নরসিংদীতে সিইসিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নরসিংদীতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন পরাজিত কাউন্সিলর প্রার্থী মো. ওবায়দুর রহমান। গত ১২ই জানুয়ারি ২য় পর্যায়ে মাধবদী পৌরসভা নির্বাচনে ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটগ্রহণের সময় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগে এনে এ মামলা দায়ের করা হয়। একই সঙ্গে বাদী ওই ওয়ার্ডে পুনঃভোট গণনার দাবি জানান।
বৃহস্পতিবার বিকেলে নির্বাচনী ট্রাইব্যুনাল ও প্রথম যুগ্ম-জেলা জজ আদালতে মামলাটি দায়ের করা হয়। ট্রাইব্যুনাল আগামী ১ মার্চ পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেছেন। এদিকে বিকেলে সিইসের বিরুদ্ধে মামলা হলেও রাত ১০ টার পর বিষয়টি জানাজানি হয়।
মামলায় আসামি করা হয়- প্রধান নির্বাচন কশিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, নরসিংদী জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোরশেদ জামান, রিটার্নিং কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, নরসিংদী সদর নির্বাচন কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীন, বিজয়ী কাউন্সিলর মো. শেখ ফরিদ ও অন্য পরাজিত প্রার্থী মো. ইসমাইল হোসেনকে।
মামলার বিবরণে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সিইসি দেশের মেয়াদ উত্তীর্ণ পৌরসভার নির্বাচন সম্পন্ন করার তফসিল ঘোষণা করেন। সে মোতাবেক তিনি (বাদী) সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশনার হতে মাধবদী পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পদে মনোনয়নপত্র কিনে জমা দেন। পরে তাকে পানির বোতল প্রতীক বরাদ্দ দেয়া হয়।
মামলার বিবাদী শেখ ফরিদ উট পাখি প্রতীক ও মো. ইসমাইল হোসেন পাঞ্জাবি প্রতীক বরাদ্দ পান। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনের দিন শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হলে শেখ ফরিদ উট পাখি প্রতীকে পরাজিত হবে বুঝতে পেরে অন্য প্রার্থী মো. ইসমাইল হোসেনের (পাঞ্জাবি প্রতীক) যোগসাজসে সন্ত্রাসী নিয়ে ভোট কেন্দ্রে হামলা চালায়। পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা মাধবদী পৌরসভার নির্বাচন স্থগিত করে দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বাদী নরসিংদী সদর মডেল থানায় একটি মামলা করেন। পরে স্থগিত পৌরসভায় নির্বাচন কমিশনার পুনরায় (চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি) ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেন।
পরবর্তীতে পুনরায় ভোটগ্রহণের সময়ও কাউন্সিলর প্রার্থী শেখ ফরিদ (উট পাখি) তার লোকজন নিয়ে কেন্দ্রে প্রবেশ করে ককটেল, বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উট পাখি প্রতীকে সিল মারেন। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক তিনি বাদি হয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে মামলা করেন। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে। পরে ভোট কেন্দ্রের পরিস্থিতি শান্ত হলে সাধারণ ভোটাররা পুনরায় ভোট দেন। বিকেল ৪টার পর বাদি মো. ওবায়দুর রহমানের এজেন্ট আমিনুল ইসলামের সামনে ভোট গণনা হলে তার (বাদী) প্রতীক (পানির বোতল) জয়ী হয়। উট পাখি প্রতীকের এজেন্ট বিষয়টি বুঝতে পেরে কেন্দ্রের প্রিজাইডিং কর্মকর্তা ও পুলিশের সঙ্গে আতাত করে পানির বোতলের ভোট (ব্যালট পেপার) উট পাখি প্রতীকের বান্ডেলের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হয়।
পাশাপাশি ফলাফল সীটে বাদীর এজেন্টের কোনও স্বাক্ষর ছাড়াই ১ হাজার ৪০৪ ভোটে উট পাখি প্রতীক বিজয়ী হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়। তার পানির বোতল প্রতীকে ৮১৫ ভোট প্রাপ্ত ঘোষণা করলেও মোট ২ হাজার ৯০৭ ভোটের মধ্যে কত ভোট বাতিল হয়েছে এবং তৃতীয়জন কত ভোট প্রাপ্ত হয়েছেন, তা ঘোষণা করা হয়নি। এ বিষয়ে তিনি ১৭ জানুয়ারি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আবেদন জানালেও কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
এ বিষয়ে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, অসঙ্গতি থাকলে যে কেউ মামলা করতে পারেন। তবে মামলা হয়েছে কি না এর কোন কাগজ এখনো হাতে পাইনি।
সঞ্জিত সাহা/জেএইচ