ঈশ্বরদীতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ অমান্য
সরকারি নির্দেশনাবলী মান্য করছে না ঈশ্বরদীর মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক চলমান এসএসসি, দাখিল ও সমমান পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ বাবদ আদায়কৃত অতিরিক্ত অর্থ ফেরত দেয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক ফেরত দেয়ার নির্দেশ প্রদানের এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও ঈশ্বরদী মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস কর্তৃপক্ষ অতিরিক্ত ফি আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা প্রস্তুত করেননি। এমনকি শিক্ষা অফিসের দেয়া তথ্য মতে তালিকা প্রস্তুত করার মতো কোনো ক্ষেত্রই সৃষ্টি হয়নি বলে দাবি করা হয়েছে।
অথচ ফরম পূরণ চলাকালীন সময়ে ঈশ্বরদীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হচ্ছে মর্মে বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় ফলাও করে সংবাদ প্রকাশিত হয়। চলমান এসএসসি পরীক্ষায় ঈশ্বরদীর ছয়টি কেন্দ্রে ৭০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের চার হাজার ৫৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। বিভিন্ন শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও প্রতিষ্ঠানের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রের দেয়া তথ্য মতে এসব জানা গেছে।
সূত্র মতে, রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশক্রমে নিয়মানুযায়ী এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ শুরু হওয়ার পর থেকেই অরনখোলা উচ্চ বিদ্যালয়, এসএম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, ঈশ্বরদী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মুনলিট হাই স্কুল, বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়সহ ঈশ্বরদীর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ উন্নয়ন ফি, কোচিং ফি ও গর্ভনিং বডির সিদ্ধান্তসহ নানা অজুহাতে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হলেও অনেক ক্ষেত্রেই রশিদ প্রদান না করেই এ অর্থ আদায় করা হয়েছে।
এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বঙ্গবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ে দুই হাজার ৬৫০ টাকা, ঈশ্বরদী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজ ২৫৯৫ টাকা, এসএম স্কুল অ্যান্ড কলেজ দুই হাজার ৪১০ টাকা করে আদায় করা হয়। এসময় অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন সংবাদপত্রে এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশিত হলেও সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
এসব প্রতিষ্ঠানসহ ঈশ্বরদীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত অর্থ আদায় করলেও রহস্যজনক কারণে অতিরিক্ত ফি আদায়ের তালিকাভুক্ত করা হয়নি। প্রতিষ্ঠানগুলো অতিরিক্ত অর্থ আদায় করলেও তারা কোনো প্রমাণ রাখেননি। কারণ রশিদে তারা কেবল বোর্ড ফি দেখিয়েছেন। এছাড়া এসব প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে অভিভাবকরা মৌখিক বা লিখিতভাবে শিক্ষা বোর্ডে অভিযোগ না করায় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানগুলোর অদৃশ্য সম্পর্ক থাকায় প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা ব্যবস্থা নিতে পারেননি।
গত ২ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের (স্মারক নং-৩৭.০০.০০০০.০৭২.৪৪.০৯৭.১২.৭৬৯) উপ-সচিব সালমা জাহান স্বাক্ষরিত এক অতিব জরুরি পত্র মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে দেয়া হয়েছে। পত্রে অতিরিক্ত অর্থ আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আদায়কৃত অতিরিক্ত অর্থ গ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের তথ্য জানানোরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কিন্তু অতিরিক্ত অর্থ আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের তালিকা ও তথ্য প্রস্তুত করা হয়নি।
তবে ৫ ফেব্রুয়ারি বীরমুক্তিযোদ্ধা ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ তার বাস ভবনে কয়েকজন শিক্ষককে আদায়কৃত অতিরিক্ত অর্থ ফেরত প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ পালনের কড়া নির্দেশ দেন। এসব অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে গিয়ে তাকে না পেয়ে মোবাইল ফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলেও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সেলিম আকতার ফোন রিসিভ করেননি।
আলাউদ্দিন আহমেদ/এমজেড/এসএম