স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় কারও গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা
আদালত প্রাঙ্গণ থেকে দুই জঙ্গি ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় কারও গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রোববার (২০ নভেম্বর) সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আদালত প্রাঙ্গণ থেকে পালানো দুই জঙ্গিকে ধরিয়ে দিতে ২০ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
পুলিশের চোখে স্প্রে করে প্রকাশক ফয়সল আরেফিন দীপন এবং লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায় হত্যা মামলার মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি দুই জঙ্গি আবু ছিদ্দিক সোহেল ও মঈনুল হাসান শামীমকে ছিনিয়ে নিয়েছেন জঙ্গিরা।
রোববার (২০ নভেম্বর) দুপুরের দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বিচারের মাধ্যমে দুই জঙ্গির ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে। এ দুজন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য। তাদের আনা হয়েছিল, কোর্ট হাজতে তাদের রাখা হয়েছে, তাদের ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে প্রডিউস করার পর আবার নির্দিষ্ট রুমে নিয়ে যাচ্ছিল, তখন আমরা জানলাম যে পুলিশরা তাদের দায়িত্বে ছিলেন তাদের কেমিক্যাল ছুড়ে পেপার স্পে নামে একটা কেমিক্যাল আছে সেটা ছুড়ে তাদের অজ্ঞান করে কয়েকজন তাদের সমর্থকদের নিয়ে পালিয়ে যান।
আরও পড়ুন: আদালত থেকে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ছিনিয়ে নিলো জঙ্গিরা
তিনি বলেন, ঘটনা ঘটার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা রেড অ্যালার্ট জারি করেছি। আমাদের পুলিশ তাদের হন্যে হয়ে খুঁজছে, তাদের খুব শিগগির ধরতে পারবো বলে আমরা বিশ্বাস করছি। আমরা বর্ডার এলাকাগুলোতেও বলে দিয়েছি, তারা যেন দেশ থেকে পালিয়ে যেতে না পারে।
‘এ ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা মনে করি যদি কারও অবহেলা থাকে, যদি কারও গাফিলতি থাকে যদি কেউ ইচ্ছা করে এ কাজটি ঘটিয়ে থাকেন, তার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করবো।’
আসাদুজ্জামান খান বলেন, এটা নিয়ে নিশ্চয়ই আমরা তদন্ত কমিটি করবো। সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব। সচিব, কারা মহাপরিদর্শক, ডিএমপি কমিশনার সবাই এটা নিয়ে মিটিং করছেন। আমরা খুব সহসাই পরবর্তী নির্দেশনা জানাবো।
আরও পড়ুন: দুই জঙ্গি লাপাত্তা: সারাদেশের আদালতে নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
তিনি বলেন, তদন্তের পরই আমরা বলতে পারবো কী স্প্রে দিয়েছে, কারা কারা দিয়েছে। আরেকটু সময় লাগবে। আমরা তদন্তের পর আপনাদের জানাবো।
এ ঘটনা অ্যালার্মিং কি না-জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, আমরা সব জিনিসই সিরিয়াসলি দেখি। আমরা সিরিয়াসলি দেখি বলেই অনেক জিনিস কন্ট্রোলে নিয়ে এসেছি। জঙ্গির উত্থান হয়েছিল, জঙ্গির উত্থানও আমরা কন্ট্রোলে নিয়ে এসেছি। হাইকোর্টের নির্দেশনা আছে, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি হলেও আদালতে আসলে ডান্ডাবেড়ি ও হ্যান্ডকাফ (হাতকড়া) খুলে দিতে হবে। সেই অনুযায়ী তারা সেখানে গিয়েছিলেন। কোন ফাঁক-ফোঁকরে ঘটনাটি ঘটেছে, তদন্তের আগে বলতে পারবো না।
আরও পড়ুন: দুই জঙ্গি ছিনতাই: রাজধানীতে রেড অ্যালার্ট
‘কারও কোনো গাফিলতি ছিল কি না, কেউ এর সঙ্গে জড়িত কি না সবকিছু আমরা দেখছি। কাউকে ছাড় দেওয়ার তো কোনো প্রশ্ন আসে না।’ যোগ করেন মন্ত্রী।
আদালতের মতো একটি স্থানে এমন ঘটনা ঘটলো- এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, কোর্টের নিরাপত্তা নিয়ে তো এর আগে প্রশ্ন ওঠেনি। সবসময় তো এ রকমভাবেই চলে আসছে।
আরএমএম/এমএইচআর/জিকেএস/ইএ