মিথ্যাচারেই ফেঁসে যাচ্ছেন এমপি লতিফ!


প্রকাশিত: ০৩:৫৪ পিএম, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

মিথ্যাচারেই ধরা পড়লেন এমপি লতিফ। বঙ্গবন্ধুর ছবি নিয়ে সৃষ্ট বির্তকের ব্যাপারে শনিবারের সংবাদ সম্মেলনে দেয়া বক্তব্য রোববার পুনঃসংবাদ সম্মেলন ডেকে প্রত্যাহার করেন তিনি। ফলে নিজের ফাঁদে নিজেই ধরা দিলেন এমপি লতিফ।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানে ছবি বিকৃতির ঘটনায় অবশেষে ফেঁসে যাচ্ছেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সংসদীয় কমিটির সদস্য এম এ লতিফ। নিজের দেহের ছবির সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর মাথা জুড়িয়ে ব্যানার ফেস্টুন তৈরির ঘটনা নগর আওয়ামী লীগ একাংশের ষড়যন্ত্র দাবি করে শনিবার সংবাদ সম্মেলন করেন তিনি। তবে রোরবার পুনরায় সংবাদ সম্মেলন করে আগের বক্তব্য প্রত্যাহার করেন লতিফ এমপি।

শনিবার দুপুরে লতিফের সংবাদ সম্মেলনের পর সন্ধ্যায় বিভিন্ন অনলাইনে প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে জানা গেছে, লতিফের সরাসরি তত্ত্বাবধায়নে এবং চেম্বার ভবনে বসে লতিফের নির্দেশ মোতাবেক ব্যানার-ফেস্টুনের ডিজাইন কনা হয়। ছাপাখানা হায়দার প্রিন্টার্সের ডিজাইনার কবির হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

তবে প্রতিবেদনটি রোববার চট্টগ্রামের স্থানীয় দৈনিকগুলোতে প্রকাশ হলে দুপুরে আবারো সংবাদ সম্মেলন ডাকেন এমএ লতিফ। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বঙ্গবন্ধুর ছবি জালিয়াতির জন্য ব্যানার ফেস্টুন ছাপানো প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও ডিজাইনারে অনিচ্ছাকৃত ভুল বলে দাবি করেন।

তবে নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ হায়দার প্রিন্টার্সের ডিজাইনার কবির হোসেন শনিবার সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের উদ্বোধনসহ পাঁচ দিনব্যাপী সব অনুষ্ঠানের ব্যানার, ফেস্টুন ও আমন্ত্রণপত্রের ডিজাইন আমিই করেছি। আর এসব ডিজাইন করা হয়েছে ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের অফিসে। সেখানে করা সব ডিজাইন সম্পন্ন করার পর ফাইনাল করেছেন এমপি স্যার (এমএ লতিফ)। উনাকে দেখিয়েই মূলত এসব ব্যানার, ফেস্টুন ও আমন্ত্রণপত্র ছাপানো হয়।

রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে লতিফ আগের অবস্থান  থেকে সরে এসে বলেন, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি বিকৃতির ঘটনায় আমার অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে। সব সফলতার মধ্যে ব্যর্থতা থাকে। আমি ফেরেশতাও না শয়তানও না। এ ঘটনায় জাতির কাছে একেবারে নিলাম হয়ে গেলাম।
 
এমএ লতিফ বলেন, যারা বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিল তাদের আমি চিহ্নিত করেছি। তাদের আপনাদের সামনে নিয়ে আসলাম। আমি তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা আমাকে উত্তর দিয়েছে আমি যে রেজুলেশনের বঙ্গবন্ধুর ছবি পাঠিয়েছি, সেই রেজুলেশনের ছবি বড় প্রতিকৃতি করার জন্য যথেষ্ট ছিল না। তাই তারা বিকল্প একটা পথ বেছে নিয়েছিল।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি হায়দার হায়দার প্রিন্টার্সের ডিজাইনার কবির হোসেন বাবুকে হাজির করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চট্টগ্রাম আগমনকে ঘিরে বানানো ব্যানারগুলো তৈরির সময় ছিল খুবই কম। ব্যানারগুলো ২৭-২৮ জানুয়ারির মধ্যে আমাদের প্রিন্টিং করার তাড়া ছিল। এমপি মহোদয়ও খুব ব্যস্ত ছিলেন। দায়িত্বগুলো ছিল আমাদের ঘাড়ে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিপূর্ণ আকৃতির প্রতিকৃতি তৈরির দায়িত্বও ছিল। কিন্তু ছবি ম্যানেজ করতে গিয়েই ঝামেলাটা হয়েছে।
 
সংবাদ সম্মেলনে চেম্বারের কর্মকর্তা রাসেল দাস বলেন, ব্যানার আনা ও টানানোর কাজটি ছিল আমার দায়িত্বে । কবির হোসেন মুজিব কোর্টওয়ালা ছবি চাওয়ার পর আমার মোবাইলে থাকা এমপি মহোদয়ের ছবিটা দিই। এরপরে কী হয়েছে তা আমি জানি না।

জীবন মুছা/এসএইচএস/এএইচ/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।