কেমিক্যালের পানিতে জ্বলছে হাত-পা
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক সীতাকুণ্ড থেকে
প্রকাশিত: ১০:২৩ এএম, ০৫ জুন ২০২২
রাত গড়িয়ে সকাল হলেও ধোঁয়ার পরিমাণ বাড়তে থাকে। আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকা ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মী, পুলিশ, র্যাব, আনসার, রেড ক্রিসেন্ট ও ঘটনাস্থলে সংবাদকর্মীদের সবার চোখ জ্বালাপোড়া করছে। অনেকেরই চোখ ফুলে গেছে।
রোববার (৫ জুন) সকাল পৌনে ৯টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বিএম কন্টেইনার ডিপোতে সরেজমিন এমন চিত্র দেখা গেছে।
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কন্টেইনার ডিপোতে লাগা ভয়াবহ আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি। অগ্নিকাণ্ডে এ পর্যন্ত ১৮ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মী। আহত হয়েছেন আরও চার শতাধিক।
ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা জানিয়েছেন, কনটেইনার ডিপোতে কেমিক্যাল থাকার কারণে আগুন লাগায় অতিরিক্ত ধোঁয়ার সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে চোখ ফুলে গেছে। অতিরিক্ত লাল হয়ে গেছে। আগুন নেভানোর কাজে যে পানি ব্যবহার করা হচ্ছে সেই পানি পায়ে ও হাতে এসে লাগলে হাত ও পাও জ্বালাপোড়া করছে।
নিরাপদ দূরত্বে থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণের সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা। বর্তমানে কাজ করছেন চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও ফেনীর মোট ২৫টি ইউনিটের কর্মীরা।
এদিকে, বিএম কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ আগুনে এ পর্যন্ত ১৮ জন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে পাঁচজন ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মী। অগ্নিকাণ্ডে আহত হয়েছেন আরও চার শতাধিক। হতাহতদের মধ্যে ডিপোর শ্রমিক, স্থানীয় বাসিন্দাদের পাশাপাশি পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরাও রয়েছেন।
এছাড়া চট্টগ্রামের সব চিকিৎসকের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদেরও চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ সরকারি হাসপাতালগুলোতে কাজে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, ডিপোতে এসময় প্রায় ৫০ হাজার কনটেইনার ছিল। সেখানে থাকা দাহ্য পদার্থ থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। শনিবার দিনগত রাতে বাতাসের কারণে আগুন বাড়তে থাকে। ডিপো এলাকায় রয়েছে পানি স্বল্পতা।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (মিডিয়া সেল) মো. শাহজাহান শিকদার জাগো নিউজকে বলেন, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে শনিবার রাত ১১টা ২৫ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়। খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ৮টি ইউনিট এবং পরবর্তীতে আরও ৮টি ইউনিট পৌঁছে কাজ শুরু করে। বর্তমানে ২৫টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় সূত্র জানায়, রাত পৌনে ১১টার দিকে এক কনটেইনার থেকে অন্য কনটেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একটি কনটেইনারে রাসায়নিক থাকায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণে ঘটনাস্থল থেকে অন্তত চার কিলোমিটার এলাকা কেঁপে ওঠে। আশপাশের বাড়িঘরের জানালার কাচ ভেঙে পড়ে।
টিটি/এমআরএম