লালকুঠি-রূপলাল হাউজ অংশ থেকে লঞ্চ টার্মিনাল সরাতে বললেন তাপস

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৬:৪৩ পিএম, ২৩ মে ২০২২

ঢাকার ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে পুরান ঢাকার লালকুঠি থেকে রূপলাল হাউজ পর্যন্ত অংশে অবস্থিত লঞ্চ টার্মিনাল অতিসত্বর সরিয়ে নিতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) আহ্বান জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস।

সোমবার (২৩ মে) দুপুরে সদরঘাটের লালকুঠি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ঢাকা সিটি নেইবারহুড আপগ্রেডিং প্রজেক্ট (ডিসিএনইউপি) প্রকল্পের আওতাধীন প্রকল্প কার্যাবলি সংক্রান্ত প্রদর্শনী কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে বিআইডব্লিওটিএকে এ আহ্বান জানান ডিএসসিসি মেয়র।

মেয়র তাপস বলেন, ‘বুড়িগঙ্গা নদী ঘেঁষে গড়ে উঠেছে আমাদের ঢাকা। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমরা এ ঐতিহাসিক স্থাপনা থেকে এখন আর বুড়িগঙ্গা দেখতে পাই না। কারণ দখলদার ও সরকারি সংস্থার ছোবলে নদী আজ দখল হয়ে গেছে। আমি বিআইডব্লিউটিএকে অনুরোধ করবো অতিসত্বর আপনারা লালকুঠি থেকে রূপলাল হাউজ পর্যন্ত অংশে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল সরিয়ে ফেলুন। ঢাকার ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে টার্মিনালের এ অংশটি দ্রুত সরিয়ে ফেলার উদ্যোগ নিন।’

ঢাকার ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে এটাই সর্বোত্তম সময় উল্লেখ করে তাপস বলেন, ‘ঢাকার ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিতে আমাকে অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিল। কিন্তু নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর দুঃখজনকভাবে দেখলাম, লালকুঠি আর ঢাকা গেটই শুধু করপোরেশনের আওতাধীন। রূপলাল হাউজসহ যেসব স্থাপনা ঢাকার অস্তিত্ব সৃষ্টি করেছে, ঢাকাকে পরিচিতি দিয়েছে সেগুলো করপোরেশনের আওতাধীন নয়। তাই রূপলাল হাউজ দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতায় হস্তান্তর করতে আজকের অনুষ্ঠানে প্যানেলিস্টদের যে দাবি, সেই দাবির সঙ্গে আমিও একাত্মতা পোষণ করছি। রূপলাল হাউজ আমাদের হস্তান্তর করলে আমরা এর পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করবো। আমরা ঢাকার সব ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ও স্মৃতিস্তম্ভের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে চাই।’

অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের কান্ট্রি ডিরেক্টর মারসি মিয়াং টেমবন বলেন, ‘লালকুঠি সংস্কারসহ ডিসিএনইউপি প্রকল্পের আওতায় গৃহিত কার্যাবলির মাধ্যমে যেসব কার্যক্রম নেওয়া হয়েছে এবং তার যে প্রদর্শনী আজ আয়োজন করা হয়েছে, তাতে আমি সত্যিকার অর্থেই আনন্দিত।’

এ সময় বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর টেমবন ১৮৮০ সালে প্রতিষ্ঠিত লালকুঠি এখনো দাঁড়িয়ে আছে দেখে বিস্ময় প্রকাশ করেন এবং ঐতিহ্য পুনরুদ্ধারে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বিশ্বব্যাংকের সাউথ এশিয়া সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্টের রিজিওনাল ডিরেক্টর জনরুম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি ফজলে রেজা সুমন, দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ বক্তব্য দেন।

এর আগে আলোচনায় অংশ নেন ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুন, বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের সভাপতি প্রকৌশলী মো. নুরুল হুদা, বিশ্বব্যাংকের সাউথ এশিয়া সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্টের রিজিওনাল ডিরেক্টর জনরুম, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের সভাপতি ফজলে রেজা সুমন, দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফরিদ আহাম্মদ।

এসময় করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা এয়ার কমোডর সিতওয়াত নাঈম, প্রধান প্রকৌশলী সালেহ আহম্মেদ, করপোরেশনের সচিব আকরামুজ্জামান, প্যানেল মেয়র ও ৪৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শহিদ উল্লাহসহ ওয়ার্ড কাউন্সিলররা উপস্থিত ছিলেন।

আরএসএম/এমএএইচ/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।