পুলিশে গ্রুপিংয়ের বিষয়ে যা বললেন নতুন আইজিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:২৮ পিএম, ০৪ অক্টোবর ২০২২
আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন

পুলিশের গ্রুপিং আছে কি না তা জানেন না পুলিশে নবনিযুক্ত মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে ক্ষতিয়ে দেখা হবে বলে জানান তিনি।

মঙ্গলবার (৪ অক্টোবর) দুপুরে পুলিশ সদরদপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলন হয়। এসময় সাংবাদিকরা নতুন আইজিপির কাছে জানতে চান- পুলিশে নানা ধরনের গ্রুপিংয়ের কথা শোনা যায়। গোপালগঞ্জ গ্রুপ, কিশোরগঞ্জ গ্রুপ, বরিশাল গ্রুপ ও ময়মনসিংহ গ্রুপসহ আরও গ্রুপ। এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের প্রোপাগান্ডার ছড়ানোর চেষ্টা করে। এ গ্রুপিং পুলিশের ক্ষতি করছে কি না এবং এ বিষয়ে নজর দেবেন কি না।

এর উত্তরে আইজিপি বলেন, আমি পুলিশের গ্রুপিং সম্পর্কে জানি না। সুনির্দিষ্ট তথ্য দিলে ক্ষতিয়ে দেখবো।

ডিএমপিতে বছরের পর বছর দায়িত্ব পালন করছেন একই কর্মকর্তা। তারা ঢাকা ছাড়ছেন না। এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বদলির ক্ষেত্রে কিছু কিছু জিনিস ফলো করি। শুধু পুলিশে না বিভিন্ন অরগানাইজেশানে একই লোক অনেক দিন ধরে কাজ করেন। কর্মকর্তার দক্ষতা দেখে যদি মনে হয় তাকে রাখা দরকার তাহলে রেখে দেয়। আর যাকে রাখা দরকার না তাকে বদলি করা হয়।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হওয়ার আগে পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশনা লাগবে। কিন্তু বাস্তবতায় অতি উৎসাহী হয়ে মাঠপর্যায়ে ওসিরা এই নির্দেশনা মানছেন না। এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলার ক্ষেত্রে আমার পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছি।

সাংবাদিক ও পুলিশ একে অপরের কাজ করছে। কিন্তু মাঠে কাজ করতে গেলে একেবারে টার্গেট করে সাংবাদিকদের মারধর করা হয়। এমন প্রশ্নে আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, এমন অবস্থায় আপনারা আমাদের বলবেন, আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করবো।

আসন্ন নির্বাচনে রাজনৈতিক বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে পুলিশপ্রধান বলেন, রাজনৈতিক কার্যক্রম হ্যান্ড্যালিং করার জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করে থাকে পুলিশ। এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তা ক্ষতিয়ে দেখবো।

র‍্যাব সংস্কারের প্রশ্নে তিনি বলেন, যে কোনো প্রতিষ্ঠান সংস্কারের মধ্যে থাকে। অপরাধের ধরণ অনুযায়ী সংস্কার হয়। জঙ্গিবাদ ও সাইবার ক্রাইম অপরাধের বিরুদ্ধে মোকাবিলায় আধুনিক টেকনোলজি ব্যবহার করতে হবে। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া।

৯৭ হাজার বিদেশি যাদের পাসপোর্ট নেই। তারা অবৈধভাবে বাংলাদেশে রয়েছে। তারা জঙ্গিসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়েছে। এটা দেশের জন্য হুমকি কি না এমন প্রশ্নে আইজিপি বলেন, এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া। তদের ওপর তথ্য নেওয়া হয়। যেই দেশের নাগরিক সেই দেশ থেকে তথ্য নেওয়া হয়। আর ক্রাইমের সঙ্গে যদি তারা জড়িত থাকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

নিখোঁজ ৫০ তরুণের বিষয়ে আইজিপি বলেন, এটি নিয়ে কাজ চলমান রয়েছে। জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে পুলিশ-র‍্যাব জিরো টলারেন্স নীতিতে কাজ করছে। গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ চলছে।

পুলিশের দুর্নীতি নিয়ে টিআইবির রিপোর্ট ও অনেক সময় দুর্নীতির প্রতিবেদন দেখতে পায়। উন্নত পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলতে কী ভূমিকা রাখবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, আপনারা লক্ষ্য করেছেন এরই মধ্যে কমিউনিটি পুলিশের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বিট পুলিশের কার্যক্রর্ম চলছে। প্রতিটি থানায় জবাবদিহিতা নিশ্চিতের জন্য ওপেন হাউজ কার্যক্রম চালু রয়েছে। মাঠপর্যায়ে সব সদস্যদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে নির্দেশনা দেওয় হয়েছে। যে সব জায়গায় ঘাটতি আছে সেগুলো ঠিক করা হবে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জঙ্গিদের ট্রেনিং দেওয়া হয়- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আমরা যখনই তথ্য পেয়েছি প্রতিটি তথ্যকে বিবেচনায় নিয়ে ব্যবস্থা নিচ্ছি। ব্যবস্থা নেওয়ার কারণে জঙ্গি হামলা হচ্ছে না। জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ বিশ্বে রোল মডেল।

নির্বাচনে পুলিশকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয়- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পুলিশ সব সময় পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে থাকে। নির্বাচন কমিশন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করে। নিরপেক্ষতার সঙ্গে পুলিশ দায়িত্ব পালন করছে, তবে কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

টিটি/জেডএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।