নির্ধারিত সময়ে হয় না ই-নামজারি, ব্যাখ্যা চেয়েছে মন্ত্রণালয়
মন্ত্রণালয় থেকে সর্বশেষ জারি করা পরিপত্র অনুযায়ী ই-নামজারি আবেদন ২৮ দিনের মধ্যে নিষ্পন্ন করার নিয়ম রয়েছে। কিন্তু আট বিভাগের কোথাও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নাম জারি সম্পন্ন হয় না। মনিটরিং ড্যাশবোর্ড পর্যালোচনায় আগস্ট মাসে এ তথ্য উঠে এসেছে বলে জানিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।
অতিরিক্ত সময় লাগার কারণ জানানোর নির্দেশনা দিয়ে ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে সম্প্রতি সব বিভাগীয় কমিশনার এবং তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া সব জেলা প্রশাসককে (ডিসি) চিঠি পাঠানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, সর্বশেষ জারি করা পরিপত্র অনুযায়ী ই-নামজারি আবেদন ২৮ দিনের মধ্যে নিষ্পন্ন করার বিধান থাকলেও ই-মিউটেশন মনিটরিং ড্যাশবোর্ড পর্যালোচনায় দেখা যায় যে— গত আগস্ট মাসে সব বিভাগের অধীন ই-নামজারি মামলার গড় নিষ্পত্তির সময় ঢাকা বিভাগে ৩৭, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৬, রাজশাহী বিভাগে ৪৪, খুলনা বিভাগে ৪৪, বরিশাল বিভাগে ৪৪, সিলেট বিভাগে ৪৪, ময়মনসিং বিভাগে ৪৪ এবং রংপুর বিভাগে ৪৫ দিন।
এছাড়া ই-নামজারি মামলার গড় নিষ্পত্তির সময় পর্যালোচনা করে দেখা যায় যে— আগস্ট মাসে যেসব জেলায় ই-নামজারি মামলার গড় নিষ্পত্তির সময় অত্যাধিক সেগুলো হলো- গাজীপুরে ৭২, নারায়ণগঞ্জে ৫৯, মানিকগঞ্জে ৫৪, রাজবাড়ীতে ৬৪, ফেনীতে ৫৮, কুমিল্লায় ৫৩, কক্সবাজারে ৫২, লক্ষ্মীপুরে ৫৩, নওগাঁয় ৫৯, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৬৮, খুলনায় ৫২, নড়াইলে ৫৩, মাগুরায় ৫৪, ঝালকাঠীতে ৫৩, বরিশালে ৫৩, সিলেটে ৬২, সুনামগঞ্জে ৬০, শেরপুরে ৬২, রংপুরে ৫৩, গাইবান্ধায় ৫২ ও দিনাজপুরে ৫২ দিন।
চিঠিতে বলা হয়, www.land.gov.bd এ 'ই-নামজারি' পোর্টলে প্রবেশ করে এলাকাভিত্তিক নামজারি তথ্যচিত্র (ই-নামজারি মামলার গড় নিষ্পত্তির সময়) দেখার অপশনটি সাধারণ নাগরিকসহ সবার জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে এবং এ পোর্টালে প্রবেশ করে সরাসরি বিভাগ/ জেলা পর্যায় থেকে মনিটরিং করার সুযোগ রয়েছে।
ই-নামজারি পোর্টলে (www.land.gov.bd) নামজারি মামলার গড় নিষ্পত্তির সময় নিয়মিত মনিটরিং করাসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগ/জেলার অধীনে ২৮ দিনের অধিক মাত্রারিক্ত অনিষ্পন্ন ই-নামজারি মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তি করে আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য এবং ই-নামজারি মামলা নিষ্পত্তিতে নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত মাত্রার সময় ব্যয়ের কারণ জানানোর জন্য চিঠিতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগের পেন্ডিং থাকা আবেদনের বিষয়ে চিঠিতে বলা হয়, ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে যেসব আবেদন নিম্নোক্ত কারণে পেন্ডিং রয়েছে সেগুলো নিম্নোক্ত ধাপ অনুযায়ী নিষ্পত্তি করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যেসব আবেদন অনলাইনে সাবমিট করা হয়েছে কিন্তু ম্যানুয়ালি অনুমোদন করে খতিয়ান দেওয়া হয়েছে এমন আবেদন যদি সিস্টেমে পেন্ডিং থাকে তাহলে এ আবেদনগুলো একটি আদেশ দিয়ে নামঞ্জুর করে দিতে হবে। এ আবেদনটি ম্যানুয়ালি প্রসেস করে খতিয়ান দেওয়া হয়েছে সেজন্য অনলাইন থেকে নামঞ্জুর করা করা হলো বলে আদেশ দিতে হবে। এ আদেশে ম্যানুয়ালি সৃষ্ট খতিয়ান নম্বর, আদেশের তারিখ ইত্যাদি সব না রেফারেন্স উল্লেখ থাকতে হবে। এছাড়া ম্যানুয়ালি সৃষ্ট খতিয়ান চলমান মিউটেটেড খতিয়ান ডাটা এন্ট্রিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যদি কোনো নামজারি আবেদনের খতিয়ান চূড়ান্ত হয় কিন্তু ডিসিআর (ডুপ্লিকেট কার্বন রিসিপ্ট) ফি পরিশোধ করা হয়নি এমন পেন্ডিং আবেদনগুলো আর্কাইভ করে দেওয়া যাবে। পরবর্তীতে এ আবেদনগুলোর ডিসিআর ফি পরিশোধ করার সুযোগ থাকবে। ডিসিআর ফি পরিশোধ না করলে চূড়ান্ত খতিয়ান প্রিন্ট অপশন থাকবে না।
পেন্ডিং আবেদনের বিষয়ে আদেশ দেওয়ার পদক্ষেপ না নেওয়া গেলে সেক্ষত্রে সেই আবেদনগুলো একটি এক্সেল ফাইলে তুলে [email protected] এই মেইলে সেন্ড করে দিলে টেকনিক্যাল টিম পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যবস্থা করে নেবে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে বিজনেস অটোমেশনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর মো. পারভেজ হোসাইনের মোবাইল নম্বরে কল করা যাবে বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এমতাবস্থায়, ই-নামজারি পোর্টলে (www.land.gov.bd) এ ই-নামজারি মামলার গড় নিষ্পত্তির সময় নিয়মিত মনিটরিং করাসহ বিভাগ/জেলার অধীনে ২৮ দিনের বেশি মাত্রারিক্ত অনিষ্পন্ন ই-নামজারি মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য এবং ই-নামজারি মামলা নিষ্পত্তিতে নির্ধারিত সময়ের অতিরিক্ত মাত্রার সময় ব্যয়ের কারণ জানানোর জন্য বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।
আরএমএম/এমএএইচ/