লেক নাকি চাষের জমি


প্রকাশিত: ০৫:১২ এএম, ২৫ জানুয়ারি ২০১৬

রাজধানীর ঐতিহাসিক শহীদ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নয়নাভিরাম লেকটি বর্তমানে পানিশূন্য মরুভূমিতে পরিণত হয়েছে। কয়েক মাস আগেও লেকের পাড়ের বেঞ্চে বসে দর্শনার্থীরা লেকের স্বচ্ছ টলমল পানি, গ্যাস টাওয়ার ও গাছগাছালির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখে বিমোহিত হতেন।
 
কিন্তু এখন লেকের পাড়ে গেলে প্রথম দৃষ্টিতে কোন চাষের জমি বলে ভুল করতে পারেন। পরবর্তীতে শুকনো লেকের নীচে হাজার হাজার পাথর দেখে সৌদি আরবের মরুভূমির কথা মনে পড়বে। গত দুইমাসেরও বেশী সময় যাবত লেকে পানিশূন্য মরুদ্যান হয়ে আছে।

lake

অনুসন্ধানে জানা গেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পানির পাম্পটি গত দুই মাসেরও বেশী সময় যাবত নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। পানির অভাবে শুধু লেকের পানির সংকটই নয়, সরকারি গুরত্বপূর্ণ স্থাপনা (কেপিআই) এই উদ্যানের সার্বিক নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা কর্মচারী ও নিরা পত্তারক্ষীদের খাওয়া-দাওয়া ও প্রাকৃতিক কার্য সম্পাদনে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কর্মকর্তা জাগো নিউজকে বলেন, জানা গেছে মেশিন বিকল থাকায় প্রথমে কিছুদিন ওয়াসার প্রতি গাড়ি ৬শ’টাকা কিনে চাহিদা মেটানো হয়েছে। পরবর্তীতে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট থেকে একটি পানির লাইনের সংযোগ নিয়ে সাময়িক সমস্যার সমাধান হয়েছে বলে ওই কর্মকর্তারা মন্তব্য করেন।

lake

সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তন চত্বরের অদূরে শিশু পার্ক সীমানা চত্বর সংলগ্ন পানির পাম্পটি বহু বছরের পুরোনো। আসলাম নামের একজন নিরাপত্তারক্ষী জানান, পাম্পটি সম্পূর্নরুপে বিকল হয়ে গেছে। নতুন করে পাম্পটি স্থাপনে এক কোটি বিশ লাখ টাকা লাগবে। নতুন পাম্প স্থাপনের ব্যাপারে কার্যক্রম চলছে বলে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাদের জানিয়েছেন।

লালবাগের বাসিন্দা ইউসুফ আলী জানান, প্রতি শুক্রবার বন্ধের দিনে তিনি স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের নিয়ে লেকের পাড়ে বসে ঘণ্টাখানেক বসে গল্পগুজব করতেন। লেকটির পানি না থাকায় গোটা উদ্যানের সৌন্দর্যহানি ঘটেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

lake

উদ্যানে প্রতিদিন মর্নিং ওয়াক করতে আসেন ইস্কাটনের বাসিন্দা হারুন মজুমদার। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, লেকের পানি না থাকায় দর্শনার্থীও কমে গেছে। এ কারণে সাম্প্রতিক সময়ে উদ্যানটিতে মাদকাসক্তদের আনাগুনা বেড়েছে। সকালে হাটার সময় গাছের নীচে ফেনসিডিলের বোতল পড়ে থাকতে দেখা যায় বলে তিনি জানান।


এমইউ/এআরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।