কালীগঞ্জে সাধু আন্তনির তীর্থ উৎসব


প্রকাশিত: ০৩:৫৭ এএম, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬

গাজীপুরের কালীগঞ্জে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনায় পালিত হলো খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব সাধু আন্তনির তীর্থ উৎসব। ‘তারই জয়গানে মুখর ধরণী’ এ স্লোগানে উপজেলার নাগরী ইউনিয়নের পানজোরা গ্রামে দুই দফায় খ্রিস্টযাগ অনুষ্ঠিত হয়। তীর্থ যাত্রীদের আগমনে মঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে গানে গানে মুখরিত হয়ে উঠে অনুষ্ঠান প্রাঙ্গন।
 
শুক্রবার সকালে নাগরী ধর্মপল্লী পালকীয় পরিষদের উদ্যোগে উপজেলার পানজোরা গ্রামে এই তীর্থোৎসবের আয়োজন করা হয়। তীর্থোৎসবের প্রথম ও দ্বিতীয় পর্বে কয়েক হাজার খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বী নর-নারী অংশ নেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মনিরুজ্জামান, থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তাফিজুর রহমান প্রমুখ।

Sadu-Antuni

পাদুয়ার সাধু আন্তনি ‘পৃথিবীর সাধু’ হিসেবে পরিচিত। সর্বজন প্রিয় এই সাধু আন্তনি ছিলেন ঐশজ্ঞানের আঁধার, মঙ্গল সমাচারের সুদক্ষ প্রচারক, নিঃস্ব অসহায় মানুষের বন্ধু, পাপীর মন পরিবর্তন, রোগীদের সুস্থ্যতাকারী বহুগুণে গুণান্বিত এক মহান সিদ্ধ পুরুষ। বিগত প্রায় আটশত বছর ঈশ্বর তার এই নম্র ও বিনীত সেবকের মধ্য দিয়ে ভক্তপ্রাণ মানুষকে অসংখ্য অনুগ্রহ দান করেন। তাই সাধারণ মানুষ জীবনের বিভিন্ন প্রয়োজনে তার মধ্যস্থতা কামনা করেন। পানজোরাতে অবস্থিত সাধু আন্তনির তীর্থস্থানে আজও জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ তার মধ্যস্থতায় ঈশ্বরের অনুগ্রহ লাভের জন্য আসেন। অনেকে বিপদাপদে নিজেরা সাধু আন্তনির মধ্যস্থতা কামনা এবং প্রিয়জনদের তার শরণাপন্ন হতে পরামর্শ দেন।

অনেকেই পালা গানের মাধ্যমে, নভেনা করে, তীর্থ করে, মানত করে সাধু আন্তনির গুণগান করে থাকেন। সাধু আন্তনির অসংখ্য ভক্তের ভক্তির শ্রোতধারা যেন আরও শক্তিশালী হয়ে উঠে এ কামনা তীর্থোৎসবে আগত সাধু আন্তনি ভক্ত তীর্থ যাত্রীদের।
 
Sadu-Antuni

সরেজমিনে দেখা যায়, শুক্রবার সকালে শীতের হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে হাজার হাজার তীর্থ যাত্রীর আগমনে সময় বাড়তে থাকার সঙ্গে সঙ্গে জনসমুদ্রে পরিণত হয় নাগরী ধর্মপল্লী পালকীয় পরিষদ প্রাঙ্গন। তীর্থোৎসবটি শুধুমাত্র খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের হলেও উৎসবে অংশ নেয় বিভিন্ন জাতি ধর্মের হাজার হাজার নর-নারী।

সকালে দু’টি পর্বের তীর্থোৎসবে আরতি আগমনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। পরস্পর আরতি শুভেচ্ছা বিনিময়ের পর শুরু হয় খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বাণী পাঠ ও উপদেশ। খ্রিস্ট প্রসাদ বিতরণ শেষে ধন্যবাদ জানিয়ে সমাপনী আশির্বাদ জ্ঞাপন করেন দ্বিতীয় পর্বের প্রার্থনা পরিচালনাকারী ঢাকার আর্চ বিশপ পেট্রিক ডি রোজারিও। প্রথম পর্বের তীর্থোৎসব প্রার্থনা পরিচালনা করেন, ঢাকার সহকারী বিশপ থিউটনিয়াস গমেজ। এসময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত ফাদার, ব্রাদারসহ উপজেলার পাঁচটি মিশনের ফাদার ও ব্রাদারগণ।

আব্দুর রহমান আরমান/এমজেড/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।