বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টি করুন


প্রকাশিত: ০৫:০৭ এএম, ২৬ জানুয়ারি ২০১৬

রাজধানীতে দুইদিনব্যাপী অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ সম্মেলনে আগামী কয়েক বছরে বাংলাদেশে ১৫ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারের সমপরিমাণ এক লাখ ২১ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে দেশি-বিদেশি শিল্প গ্রুপ। এটি অত্যন্ত আশার দিক। এ জন্য দেশে বিনিয়োগবান্ধব একটি পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে সবার আগে। পাশাপাশি ঢাকায় অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও নীতি সম্মেলনে যে সব সুপারিশ করা হয়েছে সেগুলো বাস্তবায়নের দিকেও নজর দিতে হবে। বিপুল বেকারত্বের এদেশে বিনিয়োগ বাড়িয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টির কোনো বিকল্প নেই।

গত রোববার সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিনিয়োগ বোর্ড, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও বিল্ড যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করে। এতে অন্তত ২২ দেশের তিন শতাধিক উদ্যোক্তা অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। এ জন্য তার সরকার সব ধরনের সহযোগিতা দিতে প্রস্তুত বলেও তিনি বিনিয়োগকারীদের আশ্বাস দেন। সম্মেলনে সরকারের পক্ষ থেকে বিনিয়োগের জন্য বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয় বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে। বিনিয়োগের বিভিন্ন সুবিধা তুলে ধরে বলা হয়- ১০০ এসইজেড ছাড়াও ১৫ থেকে ২০টি হাইটেক পার্ক হচ্ছে, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) ভিত্তিতে অবকাঠামো খাতে ৩৫টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পশ্চাদসংযোগ শিল্পসহ পোশাক খাত, ওষুধ, চামড়া ও পাদুকা, বিদ্যুৎ-জ্বালানি ও ভৌত অবকাঠামোসহ অন্তত ১০টি খাতে লাভজনক বিনিয়োগের কথাও তুলে ধরেন ব্যবসায়ী নেতারা।  

বিনিয়োগ সম্মেলনে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের কথাও উঠে আসে। এসবের মধ্যে রয়েছে-অবকাঠামো সংকট, জমির সংকট, দক্ষ মানবসম্পদের অভাব, আন্তঃমন্ত্রণালয় সমন্বয়ের অভাব, নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে সিদ্ধান্তহীনতা ইত্যাদি। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ১৫ দফা সুপারিশ করা হয়েছে। সুপারিশের মধ্যে রয়েছে- বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) নীতি পর্যালোচনা, ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক গঠন, পিপিপিকে কার্যকর করা, এসএমইএ ইনভেস্টমেন্ট বোর্ড গঠন, সরকারি কারখানার বিনিয়োগযোগ্য অব্যবহৃত জমি কাজে লাগানো। এ ছাড়া ডিজেলের দর সমন্বয়, কম দামের পণ্য থেকে বেশি দামের পণ্য উৎপাদনে মনোযোগ দেওয়া, পোশাক খাতের ইউরোপ এবং মার্কিন দুই ক্রেতা জোট অ্যাকর্ড এবং অ্যালায়েন্সের কার্যক্রমকে ইতিবাচকভাবে প্রচার ইত্যাদি।

বিনিয়োগ সম্মেলনে যেসব প্রতিশ্রুতি পাওয়া গেছে সেগুলো বাস্তবায়নের দিকে নজর দিতে হবে। এ জন্য বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হয়। বিনিয়োগকারীরা আস্থা পান না। এছাড়া ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও গ্যাস-জ্বালানি-বিদ্যুতের সরবরাহ নিশ্চিত করা জরুরি। দূর করতে হবে আমলাতান্ত্রিক জটিলতা। বন্ধ করতে হবে ঘুষ, দুর্নীতি। এ সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পারলে বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়বে এটি নিশ্চিত করেই বলা যায়।

এইচআর/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।