মাদক-যৌনপল্লি-গ্যাং চালাতেন চনপাড়ার বজলু মেম্বার: র‌্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৩:০৬ পিএম, ১৯ নভেম্বর ২০২২
গ্রেফতার বজলুর রহমান

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার চনপাড়া এলাকার চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি বজলুর রহমান ওরফে বজলুকে (৫২) মাদক, জাল টাকা ও অস্ত্রসহ গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১।

র‌্যাব জানায়, গ্রেফতার বজলু চনপাড়া এলাকায় হত্যা, মাদক বেচাকেনা, চাঁদাবাজি, কিশোর গ্যাং, ধর্ষণ, যৌন হয়রানি এবং যৌনপল্লি পরিচালনা করে আসছিলেন।

শনিবার (১৯ নভেম্বর) দুপুরে র‌্যাব-১ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নোমান আহমদ এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, শুক্রবার র‌্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র (চনপাড়া বস্তি) এলাকায় চিহ্নিত শীর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি বজলুর রহমান ওরফে বজলু অবস্থান করছেন।

এমন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাবের আভিযানিক দল শুক্রবার বিকেলে ওই এলাকায় অভিযান চালায়। অভিযানে শীর্ষ সন্ত্রাসী ও চনপাড়া বস্তি এলাকার মাদক ব্যবসার মূলহোতা বজলুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়।

আরও পড়ুন: চনপাড়ার বজলু চেয়ারম্যান গ্রেফতার

এসময় তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, ৫ রাউন্ড গুলি, ২২০ গ্রাম হেরোইন, একটি মোবাইলফোন, ভারতীয় ২৫ হাজার জাল রুপি, বাংলাদেশি ৭৫ হাজার জাল টাকা এবং মাদক বিক্রির নগদ ২১ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়।

গ্রেফতার বজলুর রহমান ওরফে বজলু একজন চিহ্নিত অস্ত্রধারী, দুর্ধর্ষ সন্ত্রাসী ও মাদক কারবারি। তিনি নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানার চনপাড়া বস্তি এলাকার মাদক ব্যবসার অন্যতম মূলহোতা ও নিয়ন্ত্রক বলেও জানায় র‌্যাব।

বজলু দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। নারায়ণগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় তার বেশ কয়েকজন সহযোগী কাজ করে।

rab-2.jpg

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নোমান আহমদ আরও বলেন, বজলুর রহমানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যকলাপসহ বিভিন্ন অপরাধে এখন পর্যন্ত ২৩টি মামলার রেকর্ড পাওয়া গেছে। তিনি চনপাড়া বস্তি এলাকাসহ আশপাশের এলাকার মাদক কারবারিদের কাছ থেকে মাসিকভিত্তিতে টাকা তুলতেন বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছেন।

র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রটি প্রকৃতপক্ষে চনপাড়া বস্তি নামে অধিক পরিচিত, যেখানে লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। অপেক্ষাকৃত নিম্ন আয়ের মানুষ এই বস্তিতে বসবাস করেন, যাদের অধিকাংশই দিনমজুর। বিশাল ও অত্যন্ত ঘিঞ্জি এবং ঘনবসতিপূর্ণ এই চনপাড়া বস্তিটি ৯টি এলাকায় বিভক্ত। এই এলাকার শীর্ষ ৫-৬টি মাদক কারবারির প্রধান সমন্বয়ক ও গডফাদার ছিলেন বজলু।

বস্তি এলাকার মাদকের প্রায় ২০০টি স্পট থেকে কয়েকটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বজলু এই ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন বলে প্রাথমিকভাবে তথ্য পাওয়া গেছে।

গ্রেফতার বজলুর রহমান ওরফে বজলু কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য (প্যানেল চেয়ারম্যান-১)। তিনি স্থানীয় উঠতি বয়সের ছেলেদের কাছে বজলু ভাই নামে পরিচিত। বিভিন্ন সোর্স তার ছত্রছায়ায় এলাকার ছেলেদের টাকা দিয়ে নানা ধরনের অপকর্ম যেমন- হত্যা, মাদক বেচাকেনা, চাঁদাবাজি, ভয়ভীতি, কিশোর গ্যাং, ধর্ষণ, যৌন হয়রানি এবং যৌনপল্লি পরিচালনা করেন। কেউ চাঁদা না দিলে তার কপালে নেমে আসতো নির্যাতনের ভয়াবহতা। এসব আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গত এক-দেড় বছরে নিহত হয়েছেন ছয়জন।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর অপরাধী গ্রেফতারে র‌্যাব চনপাড়া এলাকায় অভিযান চালালে বজলুর রহমানের নির্দেশে অপরাধীরা র‌্যাবের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা আসামি ছিনিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা চালায়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার বজলুর রহমান এসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছেন। তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানিয়েছে র‌্যাব।

টিটি/কেএসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।