যতক্ষণ আগুন থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত সেনাবাহিনী থাকবে
তৌহিদুজ্জামান তন্ময় তৌহিদুজ্জামান তন্ময় , জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক সীতাকুণ্ড চট্টগ্রাম থেকে
প্রকাশিত: ০৬:৩৪ পিএম, ০৫ জুন ২০২২
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে বিস্ফোরণের আগুন যতক্ষণ পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ করতে না পারবে ততক্ষণ বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সহযোগিতা করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন।
রোববার (৫ জুন) বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের একথা জানান তিনি।
তিনি বলেন, প্রথমে আমরা চট্টগ্রাম সামরিক হাসপাতালকে প্রস্তুত করার জন্য নির্দেশ পেয়েছিলাম। ফায়ার সার্ভিসের যারা আহত ছিলেন তাদের ভর্তি করা হয়। সিএমএইচ ও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছয়জনকে হেলিকপ্টারে ঢাকার সিএমএইচ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এই এলাকায় জনসমাগম খুব বেশি ছিল। যে কারণে আহত ও ক্ষতি বেশি হয়েছে।
মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা এই এলাকা নিয়ন্ত্রণ করেছে, যাতে আরও বেশি জনসমাগম ও নাশকতামূলক কোনো কার্যক্রম পরিচালিত না হয়।
‘কনটেইনারগুলো সরানো হচ্ছে, হয়তো কিছুক্ষণের মধ্যে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসবে। ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের যে সক্ষমতা রয়েছে তা দিয়ে রাত ১০টার মধ্যে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হবে বলে আশা করছি। অন্ধকার হয়ে গেলে এখানে লাইটার দিয়ে আলোকিত করা হবে। আশা করছি এখান থেকে আর কোনো আহত বা নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটবে না।’
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সেনাবাহিনীর একটি টিম যাচ্ছে, তারা ওখানেও সহযোগিতা করবে বলে জানান মেজর জেনারেল সাইফুল আবেদীন।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সব সময় জনগণের পাশে থেকে জনগণের সেবা করে জানিয়ে সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা বলেন, দুর্যোগপূর্ণ মুহূর্তে সব সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে পাশে পাবেন। আমরা সারারাত প্রস্তুত ছিলাম, ডিসি-এসপি সকালে বলার সঙ্গে সঙ্গে এখানে চলে আসি এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখানে দুটি ড্রেন ছিল, যা বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত। এই ড্রেন দিয়ে কেমিক্যাল চলে যাওয়ার ঝুঁকি ছিল, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। আমাদের ইঞ্জিনিয়ার টিম ড্রেনগুলো ব্লক করে দিয়েছে এবং ড্রেন দিয়ে কেমিক্যাল যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এছাড়া আর কোনো সহায়তা করার প্রয়োজন হলে তা আমরা করবো।
এর আগে শনিবার (৪ জুন) রাত ১১টার দিকে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুনের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর তারা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করে। এসময় এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে ছড়িয়ে পড়তে থাকে আগুন। কিছু কনটেইনারে রাসায়নিক থাকায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত চার কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। ভেঙে পড়ে আশপাশের বাড়িঘরের জানালার কাচ।
রোববার (৫ জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ৪৯ জন নিহত হওয়ার খবর মিলেছে। এর মধ্যে আটজন ফায়ার সার্ভিস কর্মী। আহত আছেন কয়েকশ। ডিপোটিতে ১৩শ কনটেইনার ছিল বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। প্রাথমিকভাবে এ আগুনে নয়শ কোটি টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
টিটি/এএসএ/জিকেএস