মানবপাচারকারী ওলী গ্রেফতার


প্রকাশিত: ১০:০৫ এএম, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

রাজধানীর শান্তিনগর ট্রাফিক পয়েন্ট এলাকা থেকে মানবপাচারকারীচক্রের হোতা সনি আহম্মেদ ওরফে ওলীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকা মহানগর বিভাগ। রোববার ভোর রাতে শান্তিনগর ট্রাফিক পয়েন্ট এলাকা থেকে ওলীকে গ্রেফতার করেন পিবিআই সদস্যরা।
 
মানবপাচারকারী গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর পিবিআই-এর প্রধান বিশেষ শাখার পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, পল্টন থানায় দায়ের করা (মামলা নং-১৫) মামলার এজাহার ভুক্ত পলাতক আসামি ওলী।
 
তিনি জানান, জার্মানি পাঠানোর নাম করে গত বছরের ১৫ জানুয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দীর সবুজ ও মহিউদ্দিন নামের দুই ব্যক্তির কাছ থেকে ১৪ লাখ টাকা নেয় ওলী। পরে ওই বছরের ১৫ এপ্রিল তাদের দুইজনসহ সুমন নামের আরো একজনকে জার্মানি পাঠাবে বলে ওলী ও তার ভাগ্নে শফি তাদেরকে ভারতের ভিসা করিয়ে বেনাপোল হয়ে কলকাতা নিয়ে যায়।
 
তিনি আরো জানান, নয়াদিল্লির একটি হোটেলে ১০দিন থাকার পর সনি আহম্মেদ তাদেরকে ভিসা করিয়ে জার্মানিতে পাঠাবে বলে আশ্বাস দেয়। কিন্তু এরপর থেকেই নানাভাবে টালবাহানা করতে থাকে। সমস্যার কথা জানিয়ে ভাগ্নে শফির সাথে সবাইকে বাংলাদেশে ফিরতে বলে নিজে একা রওনা হয় ওলী। এরপর শফি তাদের ৩ জনকে নিয়ে কলকাতার বনগাঁয়ে এসে এক হোটেলে ওঠে। ৩-৪ দিন পরে সবুজ ও মহিউদ্দিনকে নিয়ে ভাগ্নে শফি বেনাপোল হয়ে প্রথমে যশোর মনিহার এবং পরে বাসযোগে ফরিদপুর এসে ওঠে।
 
ফরিদপুর থেকে পাচারকারী ওলী তাদের দুইজনকে সাথে নিয়ে বাসযোগে কক্সবাজার যায়, সেখান থেকে সিএনজি যোগে কক্সবাজারের এক দুর্গম জায়গায় নিয়ে জঙ্গলাকীর্ণ এক চালা ঘরে আটকে রাখে। পরে তাদের ট্রলারযোগে থাইল্যান্ড নিয়ে গিয়ে সেখানে ভিসা করিয়ে জার্মানিতে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানানো হয়। এভাবেই মাস পিরিয়ে গেলে পরিস্থিতি বুঝে সবাইকে ফেলে সে গা ঢাকা দেয়।
 
ভুক্তভোগীরা বিষয়টি বুঝতে পেরে নিজেরা পরামর্শ করে দুইজনে খুঁজে খুঁজে কোন রকমে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম হাইওয়েতে পৌঁছে স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় কুমিল্লাগামী বাসে ওঠে। উভয়ে দাউদকান্দী নিজ গ্রামে ফিরে বিষয়টি তাদের পরিবারকে জানায়। তাদের পরিবারের কয়েকজনকে নিয়ে গোপালগঞ্জের মুকসেদপুরে ওলীদের বাড়িতে গিয়ে তারা টাকা ফেরত দেয়ার জন্য অনুরোধ করে।
 
ওলী ক্ষিপ্ত হয়ে তাদেরকে টাকা ফেরত দিতে অস্বীকার করে এবং হত্যার হুমকি দিয়ে পাঠিয়ে দেয়ে। অবশেষে এ বিষয়ে সবুজ বাদী হয়ে সনি আহম্মেদ ওরফে ওলী ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মানবপাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা দায়ের করেন।
 
ওই মামলায় থানা থেকে প্রেরিত পুলিশ প্রতিবেদনের বিষয়ে বাদী সবুজ নারাজী দিলে আদালত বিষয়টি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই ঢাকাতে প্রেরণ করেন। যা বর্তমানে পিবিআই ঢাকা মেট্রোতে তদন্তাধীন আছে। আটককৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।

জেইউ/এসকেডি/এবিএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।