‘আমরা সড়কে বসেই পদ্মা সেতুর আনন্দ পাচ্ছি’
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:২৬ এএম, ২৫ জুন ২০২২
অডিও শুনুন
‘ঠিক ঈদের মতো আনন্দ পাচ্ছি। যদিও গাড়িতে যাত্রী না থাকায় কিছুটা অর্থ কম আসবে। তবুও ফাঁকা রাস্তায় তেলও পুড়বে কম। আমরা সড়কে বসেই পদ্মা সেতুর আনন্দ পাচ্ছি।’
পদ্মা সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে এভাবেই নিজের অভিব্যক্ত প্রকাশ করছিলেন বাসচালক সাজু। তিনি ঢাকায় আট নম্বর পরিবহনের বাস চালান।
শনিবার (২৫ জুন) সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে শুধু পদ্মাপাড় নয়, সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। রাজধানীর সড়কে সড়কে শোভা পাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানিয়ে নানা রঙের ব্যানার। এছাড়া ফেস্টুন-বিলবোর্ড। বিভিন্ন ভবনে করা হয়েছে আলোকসজ্জা। বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে রয়েছে বিলবোর্ড ও পদ্মা সেতুর ছবি।
এছাড়া এদিন ঢাকার সড়কে অন্য সময়ের থেকে কম ছিল যানবাহন। ছিল না যানজট। তেমন কোনো ভোগান্তি ছাড়াই মানুষ গন্তব্যে যেতে পেরেছে।
আট নম্বর বাসের যাত্রী মৌটুসি বলেন, ‘অন্যান্য দিনের মতো আজও হাতে বেশি সময় নিয়ে বের হয়েছিলাম। তবে আজ ঈদের সময়ের মতোই রাস্তা ফাঁকা। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন সড়ক মনে হচ্ছে। পদ্মা সেতু আমাদের এ পরিবেশ উপহার দিয়েছে, সাধুবাদ জানাই প্রধানমন্ত্রীকে।’
একই কথা বলেন বাহন পরিবহনের চালক আসাদ। তিনি বলেন, ‘যানজটের নগরীতে আজ পদ্মা সেতুর আনন্দ বইছে। সড়ক ফাঁকা, সড়কের দু’পাশ সেজেছে ব্যানার-বিলবোর্ড দিয়ে। এটা খুবই আনন্দের বিষয়, আমরা সবাই এ পরিবেশ উপভোগ করছি।’
এমদাদ হোসেন নামে এক যাত্রী বলেন, ‘ফাঁকা সড়কে গণপরিবহন যাত্রী পেতে অপেক্ষা করছেন বেশি। এতে কিছুটা ভোগান্তি লাগছে। তবে সব যাত্রীর মাঝেই আনন্দের ছাপ। আমি এটা বেশ উপভোগ করছি।’
২০০১ সালের ৪ জুলাই স্বপ্নের পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০১৪ সালের নভেম্বরে নির্মাণকাজ শুরু হয়। দুই স্তরবিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাসের এ সেতুর ওপরের স্তরে চার লেনের সড়ক পথ এবং নিচের স্তরে একটি একক রেলপথ রয়েছে।
পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ৪২টি পিলার ও ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যানের মাধ্যমে মূল অবকাঠামো তৈরি করা হয়। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬ দশমিক ১৫০ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ১৮ দশমিক ১০ মিটার।
পদ্মা সেতু নির্মাণে খরচ হয়েছে ৩০ হাজার কোটি টাকা। এসব খরচের মধ্যে রয়েছে সেতুর অবকাঠামো তৈরি, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক, ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশ, বেতন-ভাতা ইত্যাদি।
বাংলাদেশের অর্থ বিভাগের সঙ্গে সেতু বিভাগের চুক্তি অনুযায়ী, সেতু নির্মাণে ২৯ হাজার ৮৯৩ কোটি টাকা ঋণ দেয় সরকার। ১ শতাংশ সুদ হারে ৩৫ বছরের মধ্যে সেটি পরিশোধ করবে সেতু কর্তৃপক্ষ।
৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার স্বপ্নের কাঠামো নির্মাণের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।
ইএআর/জেডএইচ/এএসএম