প্রতিরক্ষা বিভাগের সর্বাধিনায়ক রাষ্ট্রপতি : সংসদে বিল উত্থাপন


প্রকাশিত: ০২:০৭ পিএম, ২৬ জানুয়ারি ২০১৬

বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী ও নৌ বাহিনীর প্রধানদের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সর্বাধিনায়ক হিসেবে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালনের বিধান সংবলিত আইন জাতীয় সংসদে উত্থাপিত হয়েছে। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার বিলটি উত্থাপিত হয়েছে।

সংবিধানের ৬১ অনুচ্ছেদের অধীনে রাষ্ট্রপতির উপর প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহ ন্যস্ত হলেও এ পর্যন্ত কোনো আইন ছিল না। এর আগে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত সময়ের মধ্যে জারিকৃত অধ্যাদেশের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি সর্বাধিনায়ক ছিলেন। কিন্তু সংবিধানের চতুর্থ তফসিলের ১৮ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হওয়ায় ওই অধ্যাদেশসমূহ কার্যকারিতা হারায়। এরই প্রেক্ষিতে এই বিলটি আনা হয়েছে।

প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগ (সর্বাধিনায়কতা) আইন ২০১৬ শীর্ষক বিলটি সংসদের বিবেচনার জন্য উত্থাপন করেন সংসদ কার্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত জনপ্রশাসন মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। পরে বিলটি পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়।

আইনের উদ্দেশ্য ও কারণ সংবলিত বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সংবিধান (পঞ্চদশ সংশোধনী) আইন ২০১১ দ্বারা সংবিধানের চতুর্থ তফসিলের ১৮ অনুচ্ছেদ বিলুপ্ত হওয়ায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট হতে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত জারিকৃত অধ্যাদেশসমুহ কার্যকারিতা হারায়। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের ‘দ্য ডিফেন্স সার্ভিস (সুপ্রিম কমান্ড) অর্ডিন্যান্স ১৯৭৯’ অধ্যাদেশটি (১৯৭৯ সালের ১নং আইন ) আদালত কর্তৃক বিলপ্ত হওয়া সময়ের মধ্যে জারিকৃত।

‘অধ্যাদেশটির অধীন বিধানসমুহের কার্যকারিতা জনস্বার্থে বহাল ও অক্ষুণ্ণ রাখার লক্ষ্যে নতুন আইন করা প্রয়োজন। এ লক্ষ্যে বিল প্রণয়ন করা হয়েছে। বিলটি আইনে রূপান্তরিত হলে রাষ্ট্রপতি প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহের সর্বাধিনায়ক হবেন এবং তিনি তার উপর ন্যস্ত প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহের সর্বাধিনায়কতা প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহের প্রধানগণের মাধ্যমে প্রয়োগ করবেন। কার্যকারিতা হারানো অধ্যাদেশটির স্থলে এ সংক্রান্ত নতুন আইনের খসড়া বিল মন্ত্রিসভা নীতিগত অনুমোদন করেছে।’

এর আগে রাষ্ট্রের কাছে প্রতীয়মান হয়, প্রজাতন্ত্রের কর্মের ধারাবাহিকতা, আইনের শাসন জনগণের অর্জিত অধিকার সংরক্ষণ এবং বহাল ও অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য জনস্বার্থে অধ্যাদেশসমূহের কার্যকারিতা প্রদান আবশ্যক। তাই আদালতের রায়ের প্রেক্ষিতে সৃষ্ট আইনি শূন্যতা সমাধানকল্পে ২০১৩ সালের ২১ জানুয়ারি রাষ্ট্রপতি একটি অধ্যাদেশ জারি করেন।

পরে সংবিধানের ৯৩ (২) অনুচ্ছেদের নির্দেশনা পূরণ কল্পে বাতিল ঘোষিত কতিপয় অধ্যাদেশ কার্যকরণ (বিশেষ বিধান) আইন ২০১৩ প্রণীত হয়।

আইনের ৩ নম্বর ধারায় বলা হয়, ‘দ্য ডিফেন্স সার্ভিস (সুপ্রিম কমান্ড) অর্ডিন্যান্স ১৯৭৯’ অধ্যাদেশটি এতদ্বারা উল্লেখিত ও রহিত করা হলো। তবে রহিতকরণ সত্ত্বেও উক্ত অধ্যাদেশের অধীন কৃত কাজ-কর্ম, গৃহীত ব্যবস্থা বা সূচিত কোন কার্যধারা এ আইনের অধীন বলে গণ্য হবে। এছাড়া কোন কার্যধারা অনিস্পন্ন বা চলমান থাকলে, তা এমনভাবে নিস্পন্ন হবে যেন-এ আইনের অধীন গৃহীত হয়েছে।’

আইনের দুই নম্বর ধারায় বলা হয়, রাষ্ট্রপতি প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহের সর্বাধিনায়ক হবেন এবং তিনি সংবিধানের ৬১ অনুচ্ছেদের অধীনে তার উপর ন্যাস্ত প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহের সর্বাধিনায়কতা প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহের প্রধানগণের মাধ্যমে প্রয়োগ করবেন। রাষ্ট্রপতির সাধারণ নির্দেশনা ও নিয়ন্ত্রণ সাপেক্ষে, প্রতিরক্ষা কর্মবিভাগসমূহের প্রধানগণ তাদের অধীনস্থ বাহিনীর উপর ক্ষমতা প্রয়োগ করবেন।

এইচএস/এসএইচএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।