হাতিরঝিল থানায় আসামির আত্মহত্যা: মামলার পর মরদেহ নেবে পরিবার
ঢাকা মহানগর (ডিএমপি) পুলিশের হাতিরঝিল থানা হেফাজতে থাকা চুরির মামলায় রুম্মন শেখ (২৭) নামে এক আসামির আত্মহত্যার ঘটনায় ময়নাতদন্তের পরেও মরদেহ নেয়নি পরিবার। নিহতের স্বজনেরা বলছেন, রোববার (২১ আগস্ট) সকালে তারা আদালতে ইউনিলিভারের পিউরিট কোম্পানি ও পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করবেন। এরপর মরদেহ বুঝে নেবেন তারা।
শনিবার (২০ আগস্ট) নিহতের সম্বন্ধী (স্ত্রীর বড় ভাই) মোশাররফ হোসেন জাগো নিউজকে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘রাতে থানা থেকে বলা হয় রুম্মন শেখের মরদেহ নিতে হাতিরঝিল থানা থেকে তাদের পাঠানো হয় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। সেখানে রাত ৮টার পর মরদেহ গোপনে নিয়ে যেতে বলে পুলিশ। কিন্তু আমরা মরদেহ নেয়নি। রাতে সেখান থেকে মরদেহ না নিয়ে বাসায় চলে আসি। রোববার সকালে এ ঘটনায় কোম্পানির বিরুদ্ধে (ইউনিলিভারের পিউরিট) ও পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। এরপর আমরা মরদেহ বুঝে নেবো।’
অন্যদিকে, এ ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্ত পুলিশ সদস্যরা হলেন- হাতিরঝিল থানার ডিউটি অফিসার উপপরিদর্শক (এসআই) হেমায়েত হোসেন ও কনস্টেবল মো. জাকারিয়া।
এছাড়া তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল জোনের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি) হাফিজ আল ফারুককে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে হাতিরঝিল থানায় সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) এইচ এম আজিমুল হক।
তিনি বলেন, গত ১৫ আগস্ট ইউনিলিভারের পিউরিট কোম্পানি থেকে ৫৩ লাখ টাকা চুরি হয়। এ ঘটনায় মামলার পর তিনজনকে গ্রেফতার করে হাতিরঝিল থানা পুলিশ। গ্রেফতার তিনজন হলেন- আল-আমিন, সোহেল রানা ও অনিক হোসেন। তারা এখন কারাগারে আছেন। ওই তিনজনের জিজ্ঞাসাবাদ ও চুরির ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে রুম্মন শেখকে শনাক্ত করা হয়। এরপর শুক্রবার বিকেলে রামপুরা মহানগর এলাকার বাসা থেকে রুম্মনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বাসা থেকে তিন লাখ ১৩ হাজার ৭০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে নিয়ে অভিযান চালানো হয়। এরপর অভিযান শেষে রাত ১১টার দিকে তাকে থানা হেফাজতে রাখা হয়।
ডিসি আরও বলেন, শনিবার সকালে রুম্মন শেখকে আদালতে পাঠানোর কথা ছিল। কিন্তু শুক্রবার দিনগত রাত ৩টা ৩২ মিনিটে রুম্মন তার পরনে থাকা ট্রাউজার দিয়ে লোহার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়। যা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে। এ ফুটেজ নিহতের স্ত্রীসহ স্বজনদেরও দেখানো হয়েছে।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় রাতে ডিউটি অফিসার হেমায়েত হোসেন ও কনস্টেবল মো. জাকারিয়াকে দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, রুম্মনকে মারধর করা হয়েছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
টিটি/এমএএইচ/