স্ত্রীর গালে গরম খুন্তির ছ্যাকা দিল স্বামী
বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় ৩ লাখ টাকা যৌতুক না দেয়ায় এক গৃহবধূর মুখমণ্ডল এবং দুই হাত গরম খুন্তি (খুতি) দিয়ে ঝলসে দিয়েছে স্বামী মামুন হাওলাদার। এমন অভিযোগ স্ত্রী সাথীর। নির্যাতনের পর দগ্ধ অবস্থায় গৃহবধূকে বিনা চিকিৎসায় একদিন ঘরে আটকে রাখা হয় বলে জানিয়েছেন সাথী আক্তার। ঘটনাটি উপজেলার কাজীরহাট থানার পশ্চিম রত্তনপুর গ্রামের।
এদিকে মঙ্গলবার সকালে সাথীকে বাবা আব্দুর রব হাওলাদার তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শেরে-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করেন। নির্যাতনকারী মামুন (স্বামী) রত্তনপুর গ্রামের হাওলাদার বাড়ির মতিউর রহমান হাওলাদারের ছেলে। সাথী বেগমের বাড়ি পাশ্ববর্তী মুলাদী উপজেলার চরডিগ্রি গ্রামে।
৭ বছর আগে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। তামজিদ নামে তাদের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাথী জানান, তার স্বামী মুলাদী বন্দরে ব্যবসা করেন। সম্প্রতি তিনি ব্যবসা সম্প্রসারণ করার জন্য তার (সাথী) বাবার বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য চাপ দেয়। মেয়ের সুখের কথা চিন্তা করে দরিদ্র বাবা আব্দুর রব হাওলাদার গত ১৪ ডিসেম্বর মামুনকে ২ লাখ টাকা দেয়। কিন্তু বাকী ৩ লাখ টাকা না দেয়ায় গত শনিবার রাতে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হয় মামুন। পরদিন রোববার সকালে গ্যাসের চুলায় খুন্তি গরম করে আকস্মিক সাথীর ডান গালে ছ্যাকা দেয় মামুন। এ সময় ধস্তাধস্তিতে তার দুই হাতও পুড়ে যায়। এ অবস্থায় দ্বিতীয় দফায় স্ত্রীকে মারধর করেন মামুন। পরে তাকে ঘরে আটকে রেখে স্বামী পালিয়ে যায়।
বাবা আব্দুর রব হাওলাদার জানান, নির্যাতনের খবর পেয়ে সোমবার সাথীকে উদ্ধার করে নিজের মুলাদীর বাড়ি নিয়ে যান। আজ মঙ্গলবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় নির্যাতনকারী মামুনের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সাথী এবং তার পরিবার।
মেডিকেলের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসক মাহফুজুর রহমান সুজন জানান, সাথী সুস্থ হয়ে উঠলেও তার ক্ষতস্থানে দাগ থেকে যেতে পারে।
বরিশাল জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনিছুর রহমান জানান, গৃহবধূকে নির্যাতনকারী মামুনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাইফ আমীন/এমএএস/এমএস