‘পুলিশ ভাই লাশগুলো রাখেন, মোবাইল-গহনা দিয়ে দেন’
রাজধানীর উত্তরায় ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে পড়ে প্রাইভেটকারের পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- রুবেল, ঝরণা, ফাহিমা, জান্নাত ও জাকারিয়া। তাদের মরদেহ বর্তমানে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। রাতে মর্গের সামনে ভিড় করছেন নিহতদের স্বজনরা।
তারা জানিয়েছেন, হতাহতরা ঢাকায় একটি বৌভাতের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ফিরছিলেন। বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ায় ফাহিমা ও ঝরণা স্বর্ণের গহনা পরেছিলেন। শিশু জান্নাতের গলায়ও স্বর্ণের চেইন ছিল। আর রুবেলসহ তিনজনের কাছে ছিল দামি মোবাইল।
সোমবার (১৫ আগস্ট) রাতে মরদেহগুলো মর্গে ঢোকানোর সময় সবুজ মিয়া নামে এক স্বজনকে বলতে শোনা যায়, ‘পুলিশ ভাই, লাশগুলো রাখেন। মোবাইল আর গহনাগুলো দিয়ে দেন।’
পরে পুলিশ সদস্যরা নিহতদের নিকটাত্মীয়দের সঙ্গে নিয়ে মর্গে ঢোকেন। সেখান মরদেহের শরীর থেকে গহনা ও মোবাইল দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
সবুজ মিয়া জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিয়ের অনুষ্ঠান। মেয়েদের সবার পরনে দামি গহনা ছিল। বড়দের সবার কাছে দামি মোবাইল ছিল। লাশ মর্গে রাখা হচ্ছে। তাই এগুলো ফেরত চেয়েছিলাম। লাশের সঙ্গে থাকলে মোবাইল ও স্বর্ণের গহনা কেউ নিয়েও নিতে পারে।’
ঢাকার সঙ্গে গাজীপুরের সড়ক যোগাযোগ আধুনিক করতে বিমানবন্দর থেকে গাজীপুর পর্যন্ত বাস র্যাপিড ট্রানজিটের (বিআরটি) নির্মাণকাজ চলছে। ‘গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট’ শীর্ষক এ প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে পড়ে প্রাইভেটকারের পাঁচজন নিহত হন।
সোমবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। হতাহতরা ঢাকায় একটি বৌভাতের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে ফিরছিলেন।
রাতে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়, গাড়িটিতে মোট সাতজন যাত্রী ছিলেন। এরমধ্যে দুই শিশু, দুই নারী ও একজন পুরুষ মারা গেছেন।
দুর্ঘটনায় হৃদয় (২৬) ও রিয়া মনি (২১) নামে নবদম্পতিও আহত হয়েছেন। তাদেরকে উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা এখন শঙ্কামুক্ত।
স্বজনরা জানান, ফাহিমা হলেন নববধূ রিয়া মনির মা। আর ঝরণা হলেন তার খালা। রুবেল সম্পর্কে ফাহিমা-ঝরণার বেয়াই। জান্নাত ও জাকারিয়া ঝরণার সন্তান। ফাহিমা-ঝরণাদের বাড়ি জামালপুরের ইসলামপুরে। আর রুবেলের বাড়ি মেহেরপুরে।
এমওএস/এএএইচ