সড়কে তীব্র যানজট, চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা
সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস রোববার (২৪ জুলাই) রাজধানীতে তীব্র যানজট দেখা গেছে। সরেজমিনে সকাল সাড়ে ৯টা থেকেই মহাখালী, বিজয় সরণি উড়াল সড়ক, তেজগাঁও সাতরাস্তা, মগবাজার, কাকরাইল ও পল্টন এলাকায় যানজট দেখা গেছে। ঢাকা মহানগরের প্রতিটি মোড়েই যানজট তীব্র ছিল। এ দিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সড়কে গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে। যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশকে হিমশিম খেতে দেখা গেছে।
মিরপুর-১০ নম্বর থেকে সকাল সাড়ে ১০টায় সদরঘাটগামী বিহঙ্গ পরিবহনের একটি বাসে যাত্রা শুরু করেন সোহাগ হোসেন। গন্তব্য পুরান ঢাকার বাংলাবাজার। দুপুর ১২টায় গুলিস্তানের গোলাপ শাহ মাজার এলাকায় পৌঁছান তিনি। ইসলামপুর পৌঁছাতে আর কতো সময় লাগবে, সেটি জানেন না তিনি।
গুলিস্তানে যানজটে আটকে থাকা বিহঙ্গ বাসের যাত্রী সোহাগ হোসেন বলেন, ঈদুল আজহার পর ঢাকা আগের চিরচেনা রূপে ফিরেছে। যানজট ও ভ্যাপসা গরমে বাসের সব যাত্রী অস্থির হয়ে গেছে। সবার কর্মঘণ্টা নষ্ট হচ্ছে।
তিনি বলেন, মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বর থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত তেমন কোনো জ্যাম ছিল না। তবে সড়কে গাড়ির চাপ ছিল। চন্দ্রিমা উদ্যানের কাছাকাছি আসার পরই যানজট শুরু হয়। ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার ও বাংলামোটর পাড়ি দিতে ৪৫ মিনিট সময় লেগেছে। পরে শাহবাগ ও মৎস্য ভবন হয়ে প্রেস ক্লাব আসতেই আবার যানজটে পড়তে হয়। সড়কের প্রত্যেকটি মোড়ে যানবাহনের জটলা লেগে আছে।
ধানমন্ডির জিগাতলা থেকে বেলা ১১টায় মতিঝিলের উদ্দেশ্য রওয়ানা হন সাব্বির আহমেদ। দুপুর ১২টায় দৈনিক বাংলা মোড়ে পৌঁছান তিনি। যানজট বেশি থাকায় বাস থেকে নেমে হেঁটেই গন্তব্যে রওয়ানা হন তিনি।
আলাপকালে সাব্বির আহমেদ বলেন, জিগাতলা থেকে হেঁটে রওয়ানা দিলেও বাসের আগে মতিঝিল পৌঁছানো সম্ভব হতো। এখন মানুষের হাঁটার তুলনায় বাসের গতি কমে গেছে। অথচ যানজট নিরসনে সরকারের কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেই। টেলিভিশন ও সভা-সেমিনারে শুধু গালগল্প করেন জনপ্রতিনিধিরা।
সকাল সাড়ে ৯টায় টঙ্গী থেকে পুরান ঢাকার নবাবপুরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেন শাজাহান পাটোয়ারী। গুলিস্তান হয়ে নবাবপুরে পৌঁছাতে তার সময় লেগেছে তিন ঘণ্টা।
শাজাহান পাটোয়ারী বলেন, ব্যবসার কাজে তাকে প্রায়ই নবাবপুর যাতায়াত করতে হয়। কিন্তু যানজটে দিনের অর্ধেক সময় রাস্তায়ই কেটে যায়। টঙ্গী থেকে কুড়িল আসতেই এক-দেড় ঘণ্টা লাগে। পরে বাড্ডা, রামপুরা, মৌচাক, কাকরাইল, পল্টন ও গুলিস্তান হয়ে নবাবপুর পৌঁছাতে আরও এক-দেড় ঘণ্টা সময় লাগে। আবার টঙ্গী ফিরতেও একই সময় লাগে।
এই যানজট থেকে কবে মুক্তি মিলবে, আদৌ মুক্তি মিলবে কি না- সরকারের কাছে এমন প্রশ্ন শাজাহানের।
দুপুর ২টায় মহাখালী থেকে মগবাজারগামী সড়কেও তীব্র যানজট দেখা গেছে। এর মধ্যে সাতরাস্তা মোড়ে গাড়ির চাপ বেশি রয়েছে। একইভাবে সাতরাস্তা থেকে বিজয় সরণি উড়ালসড়ক, নাবিস্কো ও মহাখালী বাস টার্মিনাল এলাকায় যানজট রয়েছে।
পল্টনে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছিলেন সার্জেন্ট মাজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঈদের পর সাত থেকে আটদিন রাস্তায় যানবাহনের চাপ কম ছিল। আজ সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস হওয়ায় গাড়ির চাপও বাড়ছে। যানজট নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক পুলিশ যথাসাধ্য চেষ্টা করছে।
এমএমএ/এমপি/এএসএম