একটু বৃষ্টিতেই......


প্রকাশিত: ১১:৪১ এএম, ২২ জানুয়ারি ২০১৬

বগুড়ায় ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়নে বিগত পাঁচ বছরে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এতে প্রতি বছরের মতো এবারো বর্ষা মৌসুমে শহরের অধিকাংশ সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করেছেন শহরবাসী। দ্রুত পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ভারি বৃষ্টিপাতে বাসা-বাড়িগুলো আবারো পানিতে সয়লাব হওয়ার আশঙ্কায় রীতিমতো শঙ্কিত তারা।

অপরিকল্পিত ভাবে ড্রেন নির্মাণ এবং দীর্ঘদিন যাবৎ তা পরিষ্কার না করায় শহরের ময়লা অবর্জনা ও পলিথিনে ভরে গেছে শহরের বেশির ভাগ ড্রেন। ফলে সামান্য বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এ কারণে ভোগান্তিতে পড়ছে জনতা।

এদিকে, বগুড়া শহরের ব্যস্ততম এলাকা কবি নজরুল ইসলাম সড়কের ড্রেন সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এই মানববন্ধন। কমিউনিস্ট পার্টির জেলা সভাপতি জিন্নাতুল ইসলাম, কার্য নির্বাহী সদস্য লিয়াকত আলী, সিঙ্গার কোম্পানির ম্যানেজার সুলতান মাহমুদ মিঠু, কোয়ালিটি হোটেলের মালিক শাহান শাহ এই কর্মসূচিতে অংশ নেয়।

ব্যবসায়ী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বগুড়া শহরের কবি নজরুল ইসলাম সড়কের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। ড্রেনের ময়লা আবর্জনা রাস্তার পার্শ্বে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। এতে করে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, অন্যদিকে দুর্গন্ধে শহরবাসীরা চলাচল করতে পারছেন না।

আব্দুল জলিল নামে এক ব্যক্তি জানান, মাঘের বৃষ্টিতে শহরে চলাচল করা দায় হয়ে পড়েছে। সামনে বর্ষায় কি হবে আল্লাহ জানে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বগুড়া পৌরসভায় কাচা-পাকা সড়ক রয়েছে ৭৬৫ কিলোমিটার। সড়ক অনুপাতে ড্রেনের দৈর্ঘ্য বেশি হওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা নেই। ২১টি ওয়ার্ডে মোট ড্রেনের দৈর্ঘ্য মাত্র ৭১০ কিলোমিটার। যার মধ্যে ২৭০ কিলোমিটারই কাঁচা। শহরের পুরনো ১২টি ওয়ার্ডে যেসব ড্রেন রয়েছে তার গড় প্রশস্ততাও কম মাত্র ২ ফুট।

অপ্রশস্ত এসব ড্রেনগুলোর সিংহভাগই আবার ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হয়ে গেছে। ফলে সেগুলো দিয়ে পানি নিষ্কাশন সম্ভব হয় না বলে সামান্য বৃষ্টিতেই শহর জুড়ে সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতা। আর ভারি বৃষ্টি হলে তলিয়ে যায় হাঁটু পানিতে। প্রতি বছর জনসংখ্যা বাড়লেও সেই অনুযায়ী বাড়ছে না ড্রেন।

পৌরসভার প্রকৌশল শাখার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থ বছরে শহরে নতুন করে দুই কিলোমিটার নতুন ড্রেন নির্মাণ করা হয়েছে। আর এ বছর এখনো নির্মান কাজ ধরা হয়নি।

বর্ষা মৌসুমে শহরের যেসব এলাকায় ড্রেন উপচে পড়া পানিতে ভয়াবহ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয় সেগুলো হলো, বাদুড়তলা, বড়গোলা, টিনপট্টি, প্রেসপট্টি, কাটনারপাড়া, জিরো পয়েন্ট সাতমাথা, গালাপট্টি, চেলোপাড়া, নারুলী, সূত্রাপুর, গোহাইল রোড, ঠনঠনিয়া, মালগ্রাম, বৃন্দাবনপাড়া ও জহুরুল নগর। যে কোনো সময় ভারি বৃষ্টিপাত হলেই এসব এলাকার সব সড়ক তলিয়ে যায়।

শহরের বাদুড়তলা এলাকার বাসিন্দা আব্দুল মতিন জানান, সামান্য বৃষ্টিতেই রাস্তাগুলো ডুবে যায়। একটু বেশি বৃষ্টি হলে ড্রেনের নোংরা পানিগুলো বাড়িতে ঢুকে পড়ে। আমরা প্রতিবারই পৌরসভায় যোগাযোগ করি। কিন্তু ড্রেনগুলো মেরামত বা সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয় না।

বগুড়া পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম জানান, মূলত ড্রেনগুলো ময়লা-আবর্জনায় ভরে থাকার কারণেই বৃষ্টি হলে কিছুটা জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এবার আগে-ভাগেই ড্রেনগুলো পরিষ্কারের জন্য পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ কারণে এবার দুর্ভোগ কিছুটা কম হবে।

এ ব্যাপারে বগুড়া পৌরসভার মেয়র একেএম মাহবুবর রহমান জানান, জলাবদ্ধতা নিরসনে শহরে নতুন করে সাড়ে ৬ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। শিগগিরই কাজ শুরু করা হবে বলেও জানান তিনি।

এআরএ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।