সংসদে ভাতের জন্য হাহাকার, হুড়োহুড়ি


প্রকাশিত: ১০:২৪ এএম, ২৬ জানুয়ারি ২০১৬

দৃশ্যটা দেখে যে কেউ ভিমড়ি খেয়ে যাবেন। কারণ সরকার ঘোষিত ক্ষুধামুক্ত বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের মত একটি জায়গায় ভাতের সঙ্গে সামান্য ডাল, ডিমভাজা কিংবা সবজির জন্য হুড়োহুড়ি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকা। কারো ভাগ্যে কিছু জুটলেও অধিকাংশই বিফল মনোরথে ফিরে যাচ্ছেন মুখ কালো করে। কেউ কেউ তারপরও খাবার পাওয়ার আশায় বসে আছেন নিরসমুখে।
 
শুধু সংসদের কর্মকর্তা-কর্মচারী কিংবা আগত অতিথিরাই এমন বিড়ম্বনায় পড়েছেন তা নয়। খোদ সংসদের প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ, বিরোধী দলীয় প্রধান হুইপ তাজুল ইসলাম চৌধুরীসহ অনেকে না খেয়ে আছেন।

Parliament
অধীনস্থদের বার বার নির্দেশ দেয়া সত্বেও পাচ্ছেন না খাবার। তাই কেউ কেউ বাধ্য হয়েই বাসায় চলে যাচ্ছেন। আবার অনেক চেষ্টা করে কেউ কেউ খাবার পেলেও সিদ্ধ না হওয়ায় তা গিলতে পারছেন না।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদের ক্যান্টিনে গ্যাস না থাকায় এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সারাদেশে তীব্র গ্যাস সংকটের মধ্যে এতদিন সংসদে গ্যাস থাকলেও মঙ্গলবার এর চাপ একদম কমে যায়। কখনও কখনও গ্যাসই আসে না। তাই রান্না বন্ধ। বিকল্প ব্যবস্থায় রান্না করা সম্ভব হলেও  প্রায় ১ হাজার কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য তা ছিল অপ্রতুল।

সংসদের ৯ তলায় অবস্থিত সংসদ সদস্য ক্যাফেটেরিয়ার বাবর্চি আজিজ জানান, গ্যাসের অভাবে রান্না বন্ধ থাকলেও অর্ডার বন্ধ নেই। তাই হুড়োহুড়ি শুরু হয়েছে।

আইন শাখা-২ অফিস সহকারী কবির জানান, তার বসের অর্ডার অনুযায়ী খাবার আনতে গিয়ে দুই ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও খাবার পাননি।

Parliament
এদিকে খাবার পেতে হুড়োহুড়ির মধ্যে পড়ে নিজের শাড়িতে ডাল পরে যায় সেবিকা রানী নামে এক কর্মকর্তার। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বাসাতেও গ্যাস নেই। কিন্তু জাতীয় সংসদে গত দশ বছরে এমন ঘটনা ঘটেনি। ডাল, ভাত আর সবজি আনতে গিয়ে শাড়ি নষ্ট হলেও আড়াই ঘণ্টা চেষ্টা করেও ভাত পাইনি।

অনেক চেষ্টা করে ভাত আর ডিম ভাজা পেয়েছেন আবদুল হক নামে একজন । কিন্তু সিদ্ধ না হওয়ায় সেই ভাত খেতে পারেননি তিনি। এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, সংসদে আজ বিশ বছর ধরে চাকরি করি। কিন্তু এমন পরিস্থিতির মধ্যে কোনো দিন পড়তে হয়নি।

এ বিষয়ে সংসদের প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ জাগো নিউজকে বলেন, আমিও অনেকক্ষণ অপেক্ষা করে খাবার না পেয়ে বাসায় চলে যাচ্ছি। কিন্তু সেখানেও গ্যাস নেই। এই সমস্যা শুধু সংসদে না পুরো ঢাকা শহরেই। আশা করি কয়েকদিনের মধ্যেই তা ঠিক হয়ে যাবে।

এইচএস/একে/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।