কালোজিরা এখন মাদারীপুরের কৃষকের কাছে ‘কালোসোনা’
মাদারীপুরের কৃষকদের মুখে হাসি এনে দিচ্ছে ‘কালোজিরা’। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬ গুণ বেশি জমিতে এবছর চাষ হয়েছে ‘কালোসোনা’ খ্যাত স্থানীয় জাতের এই কালোজিরা। কৃষি বিভাগ বলছে, কৃষকদেরকে কম খরচে বেশি মুনাফা লাভের জন্য মসলা জাতীয় ফসল উৎপাদনের উদ্বুদ্ধকরণই এই সফলতার উৎস।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মাদারীপুরের ৪টি উপজেলায় চলতি বছর মাত্র ৫৯১ হেক্টর জমিতে মসলা জাতীয় ফসল কালোজিরা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল। কিন্তু অল্প পুঁজি বিনিয়োগে অধিক পরিমাণ মুনাফা লাভ হওয়ায় জেলায় তিন হাজার ৮’শ ১১ হেক্টর জমিতে স্থানীয় উন্নত জাতের কালোজিরা চাষ করা হয়েছে। যার মধ্যে মাদারীপুর সদরে এক হাজার ৩০ হেক্টর, কালকিনিতে ৮৫ হেক্টর, রাজৈরে ৪৯৬ হেক্টর এবং শিবচরে ২২০০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
সরেজমিনে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছর আবহাওয়া যদি অনুকূলে থাকে, তবে বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখেছেন তারা। বর্তমান বাজার মূল্যে বিঘা প্রতি এক থেকে দেড় লাখ টাকা লাভের মুখ দেখবেন কৃষকরা।
মাদারীপুর সদর উপজেলার অ্যাওজ গ্রামের বাসিন্দা আবদুস সাত্তার বেপারী বলেন, ‘আমি এই বছর এক বিঘা জমিতে কালোজিরা চাষ করছি। জিরা খুব ভালো হইছে। আশা করছি আমার জমিতে প্রায় ৬ মন জিরা উৎপাদন হবে। বর্তমান বাজার মূল্য যদি থাকে, তাহলে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার টাকা মুনাফা ঘরে তুলতে পারবো।’
একই ধরনের কথার সঙ্গে আরো যোগ করে কালকিনি উপজেলার পূর্ব এনায়েতনগর গ্রামের আবুল কালাম ও শিবচরের ভান্ডারিকান্দি গ্রামের আবুল হোসেন বললেন, ‘কালোজিরার বাজারে যে দাম পাওয়া যাচ্ছে, তাতে এই কালোজিরা আমাদের কাছে কালোসোনার মতন।’
অ্যাওজ গ্রামের চাষী সিদ্দিক সরদার বললেন, আমাগো আবহাওয়া জিরা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। এই বছরের জমিতে কালোজিরার যে রকম ফলন দেখছি তাতে আমি বাম্পার ফলনের ব্যাপারে খুবই আশাবাদী। আগামীতে আমি দ্বিগুণ পরিমাণ জমিতে কালোজিরা চাষ করবো।
তবে মাদারীপুর কৃষি কর্মকর্তা আবদুল কাদের সরদার বলছেন, কৃষকদের মাঝে কম খরচে বেশি মুনাফা লাভের জন্য বিভিন্ন সময়ে প্রশিক্ষণে মসলা জাতীয় ফসল চাষে উদ্বুদ্ধকরণ করা হয়েছে বলেই এবছর মাদারীপুরের কৃষকরা ব্যাপক হারে কালোজিরা চাষ করছে।
তিনি বলেন, মাদারীপুরের আবহাওয়া কালোজিরা চাষের জন্য খুবই উপযোগী। আগামী দিনে এই কালোজিরা মাদারীপুরের কালোসোনা নামে চিহ্নিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
এ কে এম নাসিরুল হক/বিএ