আবারো পিছিয়ে যাচ্ছে স্মার্টকার্ড বিতরণ
জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্টকার্ড বিতরণের সময় আবারো পিছিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়সূচি পাওয়ার পর চলতি মাসেই (ফেব্রুয়ারি) স্মার্টকার্ড বিতরণের কথা থাকলেও পর্যাপ্ত কার্ড তৈরি না হওয়ায় তা আর হচ্ছে না। এছাড়া নিম্নমানের কার্ড তৈরি করায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
ইসি কর্মকর্তা জানান, দেশের দশ কোটি নাগরিককে উন্নতমানের স্মার্টকার্ড দেয়ার কাজ হাতে নিয়েছে ইসি। আনুষ্ঠানিকভাবে এসব কার্ড বিতরণের আগে সার্বিক অগ্রগতি রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করার বিষয় রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে স্মার্টকার্ড প্রদর্শনও করা হয়েছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় ওই কার্ড দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কারণ কার্ডগুলো নিম্নমানের। এ জন্য এই কার্ড কবে বিতরণ শুরু হবে তা বলতে পারছেন না কেউ।
গত বুধবার রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ বিষয়ে তাকে অবহিত করা হয়। কার্ড দেখে রাষ্ট্রপতিও তেমন খুশি নয় বলে সূত্র জানায়।
সূত্রে জানা যায়, নাগরিকদের উন্নতমানের স্মার্টকার্ড দিতে আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর অ্যানহান্সিং অ্যাকসেস টু সার্ভিসেস (আইডিইএ) প্রকল্প শুরু করে ইসি। বিভিন্ন সময়ে প্রতিশ্রুতি দিলেও কার্ড বিতরণ শুরু করেতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। গত বছরের ২৬ মার্চ আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কার্ড বিতরণ হবে বলে জানানো হয়। এ উদ্যোগটিতে ব্যর্থ হলে বাঙালির বর্ষবরণ উৎসব পহেলা বৈশাখে কার্ড বিতরণের সিদ্ধান্ত নেয়। সে সিদ্ধান্তও আলোর মুখ দেখেনি।
দেশের নাগরিকদের কাঙ্ক্ষিত এ জাতীয় পরিচয়পত্র প্রথমে ২০১৪ সালের ভোটার তালিকায় হালনাগাদে অন্তর্ভুক্ত ৪৭ লাখ নাগরিককে এ কার্ড দেয়া হবে। এর পরেই ঢাকার নাগরিকেরা স্মার্টকার্ড হাতে পাবেন। আইডিইএ প্রকল্পের আওতায় ২০১৬ সালের জুন মাসের মধ্যে সাড়ে ৯ কোটি নাগরিকের হাতে স্মার্টকার্ড পৌঁছে দেয়ার কথা ছিল। এ লক্ষ্যে উৎপাদন শুরুর কথা ছিল ২০১৪ সালের অগাস্টেই। কিন্তু কোনো কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি না হওয়ায় উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়নি।
২০১৫ সালে ১৪ জানুয়ারিতে স্মার্টকার্ড তৈরি ও বিতরণের বিষয়ে ফ্রান্সের ওবার্থার টেকনোলজিস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে ইসি। চুক্তি অনুযায়ী স্মার্টকার্ড তৈরির জন্য সেপ্টেম্বরে ১০টি মেশিন বসানো শুরু হয় এনআইডি উইংয়ে। এর পরেই এনআইডি সিপে তথ্য পার্সোনালাইজেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ডিসেম্বরে স্মার্টকার্ড উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়। ১০টি মেশিনের মধ্যে একটি বিশেষ কাজের জন্য ব্যবহার করা হবে। এখন পর্যন্ত পুরোদমে সব মেশিনে উৎপাদন কার্যক্রম শুরু হয়নি।
বর্তমানে সারাদেশে ৯ কোটি ৬২ লাখ ২৬ হাজার ৫৪২ জন ভোটার রয়েছে। চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদে নতুন আরো ৭২ লাখ নাগরিককে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এইচএস/আরএস/আরআইপি