হতাহতদের ৭৯ পরিবারকে সাড়ে ৫ কোটি টাকা দিলো বিএম ডিপো

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০৩:০৮ পিএম, ২০ জুন ২০২২

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ও নিখোঁজ ফায়ার সার্ভিসকর্মীদের প্রত্যেকের পরিবারকে ১৫ লাখ টাকা দিয়েছে ডিপো কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে নিহত শ্রমিক ও চালকসহ অন্যদের পরিবারকে ১০ লাখ, অঙ্গ হারানো ব্যক্তির পরিবারকে ছয় লাখ এবং সাধারণ আহতদের চার লাখ টাকা দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২০ জুন) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে হতাহত পরিবারের সদস্যদের সাড়ে পাঁচ কোটি টাকার চেক তুলে দেন জেলা প্রশাসক মো. মমিনুর রহমান।

এ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মু. মাহমুদ উল্লাহ মারুফের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চসিকের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, বিএম কনটেইনার ডিপোর পরিচালক শফিকুর রহমান, স্মার্ট গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী ও চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ।

bm-dipo3

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ফায়ার সার্ভিসের নিহত ১০ ও নিখোঁজ তিনজনের পরিবারকে ১৫ লাখ টাকা করে, আহত ৯ জনকে ১০ লাখ করে, সাধারণ আহত পাঁচজনকে ছয় লাখ করে, প্রাথমিক চিকিৎসাপ্রাপ্ত তিনজনকে দুই লাখ টাকা করে দেওয়া হয়।

এছাড়া বিএম ডিপোর নিহত ৯ শ্রমিকের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে, আহত তিন শ্রমিককে ছয় লাখ টাকা করে এবং সাধারণ আহত ১৯ জনকে চার লাখ টাকা করে দেওয়া হয়। নিহত অন্য চারজনের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে এবং আহত চারজনকে চার লাখ করে টাকা দেওয়া হয়।

যাদের মরদেহ এখনো চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি, সেই সব পরিবারকে ডিএনএ রিপোর্টের মাধ্যমে মরদেহ শনাক্ত করার পর সহায়তার অর্থ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে ডিপো কর্তৃপক্ষ।

অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক বলেন, বিএম ডিপোর ঘটনার পর শুধু প্রশাসন নয়, চট্টগ্রামের জনসাধারণ মানুষ একযোগে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। চট্টগ্রামকে যে ‘বীর চট্টলা’ বলা হয়, এর মাধ্যমে সেটা প্রমাণ করেছে পুরো চট্টগ্রামবাসী।

তিনি বলেন, বিএম ডিপোতে রাত ৯টায় আগুন লাগে। রাত পৌনে ১০টায় বিএম ডিপোর ঘটনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী জানেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী তাৎক্ষণিক সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরকে নির্দেশনা দেন। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় থেকে শুরু করে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, র‌্যাব, সেনাবাহিনীসহ সবাইকে দুর্যোগ মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনার কারণেই এতো বড় দুর্যোগ মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে।

bm-dipo3

মমিনুর রহমান বলেন, এ দুর্ঘটনায় বিএম ডিপো কর্তৃপক্ষ এ পর্যন্ত যত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, সব প্রতিশ্রুতি রেখেছেন। তারা হতাহতদের পরিবারকে সহযোগিতার যে আশ্বাস দিয়েছে, সেটা এরই মধ্যে প্রতিপালন করছেন। আশা করবো আগামীতেও যেসব আহত ব্যক্তি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নেবেন। যাদের পরিবারে কর্মক্ষম ব্যক্তি নেই, সেই পরিবারের ভবিষ্যতে ভরণ-পোষণের ব্যবস্থা করবেন।

বিএম ডিপোর মালিকানা প্রতিষ্ঠান স্মার্ট গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী বলেন, বিএম কনটেইনার ডিপোর দুর্ঘটনায় নিজেদের জীবনের মায়া ত্যাগ করে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নেভাতে গিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায় অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া অনেকে প্রাণ হারিয়েছে। তারা শহীদ হয়েছেন। এতো বড় একটি দুর্ঘটনার পড়েও বিএম ডিপো হতাহত পরিবারের পাশে দাঁড়িয়েছে। সবার সহযোগিতায় বিএম ডিপো আবারও তাদের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু করবে।

পাশাপাশি হতাহতদের স্মরণে স্মার্ট গ্রুপের প্রধান কার্যালয় এবং বিএম ডিপোতে দুটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের ঘোষণা দেন তিনি।

ইকবাল হোসেন/আরএডি/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।