বাসভাড়া নিয়ে নৈরাজ্যের শিকার আ’লীগ নেতা, জানালেন ওবায়দুল কাদেরকে

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০১:৪৮ এএম, ১০ আগস্ট ২০২২
বাসে যে যার ইচ্ছামতো ভাড়া নিচ্ছে বলে অভিযোগ আছে, এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা

সড়কে গণপরিবহনে ভাড়া নিয়ে অনিয়মের শেষ নেই। দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে এই অনিয়ম। যে যার ইচ্ছামতো ভাড়া নেয়। এর মধ্যে আবার যখন জ্বালানি তেলের দাম বাড়ে, তখন এই নৈরাজ্য যেন আরও প্রকট আকার ধারণ করে। সাধারণ যাত্রীরা এসব অনিয়মের প্রতিবাদ করলে তাদের শিকার হতে হয় হেনস্তার। ফলে অনেকে ভয়ে নীরবে সয়ে যান।

তবে এবার গণপরিবহনে এই অনিয়মের শিকার হয়েছেন খোদ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ। তাকে দিতে হয়েছে অতিরিক্ত ভাড়া। এরই মধ্যে বিষয়টি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে জানিয়েছেন তিনি। সড়কের এই নৈরাজ্য নিয়ে দলীয় অফিসেও আলোচনা করেছেন।

কাজী জাফরউল্লাহ বলেন, দেখলাম যাত্রীদের যথেষ্ট কষ্ট হচ্ছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য মন্ত্রীকে জানিয়েছি।

jagonews24

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ

ঘটনার বিবরণ দিয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী ফোরামের ওই নেতা জানান, মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) তিনি মিরপুরের পূরবী সিনেমা হলের সামনে থেকে বাসে উঠেন। আর নামেন বনানীর কাকলী মোড়ে। এ জন্য তাকে দিতে হয়েছে ৩০ টাকা ভাড়া। এতে তিনি ঠকেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পূরবী থেকে কাকলী মোড়- এই পথের দূরত্ব ৬ দশমিক ৮ কিলোমিটার। আর সরকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ ভাড়া কিলোমিটারপ্রতি আড়াই টাকা। সে হিসাবে ভাড়া হয় ১৭ টাকা। আওয়ামী লীগ নেতা দিয়েছেন ৪ টাকা ১১ পয়সা হারে ৩০ টাকা। অবশ্য এর আগে থেকে আদায় করা হতো ২০ টাকা।

এদিকে মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন রুটের বাসে অনিয়মের চিত্র দেখেন জাগো নিউজের এই প্রতিবেদক। কোনো বাসেই নেই ভাড়ার চার্ট। রাজধানীর মোহাম্মদপুর শিয়া মসজিদ থেকে আব্দুল্লাহপুর রুটে চলাচল করে আলিফ ও ভূঁইয়া পরিবহনের বাস। মিরপুর থেকে যাত্রাবাড়ী রুটে শিকড় পরিবহনের বাস চলে।

এছাড়া মিরপুর থেকে কমলাপুরে আয়াত এবং মিরপুর থেকে রামপুরায় চলাচল করে আলিফ পরিবহনের বাস। কিন্তু এসব পরিবহনের বাসে কোনো ধরনের ভাড়ার চার্ট চোখে পড়েনি। ফলে যে যার মতো কাটছে ভাড়া। এতে ঠকছেন যাত্রীরা। তাদের সঙ্গে পরিবহন শ্রমিকদের বাকবিতণ্ডাও হচ্ছে।

jagonews24

ভাড়ার চার্ট না থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে নাম-পরিচয় গোপন রেখে চালক ও হেলপাররা বলেন, তারা চার্ট পাননি।

এদিকে যাত্রীরা বলছেন, এটা ওদের চালাকি। তারা চার্ট টানায় না বেশি ভাড়া নেওয়ার জন্য।

চার্টের বিষয়ে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, এরই মধ্যে আমরা মালিকপক্ষের মাধ্যমে ভাড়ার চার্ট পৌঁছে দিয়েছি। মালিকদের দায়িত্ব প্রতিটি বাসে চার্ট টানানো। তবে অনেক বাসে চার্ট সাঁটানো হয়নি বলে অভিযোগ পেয়েছি। আমাদের টিমও প্রমাণ পেয়েছে তার। এজন্য মামলাও হয়েছে। আমরা বিষয়টি কঠোরভাবে মনিটরিং করছি।

এর আগে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে শনিবার (৬ আগস্ট) বাসভাড়া বাড়ায় বিআরটিএ।

এতে দেখা যায়, দূরপাল্লার বাসের ভাড়া আগে ছিল প্রতি কিলোমিটারে ১ টাকা ৮০ পয়সা, যা বাড়িয়ে এখন করা হলো ২ টাকা ২০ পয়সা।

এছাড়া মহানগর পর্যায়ে আগে প্রতি কিলোমিটারে বড় বাসের ভাড়া ছিল ২ টাকা ১৫ পয়সা, এখন তা ২ টাকা ৫০ পয়সা হয়েছে। মিনি বাসের আগে ছিল ২ টাকা ৫ পয়সা যা বাড়িয়ে করা হয়েছে ২ টাকা ৪০ পয়সা।

এছাড়া সর্বনিম্ন ভাড়া বাসে ১০ টাকা, মিনিবাসে ৮ টাকা হয়েছে।

এসইউজে/জেডএইচ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।