তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন: সংশোধিত খসড়া পাস হলে সেবনকারীর সংখ্যা কমবে
সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের অধিকতর সংশোধনীর জন্য একটি খসড়া প্রণয়ন করেছে। আইন সংশোধনের এ খসড়া দ্রুত পাস করার পক্ষে মতামত জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা।
বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের এক মতবিনিময় সভায় গণমাধ্যমকর্মীরা এ মতামত জানান। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের স্বাস্থ্য ও ওয়াশ সেক্টরের পরিচালক ইকবাল মাসুদের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য দেন ক্যাম্পেইন ফর ট্যোবাকো ফ্রি কিডস বাংলাদেশের গ্র্যান্টস ম্যানেজার আবদুস সালাম মিয়া ও সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার মো. আতাউর রহমান মাসুদ।
এসময় গণমাধ্যমকর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের উপ-পরিচালক মো. মোখলেছুর রহমান। ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশনের তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের মিডিয়া ম্যানেজার রেজাউর রহমান রিজভীর সঞ্চালনায় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প সমন্বয়কারী মো. শরিফুল ইসলাম।
সভায় বক্তারা জানান, বর্তমানে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫’ আইনে পাবলিক প্লেস, রেস্তোরাঁ ও গণপরিবহনে ধূমপানের সুযোগ থাকার কারণে পরোক্ষ ধূমপানজনিত ক্ষতির শিকার হচ্ছেন অধূমপায়ীরা। এটা স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি। অন্যদিকে বিদ্যমান আইনে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচার পুরোপুরি নিষেধ। তবে বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত পণ্যের প্রদর্শনী বন্ধে সুনির্দিষ্ট কোনো নিষেধাজ্ঞা নেই। আর এ সুযোগে তামাক কোম্পানিগুলো বিক্রয়কেন্দ্রে তাদের পণ্যের প্রদর্শনীর মাধ্যমে তামাকজাত দ্রব্যের বিজ্ঞাপন ও প্রচার চালাচ্ছে।
এজন্য সম্প্রতি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের অধিকতর সংশোধনীর জন্য একটি খসড়া প্রণয়ন করে। এ খসড়া অনুমোদন পেলে পাবলিক প্লেস ও গণপরিবহনে ধূমপান এলাকা বাতিল, বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকজাত দ্রব্যের প্রদর্শনী, খুচরা বিক্রি, ই-সিগারেট ও তামাক কোম্পানির সিএসআর নিষিদ্ধসহ তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের বেশ কিছু দুর্বল দিক অনেকাংশেই দূর হবে এবং শক্তিশালী একটা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাওয়া যাবে।
এসময় ইকবাল মাসুদ বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের অধিকতর সংশোধনীর জন্য যে খসড়া প্রণয়ন করেছে, সেটি পাস হলে দেশে তামাক সেবনকারীদের সংখ্যা হ্রাস পাবে। ফলে ২০৪০ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত তামাকমুক্ত বাংলাদেশ হওয়া সম্ভব হবে।
মো. আতাউর রহমান মাসুদ বলেন, গণমাধ্যমকর্মীদের একটি বড় ভূমিকা রয়েছে সংশোধিত আইনটি পাস করার পেছনে। তারা সরকারের একজন পলিসি মেকারকেও যদি মোবিলাইজড করতে পারে তবে সেটিও অনেক বড় কাজ হবে।
আবদুস সালাম মিয়া বলেন, গণমাধ্যমকর্মীরা যদি জোরালো ভূমিকা রাখে তবে সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়াটি সরকার দ্রুতই পাস করবে বলে আশা করছি। আইন সংশোধনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে তামাকের ব্যবহার কমানো, অধূমপায়ী শিশু কিশোরদের ধূমপান শুরু করায় বাধা সৃষ্টি করা এবং অধূমপায়ীদের ধূমপানমুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে পরোক্ষ ধূমপানের মারাত্মক ক্ষতি থেকে রক্ষা করা।
সভায় গণমাধ্যমকর্মীদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডেইলি স্টারের রাশিদুল হাসান, ইত্তেফাকের আহমেদ তোফায়েল, অবজারভারের ফারহানা নাজনীন, যায় যায় দিনের আলতাব হোসেন, বাংলাদেশ টেলিভিশনের শফিউল্লাহ সুমন, জনকণ্ঠের রহিম শেখ, ভোরের কাগজের মরিয়ম সেঁজুতি, বণিক বার্তার মো. মঞ্জুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ পোস্টের আহমদ পারভেজ খান, আনোয়ার হোসেন, মানবকণ্ঠের মনির জারিফ, চ্যানেল টি-ওয়ানের শরীফ রিমন প্রমুখ।
এএএম/এমআইএইচএস/জিকেএস