দিনাজপুরে বাফার গোডাউন থেকে নষ্ট সার সরবরাহ

দিনাজপুর সদরের পুলহাটে বাফার গোডাউন জেলার সবচেয়ে বড় ইউরিয়া সারের গুদাম। ধারণক্ষমতার চেয়ে এখানে দ্বিগুণের বেশি সার রাখার পরও হাজার হাজার বস্তা সার খোলা আকাশের নিচে রেখে বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে শুকিয়ে শক্ত, জমাট বেধে নষ্ট হয়ে গেছে। আর এসব সার কিনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কৃষক।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বাফার গুদামের সামনে হাজার হাজার ইউরিয়া সারের স্তপ রয়েছে। সেগুলো ছেঁড়া পলিথিন দিয়ে ডেকে রাখা হয়েছে।
বীরগঞ্জ উপজেলা নিজপাড়া ইউনিয়নের দামাইক্ষেত্র গ্রামের কৃষক শাহাজাহান সিরাজ বুলবুল জানায়, বাজারে উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য মূল্য পাওয়া যাচ্ছে না। ধানের বাজার অনেক কম। বিগত দিনের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে তারপরও এ বছর ইরি ধান চাষ করার জন্য জমি প্রস্তত করেছি। কারণ কৃষিই আমাদের প্রধান আয়ের উৎস। গত বছর আমি শক্ত ও জমাট বাধা ইউরিয়া সার জমিতে খুব কষ্ট করে ব্যবহার করেছিলাম। সেই সার প্রয়োগ করে কোন ফল হয়নি । পরবর্তীতে আরও সার প্রয়োগ করতে হয়েছিল। দুই মণ ধান বিক্রি করে এক বস্তা ইউরিয়া সার কিনতে হয়। আমরা কিভাবে চাষাবাদ করব। তিনি বিষয়টি সরকারকে বিবেচনা করার দাবি জানান।
ইউরিয়া সারের ডিলার মোসাদ্দেক হুসেন জানায়, অনেক দিন ধরে বাফার গুদামের বাইরে সারের বস্তা পড়ে থাকায় সার জমাট, শক্ত, কেক বেধে যাওয়ায় সারের কিছুটা গুণগত মানের পরিবর্তন হয়। ফলে কুষকেরা এই জমাট, শক্ত, কেক বাধা সার নিতে চায় না। ফলে আমাদের গুদামেও অনেক সারের স্তুপ পড়ে গেছে। আমাদের টাকা আটকে যাচ্ছে। কৃষকরা দেশীয় সারের প্রতি বেশি আগ্রহী। সেই দেশীয় সার আমাদের না দিয়ে চীন থেকে আমদানি করা সার আমাদের দেয়া হয়। এ ব্যাপারে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকতাদের নিকট অভিযোগ করেও কোনো লাভ হয়নি বলেও তিনি অভিযোগ করেন ।
এ ব্যাপারে পুলহাট বাফার গুদাম অফিস সচিব মনোহর আলম জানায়, আমাদের এই বাফার গুদামে ইউরিয়া সারের ধারণক্ষমতা ৬ হাজার মে. টন। অথচ এই গুদামে ১২ হাজার মে. টনের চেয়েও বেশি রাখা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। আর ভিতরে জায়গা না থাকায় হাজার হাজার ইউরিয়া সারের বস্তা বাইরে রাখা আছে ।
গুণগত মানের বিষয়ে তিনি বলেন, ঘন কুয়াশা, বৃষ্টিতে ভিজে সার শক্ত কিংবা জমাট বাধলেও গুণগত মানের বিষয়ে কিছু হবে না। মান ঠিকই থাকবে।
তিনি আরও বলেন, কৃষকদের সারের চাহিদা কম থাকায় সরবরাহ অনেক কম। পুরোদমে বোরো আবাদ শুরু হলেই সারের চাহিদা বেড়ে যাবে তখন ডিলারের মাধ্যমে সরবরাহও বেড়ে যাবে।
এমদাদুল হক মিলন/এসএস/পিআর