স্বচক্ষে আইন ভঙ্গ করে গোপন কক্ষে ভোট দিতে দেখেছি: সিইসি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:২৬ পিএম, ১২ অক্টোবর ২০২২
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে

গাইবান্ধা-৫ আসনের উপ-নির্বাচন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।

তিনি বলেন, আইন ভঙ্গ করে গোপন কক্ষে প্রবেশ করে ভোট দিতে আমরা স্বচক্ষে দেখেছি।

বুধবার (১২ অক্টোবর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে গাইবান্ধা-৫ আসনের ভোট পর্যবেক্ষণের মনিটরিং সেলে বসে এ কথা বলেন সিইসি।

তিনি বলেন, মূল অ্যাকশন হিসেবে আমরা প্রথমেই কেন্দ্র বন্ধ করেছি। টেলিফোনে এসপি, ডিসি, রিটার্নিং অফিসারকে বলেছি যে, আমরা এখান থেকে সিসি ক্যামেরায় সব দেখতে পেয়েছি। তাই সঙ্গে সঙ্গে ভোট বন্ধ করে দিয়েছি।

সিইসি জানান, যদি মনে হয় নির্বাচন সঠিকভাবে হচ্ছে না তাহলে তা বন্ধ করে দিতে পারে কমিশন।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে যখন আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবো, তখন জানাবো।

নির্বাচন কেন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলো- এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাংবাদিকদের প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা দেখেছি যে নির্বাচন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। আপনারাও দেখেছেন ভোটের গোপন কক্ষে কী হচ্ছে। সেখানে সুশৃঙ্খলভাবে কিছু হচ্ছে না।

সুশৃঙ্খলভাবে ভোটগ্রহণ কেন হচ্ছে না এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু বলতে পারেননি সিইসি।

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ঠিকমতো কাজ করছে কি না তা আমরা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। তবে ইভিএমে আমরা কোনো ত্রুটি দেখছি না।

প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, আমরা অনেককেই দেখছি যে, গেঞ্জি-শাড়ি পরে যেখানে প্রতীক আছে সেখানে গেছেন। তারা আচরণবিধি লঙ্ঘন করছেন। এটা সুশৃঙ্খল নির্বাচনের পরিপন্থী। এরাই ডাকাত, এরাই দুর্বৃত্ত। যারা আইন মানছেন না তাদের আমরা ডাকাত-দুর্বৃত্ত বলতেই পারি। কারণ আইনের প্রতি সবাইকে শ্রদ্ধাশীল হতে হবে।

এদিকে এরই মধ্যে গাইবান্ধার উপ-নির্বাচনে ৪৩টি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করে দিয়েছে ইসি। বুধবার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণের শুরুতেই অনিয়ম ও জালিয়াতির অভিযোগ পেয়ে তা স্থগিত করা হয়।

অন্যদিকে অনিয়মের অভিযোগ এনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ছাড়া একযোগে বাকি চার প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন।

আওয়ামী লীগের মনোনীতপ্রার্থী হলেন মাহমুদ হাসান রিপন। আর ভোট বর্জন করা প্রার্থীরা হলেন জাতীয় পার্টির এ এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু, বিকল্পধারার জাহাঙ্গীর আলম, স্বতন্ত্র প্রার্থী নাহিদুজ্জামান নিশাদ ও সৈয়দ মাহবুবুর রহমান।

গাইবান্ধা-৫ আসনের নির্বাচনী এলাকায় মোট এক হাজার ২৪২টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ১৪৫টি ভোটকেন্দ্রের ভেতরে দুটি করে ২৯০ এবং ৯৫২টি ভোটকক্ষের সবকটির ভেতরে (গোপন বুথ ছাড়া) সিসিটিভি স্থাপন করা হয়।

গাইবান্ধা-৫ আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী ২৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। তার মৃত্যুতে আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়।

এরপর তফসিল অনুযায়ী শুরু হয় ভোটগ্রহণ। কিন্তু শুরুতেই বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ আসতে থাকে ইসিতে।

এ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৩৯ হাজার ৭৪৩ জন। ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) মাধ্যমে সব কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করার কথা রয়েছে।

এইচএস/জেডএইচ/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।