র্যাবের ওপর হামলা: চনপাড়ার বজলু চেয়ারম্যান গ্রেফতার
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) ওপর হামলার অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার চনপাড়ার কায়েতপাড়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান-১ বজলুর রহমানকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
শুক্রবার (১৮ নভেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে তাকে চনপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে র্যাব-১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন>>সরাসরি অংশ নেয় রায়হান গ্যাংয়ের ৮-১০ জন, গুম করতে ফেলা হয় নদীতে
তিনি জানান, গত ২৮ সেপ্টেম্বর চনপাড়ার কায়েতপাড়ায় অভিযানে গেলে র্যাবের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় চনপাড়ার প্যানেল চেয়ারম্যান-১ বজলুর রহমানকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১।
র্যাব জানায়— গত ১০ নভেম্বর রাতে র্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ সিটি শাহীন নিহত হয়। সিটি শাহীনের সব অপকর্মের সেল্টারদাতা ছিলেন বজলু চেয়ারম্যান। এছাড়া র্যাবের ওপর হামলার নেতৃত্ব দেন বজলু।
সম্প্রতি চনপাড়া সরেজমিনে জাগো নিউজের এ প্রতিবেদক জানতে পারেন— নিহত সিটি শাহীনের একটি বড় অপরাধ বাহিনী রয়েছে এলাকায়। তিনি ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং চনপাড়া মাদক নির্মূল কমিটির সদস্যসচিব ছিলেন। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী। হামলা-নির্যাতনের ভয়ে শাহীন ও তার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলার সাহস নেই কারো। প্রায় পঞ্চাশাধিক নারী, পুরুষ ও তরুণের সঙ্গে কথা হয় জাগো নিউজের।
আরও পড়ুন>>রাস্তামুখী সিসি ক্যামেরা লাগানো মানা, বন্ধ চনপাড়ার অধিকাংশ দোকান
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক অধিকাংশই জাগো নিউজকে জানান, চনপাড়ায় হয় না এমন কোনো কিছু নেই। চনপাড়ায় রাতকে দিন আবার দিনকে রাত বানিয়ে দেওয়া যায়। এখানে এমন কিছু মানুষ আছেন যাদের নিয়ন্ত্রণে বস্তিবাসী। বস্তিতে কোনো অনুষ্ঠান করতে গেলেও প্রভাবশালীদের অনুমতি লাগে। তাদের কথা না শুনলে চলে নির্যাতন ও চাঁদাবাজি।
স্থানীয়রা জানায়— বজলু চেয়ারম্যানের ভয়ে চনপাড়ার কারো মুখ খোলার সাহস নেই। বজলুসহ তার চার ভাই নিয়ন্ত্রণ করে চনপাড়া বস্তি। সঙ্গে রয়েছে কিছু অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী। এসব অপরাধীরা দিনে-দুপুরে মাদকের কারবার, মারধর ও খুনসহ নানা অপরাধ করে বেড়ায়।
আরও পড়ুন>>ফারদিনকে জোর করে নেওয়া হয় চনপাড়ায়, নেপথ্যে রায়হান গ্যাং
বস্তিবাসী বজলু ও তার লোকজনের বিষয়ে ভয়েও মুখ খোলে না। কথিত আছে— বজলুর কথা ছাড়া সেখানে ছাড়া গাছের পাতাও নড়ে না। তার নামে ভয় দেখিয়ে ঘুম পাড়ানো হয় বস্তির শিশুদের। বুয়েট ছাত্র ফারদিন নূর পরশ খুনের জেরে আলোচনায় এসেছে চনপাড়া বস্তির নাম।
বজলুর নামে কেবল রূপগঞ্জ থানাতেই হত্যা, অস্ত্র, মাদকের মামলা মিলিয়ে ১২টি মামলা রয়েছে। অস্ত্র ও খুনের মামলায় এক সময়ের জেলখাটা বজলু এখন নাম লিখিয়েছেন সমাজের প্রভাবশালী ব্যক্তির খাতায়।
টিটি/এমএএইচ/জেআইএম