ঘাটতি কমিয়ে বিদ্যুতে ভর্তুকি অব্যাহত রাখার সুপারিশ ক্যাবের
পাইকারিভাবে বিদ্যুতের দাম না বাড়িয়ে বরং ঘাটতি কমানোর সুপারিশ করেছে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। পাশাপাশি সরকারের বিদ্যমান ভর্তুকি অব্যাহত রাখারও প্রস্তাব করা হয়েছে।
বুধবার (১৮ মে) রাজধানীর বিয়াম ফাউন্ডেশনের মিলনায়তনে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের ওপর গণশুনানির আয়োজন করে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন। এসময় এ সুপারিশ করেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম।
শামসুল আলম বলেন, পাইকারি বিদ্যুতের প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি সমন্বয়ে মূল্যহার বাড়ানো কিংবা ভর্তুকি দিতে হবে না। বরং অন্যায়, অযৌক্তিক ও লুণ্ঠনমূলক ব্যয়বৃদ্ধির পরিবর্তে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত তেল বিপিসির মাধ্যমে আমদানি করে মোট ৮ হাজার ৮৩৩ কোটি টাকা ঘাটতি কমনোর প্রস্তাব করা হলো।
প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়, অবৈধভাবে নির্ধারিত ডিজেল ও ফার্নেস তেলের বর্ধিত মূল্য এবং কুইক রেন্টালের বিদ্যুৎ অবৈধভাবে ক্রয়কৃত মূল্য বিইআরসি কর্তৃক পুনর্মূল্যায়নক্রমে নির্ধারিত যৌক্তিক বর্ধিত মূল্য ও পুনর্নির্ধারণ মূল্য পিডিবির পরিবর্তে সরকারি ভর্তুকির মাধ্যমে পরিশোধের প্রস্তাব করা হলো।
ক্যাব উপদেষ্টা বলেন, পিডিবি মুনাফাভিত্তিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়। পিডিবির রাজস্ব চাহিদায় মুনাফা ও কর্পোরেট ট্যাক্স অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে বিইআরসির কারিগরি কমিটির (টিসির) প্রস্তাবে আপত্তি জানানো হলো।
তিনি বলেন, সরকারি, যৌথ ও ব্যক্তি মালিকানাধীন প্ল্যান্টসমূহে বিদ্যুৎ উৎপাদনে সংশ্লিষ্ট ব্যয়সমূহে অন্যায় ও অযৌক্তিক ব্যয় চিহ্নিত ও পরিমাণ নির্ধারণ এবং প্রতিকারের লক্ষ্যে স্বার্থ সংঘাত মুক্ত পক্ষগণ প্রতিনিধি নিয়ে একটি কমিটি প্রস্তাব করা হলো।
ক্যাব উপদেষ্টা পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে যে পরিমাণ অর্থ বিদ্যুৎ উন্নয়ন তহবিল থেকে ইকুইটি বিনিয়োগ করা হয়, সে পরিমাণ অর্থের অনুপাতে শেয়ার ভোক্তাদের পক্ষে পিডিবিকে দেওয়ার আদেশের প্রস্তাব করেন।
বিদ্যুৎ খাতের প্রতিটি লাইসেন্সধারীর প্রায় শতভাগ শেয়ারের মালিক পিডিবি। তাই এসব লাইসেন্সধারীর ওপর পিডিবির কর্তৃত্ব এবং পিডিবি ও বিইআরসির তাদের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। একই সঙ্গে বিইআরসির কাছে পিডিবির জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য বিদ্যুৎ খাতকে স্বার্থ সংঘাত মুক্ত হতে হবে বলে মন্তব্য করেন ক্যাব উপদেষ্টা।
পাইকারি রেটে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৬৫ দশমিক ৫৭ শতাংশ অর্থাৎ, ৩ টাকা ৩৯ পয়সা বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড। অন্যদিকে এ প্রস্তাবের বিপরীতে ৫৭ দশমিক ৮৩ শতাংশ অর্থাৎ, ২ টাকা ৯৯ পয়সা বাড়ানোর সুপারিশ করে কারিগরি টিম।
এমআইএস/আরএডি