বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে আইন প্রয়োগে জটিলতা আছে: চুমকি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:০৩ পিএম, ১১ অক্টোবর ২০২২
ছায়া সংসদ বিতর্কে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন মেহের আফরোজ চুমকি

বাল্যবিয়ে প্রতিরোধ আইন প্রয়োগ ও প্রচারে কিছুটা ব্যর্থতা আছে বলে স্বীকার করেছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি।

তিনি বলেন, বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে আইন প্রয়োগে অনেক জটিলতা আছে। এসব আইন আমরা যতই আধুনিক করি না কেন, প্রতিটি মানুষের কাছে আইনের বিষয় প্রচার করতে পারি না। এক্ষেত্রে আমাদের কিছুটা ব্যর্থতা আছেই।

মঙ্গলবার (১১ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) আয়োজিত ছায়া সংসদ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০২২ উপলক্ষে কন্যাশিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জনসচেতনতা মূলক এ ছায়া সংসদ বিতর্কের আয়োজন করা হয়।

‘সময়ের অঙ্গীকার কন্যাশিশুর অধিকার’- এই স্লোগানে গত ৪ অক্টোবর দেশব্যাপী পালিত হয় জাতীয় কন্যাশিশু দিবস-২০২২। এর ধারাবাহিকতায় এফডিসিতে ‘আইনের প্রয়োগ নয়, জনসচেতনতাই পারে কন্যাশিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে’ শীর্ষক ছায়া সংসদ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।

যৌন হয়রানি বন্ধে জনসচেতনতার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, শিশুকে কীভাবে স্পর্শ করে সেটা সে বুঝতে পারে না। আমি দেখেছি আমেরিকায়, ইউরোপে গুড টাচ-ব্যাড টাচ শেখায়। কেন শেখায়? তাদের কি আইন নেই? তাদের আইন আছে, আইনের প্রয়োগও আছে। এটা এই জন্যই শেখায় যে ৫ বছরের শিশু কিন্তু বুঝতে পারে না। এ জন্য পরিবারকেও সচেতন হতে হবে। প্রতিটি জিনিস তো সরকার দেখিয়ে দিতে পারে না।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে চুমকি আরও বলেন, আমাদের সমাজ ব্যবস্থার কারণে কন্যাশিশু একটু স্পেশাল। সমাজ এখনও সচেতন হয়নি বলেই কন্যাশিশু নিয়ে আমরা বেশি উদগ্রীব। কিন্তু ছেলে শিশুর ব্যাপারে কেউ কথা বলছি না। তারাও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে।

মেয়েরা নির্যাতিত হলে সমাজ তা মেনে নেয় না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছেলেরা কোনো খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়লে বা নির্যাতিত হলে ওই ছেলের বিয়ে হবে না এই কথা কেউ বলে না। একবারও (বলে) না। কিন্তু একটা ছোট অবুঝ কন্যাশিশু নির্যাতিত হলে তার বিয়ের সময় বলা হয়- না এই মেয়েকে নেওয়া যাবে না। এই মেয়ের অমুক সময়ে অমুক হয়েছে।

সরকার বাল্যবিয়ে কমিয়ে আনছে উল্লেখ করে মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, আমাদের সমাজে আইন আছে প্রচুর। আইনের প্রয়োগের ব্যাপারে অনেক জটিলতা আছে। এসব আইন আমরা যতই আধুনিক করি না কেন, প্রতিটি মানুষের কাছে আইনের কথাও প্রচার করতে পারি না। আমাদের কিছুটা ব্যর্থতা আছেই। সেক্ষেত্রে আমরা চেষ্টা করছি।

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি ও জাতীয় কন্যাশিশু অ্যাডভোকেসি ফোরাম যৌথভাবে ছায়া সংসদ বিতর্কের আয়োজন করে। প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ও ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের সহযোগিতায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে এই ছায়া সংসদ বিতর্ক অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, দেশের ১৮ শতাংশ কন্যাশিশুর ১৫ বছর বয়সের মধ্যে বিয়ে হয়। এর মধ্যে ১৫ থেকে ১৯ বছরের কিশোরীদের ৩১ শতাংশই গর্ভবতী হন। যারা শারীরিক ও মানসিকভাবে সন্তান জন্মদানের জন্য প্রস্তুত নয়। ৪৩ শতাংশ কিশোরী মা গর্ভজনিত সমস্যার কারণে মৃত্যুঝুঁকিতে থাকেন।

প্রতিযোগিতায় সরকারি দল হিসেবে প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এবং বিরোধীদল হিসেবে ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করেন। প্রতিযোগিতা শেষে অংশগ্রহণকারী দলের মধ্যে ট্রফি, ক্রেস্ট, নগদ অর্থসহ সনদপত্র দেওয়া হয়।

এসএম/কেএসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।