বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে মাঠে নামছে এফবিসিসিআই


প্রকাশিত: ০২:৫৫ পিএম, ২১ জানুয়ারি ২০১৬

সরকারসহ বাজার সংশ্লিষ্টদের নানা ইতিবাচক উদ্যোগের পরও ব্যাপক উত্থান-পতনে চলছে দেশের পুঁজিবাজার। একের পর এক দরপতনে আস্থা হারাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। পাশাপাশি বাজারে আসছেনা নতুন বিনিয়োগকারী। আর এ পেক্ষাপটে পুঁজিবাজার উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরাতে মাঠে নামছে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআিই।

একই সঙ্গে নতুন বিনিয়োগকারী বাড়াতে কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি ৬৪ জেলায় এফবিসিসিআইয়ের নেতৃত্বে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগ সংকান্ত্র বিভিন্ন বিষয়ে প্রচারণা চালানোর পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সংগঠনটি।  

এফবিসিসিআিই সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ধস পরবর্তীতে এ ধরনের কোনো উদ্যোগ নেয়নি এফবিসিসিআিই। দীর্ঘ ৫ বছর পর পুঁজিাবাজার উন্নয়নে প্রথম উদ্যোগ নিলো ব্যবসায়ীদের এই শীর্ষ সংগঠন। এর ধারাবাহিকতায় পুঁজিবাজার উন্নয়নে ইতিমধ্যে এফবিসিসিআই একটি স্ট্যাডিং কমিটি গঠন করেছে। কমিটি পুঁজিবাজার উন্নয়নে একটি সুপারিশ তৈরি করবে। যা এফবিসিসিআিই পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে সরকারের নিকট সুপারিশ আকারে পেশ করা হবে বলে জানা গেছে।

এদিকে স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম বৈঠক বৃহস্পতিবার শেষ হয়েছে। বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হলেও কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তবে বাজার উন্নয়নে পরবর্তীতে আরো একটি বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে বলে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে।

বৈঠক সূত্রে আরো জানা গেছে, আগামী বাজেটকে সামনে রেখে বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছে স্ট্যান্ডিং কমিটি। এর মধ্যে অন্যতম ছিলো প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ট্যাক্স কমানো, মিউচুয়াল ফান্ডের ভূমিকা সক্রিয় রাখা, নতুন বিনিয়োগকারীদের বাজারে আকৃষ্টা করার কৌশল, তরুণ বিনিয়োগকারী বাড়ানোর লক্ষ্যে কলেজ বিশ্ববিদ্যালগুলোতে পুঁজিবাজার সম্পর্কে প্রচারণা চালানো ইত্যাদি।

এছাড়াও সাধারণ বিনিয়োগকারীরা যেন বাজারে এসে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই লক্ষ্যে বহির্বিশ্বের আদলে বিভিন্ন মেয়াদি স্কিম চালু উদ্যোগ। নতুন বিনিয়োগকারী বাড়ানোর ক্ষেত্রে এফবিসিসিআইর জেলা চেম্বারগুলোর মাধ্যমে প্রচার প্রচারণা চালানোর বিষয়ে আলোচনা করেছে স্ট্যাডিং কমিটি।

আলোচনায় ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের পক্ষে বলা হয়েছে, এফবিসিসিআইর মাধ্যমে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখতে চান তারা। এছাড়া আগামী এক মাসের মধ্যে পুঁজিবাজার উন্নয়নে কি ধরনে সিদ্ধান্ত এফবিসিসিআই নিতে পারে সেই বিষয়ে একটি প্রস্তাবনা দিবে ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন।

এ সম্পর্কে ব্রোকারেজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এর আহ্বায়ক ও এফবিসিসিআই ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়াম্যান আহসানুল ইসলাম টিটু বলেন, এফবিসিসিআিই গঠিত পুঁজিবাজার স্ট্যাডিং কমিটির প্রথম সভা হয়েছে। বাজার উন্নয়নে এফবিসিসিআই’র কি করণীয় আছে তা নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। এফবিসিসিআই আমাদের নিকট একটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা চেয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যে আমরা তাদেরকে একটি প্রস্তাবনা দেবো।

শিল্পক্ষেত্রে মূলধন সংগ্রহ এবং বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে দেশের পুঁজিবাজার শক্তিশালী করা প্রয়োজন। বাজার স্থিতিশীলতা অক্ষুণ্ণ রাখার পাশাপাশি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে পুঁজিবাজারের ভিত শক্তিশালী এবং টেকসই করতে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণ রাখার বিকল্প নেই বলেও বৈঠকে উঠে এসেছে।

এ সম্পর্কে ট্যান্ডিং কমিটির কো চেয়ারম্যান মো. আলী জামান জানান, আসলে আমরা প্রথম বৈঠকে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়ে আলোচনা করেছি। শেয়ারবাজার সংশ্লিস্ট স্টেক হোল্ডারদের সমন্বয়ে পরবর্তী বৈঠকে আলোচনা করে এজেন্ডা নির্ধারণ করা হবে। যা এফবিসিসিআইর পর্ষদের সুপারিশক্রমে সরকারের নিকট পেশ করা হবে।

তিনি আরো বলেন, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের যাতে কম বেশি ঝুঁকিমুক্ত রাখা যায় তা বিবেচনায় রেখে অ্যাজেন্ডা তৈরি করবে এফবিসিসিআই স্ট্যান্ডিং কমিটি।

এসআই/এসএইচএস/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।