সেমিনারে পরিবেশমন্ত্রী
সিসা দূষণ প্রতিরোধে গণমাধ্যম ও বেসরকারি সহায়তা প্রয়োজন

সিসা দূষণ প্রতিরোধে শুধু আইন প্রয়োগই কাঙ্ক্ষিত ফলাফল আনতে পারে না, বরং আমাদের ব্যাপক সচেতনতা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
তিনি বলেন, সিসা দূষণ থেকে মানুষকে বাঁচাতে সরকার বিভিন্ন উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে। এ লক্ষ্যে, পরিবেশ অধিদপ্তর প্রায়ই অবৈধ ব্যাটারি উৎপাদন এবং পুনর্ব্যবহারের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করছে। তবে সিসা দূষণের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করতে গণমাধ্যম, সুশীল সমাজ ও এনজিওদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে বলেও মনে করেন মন্ত্রী।
মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। ‘লেড পয়জনিং ইন বাংলাদেশ: রিসার্চ এভিডেন্স ফর আর্জেন্ট অ্যাকশন’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও ইউনিসেফ।
সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, জনগণের জানা উচিত যে, সিসা মানবদেহের জন্য একটি নীরব ঘাতক। এটি মানবদেহের প্রায় সব সিস্টেমকে প্রভাবিত করে। সিসার স্নায়ুবিক বিষাক্ততা ছোট বাচ্চাদের বিকাশমান দেহ এবং মস্তিষ্কের স্থায়ী এবং বিধ্বংসী ক্ষতি করে।
তিনি বলেন, সরকারি উদ্যোগের ফলে যানবাহনে সিসামুক্ত জ্বালানি ব্যবহার হচ্ছে। অধিকন্তু পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় পরিবেশ সংরক্ষণ বিধিমালা, ১৯৯৭ এ শিল্প নিঃসরণের জন্য সিসা নির্গমন মানকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। বিশ্বব্যাপী মোট ব্যবহারের প্রায় ৮৫ শতাংশ সিসাই সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারি তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। পেইন্ট ও মশলায় ব্যবহৃত সিসাও আমাদের জন্য বড় উদ্বেগের বিষয়।
পরিবেশমন্ত্রী আরও জানান, সরকার প্রথমে ২০০৬ সালে এবং পুনরায় ২০২১ সালে এসআরও (বিধি-বিধান) জারি করে। এসআরও-তে সিসা-অ্যাসিড ব্যাটারির নিরাপদ ব্যবস্থাপনার জন্য পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণ, পরিবেশগতভাবে নিরাপদ রিসাইক্লিং, ব্যাটারি ব্রেকার, ডিস্ট্রিবিউটর, ডিলার, আমদানিকারকদের দায়িত্ব ও কর্তব্য, কর্মীদের স্বাস্থ্য সমস্যাগুলি সমাধান করা এবং রিপোর্টিং সিস্টেমের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. আমিনুল ইসলাম। এতে বক্তব্য দেন- জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নিলুফার নাজনীন, আইসিডিডিআর’বি নির্বাহী পরিচালক ডা. শামস এল আরিফীন এবং ইউনিসেফ বাংলাদেশের প্রতিনিধি শেলডন ইয়েট।
এছাড়াও সেমিনারে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, এনজিও এবং উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এমআইএস/কেএসআর/জিকেএস