ইভিএম উদ্ভাবকদের কংগ্রাচুলেট করতে চাই: ড. জাফর ইকবাল
ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) উদ্ভাবকদের অভিনন্দন জানাতে চান লেখক ও প্রযুক্তিবিদ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবি) সাবেক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল।
তিনি বলেন, ‘আমি ইভিএমের বিভিন্ন অংশ দেখতে খুলে রাখতে বলেছিলাম। আমাকে যে মেশিনটি দেখানো হয়েছে, তার হার্ডওয়্যার থেকে শুরু করে সবকিছু আমি দেখেছি। তারা খুব সুন্দরভাবে এটি করেছেন। ক্যাবলসহ সবকিছু স্পেশালি কাস্টমাইজড করে তৈরি করা। অন্য কোনো যন্ত্রাংশ বা ডিভাইস এতে যুক্ত করার সুযোগ নেই। এজন্য তাদেরকে (উদ্ভাবকদের) আমি কংগ্রাচুলেট করতে চাই।’
শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বনানীর ঢাকা গ্যালারিতে ‘এডিটরস গিল্ড বাংলাদেশ’র আয়োজনে ‘অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন ও ইভিএম’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক হয়। এতে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন ড. জাফর ইকবাল।
আরও পড়ুন: ইভিএম ম্যানিপুলেট করা অসম্ভব: ড. জাফর ইকবাল
এর আগে গত ২৫ মে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে ইভিএম বিষয়ে এক মতবিনিময় সভায় অংশ নেন ড. জাফর ইকবাল। এ সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের জানান, ইভিএম ভার্চুয়ালি ম্যানিপুলেট করা অসম্ভব।
ওইদিন তিনি বলেন, ‘আমি বলেছিলাম, খুলে দেখান ইভিএমের সার্কিটগুলো। ভেতরে আইসিগুলো যেভাবে বসানো আছে, সেখানে ভেতরে ঢুকে ম্যানিপুলেট করা ভার্চুয়ালি অসম্ভব।’
জাফর ইকবাল বলেন, ‘কেউ বিশ্বাস করবে কি না, সেটা তার ব্যাপার, রাজনৈতিক ব্যাপার। আমি টেকনিক্যাল জিনিসটা বলছি। টেকনিক্যাল পয়েন্ট থেকে এর ভেতরে ম্যানিপুলেট করা অসম্ভব।’
এডিটরস গিল্ডের গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন বিশেষজ্ঞরা/ছবি: জাগো নিউজ
তিনি বলেন, ‘যারা ইভিএমের বিরুদ্ধে কথা বলেন, তাদের অনুরোধ করবো, তারা যেন সমস্যাগুলো সুনির্দিষ্টভাবে লিখে আমাদের জানান। আমরা তাদের ইভিএম সম্পর্কে ডিটেইলস জানাতে বা দেখাতে রাজি আছি।’
এদিকে, এডিটরস গিল্ডের আজকের গোলটেবিল বৈঠকে সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সভাপতি মোজাম্মেল বাবু। এতে সূচনা বক্তৃতা করেন সিনিয়র সাংবাদিক ও এডিটরস গিল্ডের প্রেসিডিয়াম সদস্য নাঈমুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, সবকিছু নিয়েই পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক হয়। তবে ইভিএম নিয়ে কমন গ্রাউন্ডে আলোচনা হতে পারে। সঠিক-বেঠিকের বিষয় না। এর কতটা ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক আছে, তা আলোচনা করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের দিকে না গিয়ে ইভিএমে ভোটগ্রহণ কতটা যুক্তিযুক্ত, সেটাই আলোচনার বিষয়।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ফিঙ্গার প্রিন্ট নিয়ে বিমানবন্দরেও সমস্যায় পড়তে হয়। ভারতেও ভিভিপ্যাটের বিষয়টি সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। এখন ভোটারদের আস্থা না থাকলে ইভিএমে যত ভালো নির্বাচনই হোক, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।
আরও পড়ুন: ইভিএমে যত ভালো নির্বাচনই হোক, প্রশ্ন উঠবেই
ইভিএম উদ্ভাবন কমিটির সদস্য ও বুয়েটের শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম বলেন, ভোটকেন্দ্র দখল, একজনের ভোট আরেকজনের দেওয়া, আগের রাতেই ভোট দেওয়া, ভোটের পর ফল পরিবর্তন হয়ে যাওয়া- এসব বন্ধ করতেই ইভিএম আনা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে এগুলোর কোনোটিই সম্ভব নয়। এটি দূর থেকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না, ইন্টানেটসহ কোনো ধরনের সংযোগ নেই। এক্সটারনাল ডিভাইসও যুক্ত করার সুযোগ নেই। ফলে ইভিএমে স্বচ্ছভাবে ভোটগ্রহণ করা সম্ভব। কোনো ধরনের কারচুপির সুযোগ নেই।
গোলটেবিল বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন বুয়েটের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. আব্দুল জব্বার খান, সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার, মানবাধিকার ও উন্নয়নকর্মী খুশি কবীর, নির্বাচন পর্যবেক্ষ মনিরা খান।
এইচএস/এএএইচ/এএসএম