প্রস্তুত হয়নি ২০০ বাস, নতুন ৩ রুটে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’ চালু পেছালো

মুসা আহমেদ
মুসা আহমেদ মুসা আহমেদ
প্রকাশিত: ০৮:১৪ এএম, ২৮ আগস্ট ২০২২
ফাইল ছবি

১ সেপ্টেম্বর ২০০ নতুন বাস নামিয়ে নতুন তিন রুটে ঢাকা নগর পরিবহন চালুর তোড়জোড় ছিল বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির। তবে এ তিনটি রুটে যে কোম্পানির বাস দেওয়ার কথা ছিল, তারা যথাসময়ে দিতে পারছে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এক-চতুর্থাংশ বাস এখনো প্রস্তুত হয়নি। ফলে এ তিন রুটে বাস চালুর তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। নতুন সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ সেপ্টেম্বর।

বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সাচিবিক দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)। সম্প্রতি ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক পদে যোগ দিয়েছেন সরকারের অতিরিক্ত সচিব সাবিহা পারভীন।

আরও পড়ুন>> আরও তিন রুটে চালু হচ্ছে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’

সাবিহা পারভীন জাগো নিউজকে বলেন, যে কোম্পানির ওই তিন রুটে ২০০ বাস দেওয়ার কথা ছিল, তারা যথাসময়ে দিতে পারছে না। মাত্র ৩০ থেকে ৪০টি বাস তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে। তাই নতুন দিন নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫ সেপ্টেম্বর।

২০২১ সালের ডিসেম্বরে ঘাটারচর-কাঁচপুর প্রথম চালু হয় এ নগর পরিবহন। তবে তাতে খুব বেশি সফলতা আসেনি। নতুন এ তিন রুট কতটা সফল হবে তা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন ।

jagonews24

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাস রুট রেশনালাইজেশনের একাধিক সদস্য জাগো নিউজকে জানান, বিদ্যমান বাসগুলো সড়কে রেখে ঢাকা নগর পরিবহনে সুফল মিলবে না। বাস রুট রেশলাইজেশন করতে হলে আগে ওই রুটগুলো থেকে বিদ্যমান বাসগুলো তুলে নিতে হবে। নামাতে হবে প্রয়োজনীয় নতুন বাস। যে কারণে ঘাটারচর-কাঁচপুর রুট তেমন সফল হয়নি।

আরও পড়ুন>> ১ সেপ্টেম্বর থেকে আরও তিন রুটে চলবে নগর পরিবহন

ডিটিসিএ সূত্র জানায়, ১ সেপ্টেম্বর থেকে যে তিনটি রুটে বাস চালু হওয়ার কথা ছিল, সেগুলোকে ২২, ২৩ ও ২৬ নম্বর রুট হিসেবে উল্লেখ করেছে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটি।

এর মধ্যে ২২ নম্বর রুট যাবে ঘাটারচর থেকে ওয়াশপুর-বসিলা-মোহাম্মদপুর টাউন হল-আসাদ গেট-ফার্মগেট-কারওয়ান বাজার-শাহবাগ-কাকরাইল-ফকিরাপুল-মতিঝিল-টিকাটুলি-সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী-কোনাপাড়া হয়ে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার পর্যন্ত।

২৩ নম্বর রুটে ঘাটারচর থেকে ওয়াশপুর-বসিলা-মোহাম্মদপুর-জাপান গার্ডেন সিটি-শ্যামলী-কলেজ গেট-আসাদ গেট-কলাবাগান-সায়েন্স ল্যাব-শাহবাগ-মৎস্য ভবন-প্রেস ক্লাব-গুলিস্তান (জিরো পয়েন্ট)-দৈনিক বাংলা-রাজারবাগ-কমলাপুর-ধলপুর-যাত্রাবাড়ী-শনির আখড়া-রায়েরবাগ-মাতুয়াইল-সাইনবোর্ড হয়ে চিটাগং রোড যাওয়া যাবে।

আরও পুড়ন>> ঢাকা নগর পরিবহন: স্বস্তির পাশাপাশি মিলছে অভিযোগও

এছাড়া ২৬ নম্বর রুটে ঘাটারচর থেকে ওয়াশপুর-বসিলা-মোহাম্মদপুর-টাউন হল-আসাদ গেট-কলাবাগান-সায়েন্স ল্যাব-নিউমার্কেট-আজিমপুর-পলাশী-চাঁনখারপুল ফ্লাইওভার হয়ে পোস্তগোলা ও কদমতলীতে চলাচল করবে। ঘোষণা অনুযায়ী এ তিনটি রুটে বাস চলবে ২০০টি। কিন্তু কোন রুটে কয়টি বাস চলবে, এখনো তা নির্ধারণ করেনি কর্তৃপক্ষ। যে স্থানগুলোতে বাস কাউন্টার বসবে, তাও নির্ধারণ বা চিহ্নিত করা হয়নি।

jagonews24

তবে বুধবার (২৪ আগস্ট) শাহবাগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় বাস রুট রেশনালাইজেশন কার্যক্রমের পরীক্ষামূলক যাত্রাপথে বাস থামার স্থান পরিদর্শন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

আরও পড়ুন>> ১২০ বাস নিয়ে ডিসেম্বরে চালু হচ্ছে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’

এসময় তিনি পুরো এলাকা ঘুরে দেখেন। পরে ডিএসসিসি মেয়র সাংবাদিকদের বলেন, ‘শাহবাগে মেট্রোরেলের সঙ্গে নগর পরিবহন সমন্বয় করতে চাই। এটা করা গেলে যাত্রীরা মানসম্পন্ন সেবা পাবেন। এ সমন্বয় করার জন্যই আমরা এসেছি এবং আমরা দেখেছি এখানে সাংঘর্ষিক কিছু হচ্ছে না। এখানে সুন্দরভাবে সমন্বয় করে কাজটি করা যাবে।’

তিনি বলেন, ‘মেট্রোরেলের কাজ শেষ হওয়ার পর শাহবাগে দুটি বাস-বে বা যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করা হবে। একটি এপারে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন) এবং আরেকটি ওপারে (বারডেম হাসপাতাল)। মেট্রোরেলের কারণে এ দুটি যাত্রী ছাউনি নির্মাণে আমাদের একটু সময় লাগবে। আপাতত এখানে যাত্রী ছাউনি নির্মাণ করবো না।’

আরও পড়ুন>> সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে পারবে ‘ঢাকা নগর পরিবহন’?

সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ২০১৫ সালে বাস রুট রেশনালাইজেশন বা রুটভিত্তিক কোম্পানির অধীনে বাস সেবা চালুর উদ্যোগ নিয়েছিলেন ডিএনসিসির প্রয়াত মেয়র আনিসুল হক। তখন তিনি বলেছিলেন, ঢাকার পুরোনো ও জরাজীর্ণ বাসগুলো সরিয়ে চার হাজার নতুন বাস নামানো হবে। একটি রুট একটি কোম্পানির অধীনে চালানো হলে বাসের প্রতিযোগিতা বন্ধ হবে। এতে সড়ক দুর্ঘটনা কমবে, শৃঙ্খলা ফিরবে।

এমএমএ/এমএএইচ/এএসএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।