রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে বিশ্ব কিছুই করেনি: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
বিশ্ব রোহিঙ্গাদের নিরাপদ প্রত্যাবাসনে মোটেও কিছু করেনি বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য গার্ডিয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, শাহরিয়ার আলম বলেছেন, রাজনৈতিক এবং প্রত্যাবাসন সমাধানে বিশ্ব একেবারে কিছুই করছে না। তারা এখনো তাদের সব শক্তি প্রয়োগ করেনি। সাম্প্রতিককালেও তারা মিয়ানমারে বিনিয়োগ অব্যাহত রেখেছে। ২০১৭ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত মিয়ানমারে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের চেয়ে বেশি ছিল।
তিনি বলেন, মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ব মোটেও কিছু করেনি। বাংলাদেশ বৈশ্বিক সহায়তা ছাড়াই ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রতি বছর হ্রাস পাচ্ছে এবং মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হত্যাযজ্ঞ থেকে রক্ষা পেতে পালিয়ে সাত লাখের বেশি মানুষ বাংলাদেশে আসার পর থেকে বিগত পাঁচ বছরে প্রত্যাবাসনের লক্ষ্যে কোনো বাস্তব অগ্রগতি হয়নি।
প্রতিবেদনে প্রতিমন্ত্রীর উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক জান্তার ওপর যথেষ্ট চাপ দেওয়া হয়নি। তিনি জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যা মামলা এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে জোরপূর্বক দেশ ছাড়তে বাধ্য করা সংক্রান্ত মামলায় ব্যাপকতর আন্তর্জাতিক সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন।
মিয়ানমারের সিনিয়র সামরিক কর্মকর্তাদের ভ্রমণ এবং অর্থের ওপর প্রস্তাবিত নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে শাহরিয়ার আলম বলেন, এসব ব্যক্তি খুব কমই ভ্রমণ করে থাকে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের মানবিক আবেদনে এ বছর প্রয়োজনীয় অর্থের মাত্র এক তৃতীয়াংশ পেয়েছে। বিশ্বব্যাপী ব্যয় বৃদ্ধির কারণে আগামী বছর আরও কম অর্থ দেওয়া হতে পারে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।
তিনি বলেন, খুব কম সংখ্যায় রোহিঙ্গাদের ফেরত দেওয়ার জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা চলছে। ভবিষ্যতে আরও বড় সংখ্যায় রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর ভিত্তি স্থাপন করতে পারে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কিছু লোককে পুনর্বাসনের প্রস্তাব দিয়েছে। তবে বাংলাদেশের ওপর বোঝা উল্লেখযোগ্যভাবে লাঘব করার জন্য আরও কয়েকটি দেশের অনুরূপ প্রস্তাব দিতে হবে।
আরএডি/জিকেএস