর ভবন এবং মেকানিক্যাল ওয়ার্কশপ সম্প্রসারণ, স্লিপওয়ে এবং যন্ত্রপাতিসহ মেরিন ওয়ার্কশপ কমপ্লেক্স নির্মাণ, দিগরাজে রেলক্রসিং ওভারপাস নির্মাণ, মোংলা বন্দরের বিদ্যমান সড়ক ছয় লেনে সম্প্রসারণ, বহুতল কার ইয়ার্ড নির্মাণ ইত্যাদি।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মোংলা বন্দর বছরে এক হাজার ৮০০টি জাহাজ, এক কোটি ৫০ লাখ মেট্রিক টন কার্গো, চার লাখ টিইইউস কনটেইনার, ১০ হাজার গাড়ি হ্যান্ডলিং করতে পারবে। মোংলা বন্দরের বার্ষিক আয় ১৫০ কোটি টাকা এবং কাস্টমস ও অন্যান্য সংস্থার আয় তিন হাজার কোটি টাকা বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে আরও জানানো হয়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে মোংলা বন্দরে বর্তমানে জাহাজ, কার্গো, কনটেইনার এবং গাড়ি হ্যান্ডলিং গড়ে ১৭ শতাংশ, ১৯ শতাংশ, ৮ শতাংশ এবং ১৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। মোংলা বন্দরের জন্য কৌশলগত মাস্টারপ্ল্যান যথাক্রমে ২০২৫, ২০৪০ এবং ২০৭০ সাল নাগাদ স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন লক্ষ্য প্রস্তাব করেছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে ২০৪০ সালের শেষ নাগাদ মোংলা বন্দরে কার্গো, কনটেইনার এবং গাড়ি হ্যান্ডলিং যথাক্রমে ২, ১৫ ও ৩ গুণ বাড়বে।

অনুষ্ঠানে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ১৯৯৬ সালে স্থিমিত মোংলা বন্দর সচল করার পদক্ষেপ নেন। ব‍্যবসায়িদের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেন। ২০০৯ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মৃতপ্রায় এ বন্দরটিকে কার্যকর করার জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। বন্দরটি লোকসান কাটিয়ে লাভের ধারায় ফিরে এসেছে। পশুর নদীর আউটারবারে ড্রেজিংয়ের ফলে হারবাড়িয়া পর্যন্ত সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ আসতে পারে। ইনারবারে ড্রেজিং কার্যক্রম চলছে; যাতে বন্দর জেটিতে সাড়ে ৯ মিটার ড্রাফটের জাহাজ আসতে পারে।

তিনি বলেন, ‘মোংলা বন্দরের আপগ্রেডেশন কাজটি সম্পন্ন হলে এটি অনন‍্য উচ্চতায় চলে যাবে। চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতার কাছাকাছি চলে যাবে। চট্টগ্রাম বন্দরের বিকল্প হিসেবে গড়ে উঠবে। এর মাধ‍্যমে শুধু বাংলাদেশ নয়; প্রতিবেশী দেশগুলোও উপকৃত হবে। ব‍্যবসা-বাণিজ‍্যের প্রসার ঘটবে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। মাল্টিমোডাল কানেক্টিভিটির মাধ‍্যমে মোংলা বন্দর এগিয়ে যাবে।’

মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা।

আরএমএম/এমআরএম/বিএ/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।