ঈদের ছুটি: আকাশপথে চাপ সামলাতে অতিরিক্ত ফ্লাইট
আসন্ন ঈদুল ফিতরের ছুটিতে যাত্রী চাপ বাড়ায় অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের সংখ্যা বাড়িয়েছে বাংলাদেশি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ার। এরই মধ্যে এসব ফ্লাইটের টিকিটও বিক্রি হয়ে গেছে।
ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (২৮ এপ্রিল) থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিমানে ঈদযাত্রা শুরু করবেন যাত্রীরা। পরদিন শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) থেকে যাত্রী পরিবহন আরও বাড়বে। এর মধ্যে সৈয়দপুর, যশোর, রাজশাহী ও বরিশালে টিকিটের চাহিদা বেশি। ঈদের পর কক্সবাজারে টিকিটের চাপ রয়েছে।
দেশে সড়ক, নৌ ও রেলপথে যাতায়াতে দুঃসহ ভোগান্তি থেকে বাঁচতে দেশের অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটের চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। বিশেষ করে ঈদযাত্রায় স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করতে চান যাত্রীরা। ফলে নিরাপদ ও আরামদায়ক যাতায়াতে যাত্রীদের প্রথম পছন্দ বিমান। এখন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ার দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে দিনে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার যাত্রী পরিচালনা করে।
এর মধ্যে আসন্ন ঈদুল ফিতরে নীলফামারীর সৈয়দপুর, যশোর, রাজশাহী ও বরিশালের টিকিট চাহিদা বেশি। চট্টগ্রাম এবং সিলেটে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় টিকিট চাহিদা বাড়ছে। যাত্রী চাহিদা না থাকায় ঈদের আগে কক্সবাজারে ফ্লাইট কমছে। তবে ঈদের পর টানা এক সপ্তাহ কক্সবাজারে টিকিট চাহিদা রয়েছে।
ইউএস-বাংলার জনসংযোগ বিভাগ সূত্র জানায়, দেশে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে দ্বিতীয় বৃহত্তম বাংলাদেশি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স। আগামী ২ বা ৩ মে পবিত্র ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ ধরে সৈয়দপুর, যশোর, রাজশাহী, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট ও কক্সবাজার ফ্লাইটের টিকিট বিক্রি প্রায় শেষ। এক থেকে দেড় মাস আগ থেকে এই টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে ৯৫ শতাংশ টিকিট বিক্রি শেষ হয়েছে। এর মধ্যে যাত্রী চাহিদা বাড়ায় মঙ্গলবার (২৬ এপ্রিল) রাজশাহীতে একটি এবং সৈয়দপুরে দুটি ফ্লাইট যোগ হয়েছে। এই তিনটি ফ্লাইটে দুই শতাধিক যাত্রী যাতায়াত করবে।
জানতে চাইলে ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) মো. কামরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, করোনার কারণে গত দুই বছর বিমানে যাত্রী পরিবহনে নানা বিধিনিষেধ ছিল। এখন দেশে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বিমান টিকিটের চাহিদা বেড়েছে। যাত্রীদের চাহিদা মেটাতে ওই তিনটি ফ্লাইট বাড়িয়েছে ইউএস বাংলা।
তিনি বলেন, ওই কয়েকটি গন্তব্যের প্রায় সব টিকিট বিক্রি শেষ হয়েছে। এর মধ্যে ২৮, ২৯, ৩০ ও ১ মে টিকিটের চাহিদা বেশি রয়েছে। ঈদের পরও যাত্রী চাপ রয়েছে। বিশেষ করে ৪ থেকে ৮ মে ঢাকামুখী টিকিট বেশি বিক্রি হয়েছে। একই সময় কক্সবাজারে আসা-যাওয়ার টিকিট বিক্রি বেশি হয়েছে।
অন্যদিকে, নভোএয়ারও দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে ২৫টি ফ্লাইট পরিবহন করছে। এবার ঈদে সৈয়দপুর, যশোর, রাজশাহী ও বরিশালে টিকিট চাহিদা বেশি রয়েছে। ফলে তারাও দুটি গন্তব্যে তিনটি ফ্লাইট বাড়িয়েছে।
বিমান সংস্থাটি জানিয়েছে, এক-দেড় মাস আগ থেকেই ২৮, ২৯, ৩০ এপ্রিল ও ১ মে ফ্লাইটের টিকিট কেনা শুরু করেছিলেন যাত্রীরা। গত চার-পাঁচ দিন আগে প্রায় সব ফ্লাইটের টিকিট বিক্রি শেষ হয়েছে। এরপর টিকিট চাহিদা বাড়ায় সৈয়দপুরে দুটি ও রাজশাহীতে একটি ফ্লাইট বাড়ানো হয়েছে। এসব ফ্লাইটের টিকিটও বিক্রি শেষ পর্যায়ে রয়েছে।
জানতে চাইলে নভোএয়ারের মার্কেটিং অ্যান্ড সেলস বিভাগের প্রধান মেজবাহ-উল-ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, যাত্রী চাহিদা মাথায় রেখে তারা অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট বাড়িয়েছেন। বৃহস্পতিবার থেকে ঢাকা ছাড়া শুরু করবেন যাত্রীরা।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স: বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন গন্তব্যে দিনে ২০-২৫টি ফ্লাইট পরিচালনা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। তারাও এক মাস আগে থেকে ঈদের সময়ের টিকিট বিক্রি শুরু করেছে। এই এয়ারলাইন্সেও রাজশাহী, যশোর ও সৈয়দপুর রুটে বিমানের টিকিটের চাহিদা বেশি। এ ছাড়া ঈদের দ্বিতীয় দিন থেকে পরবর্তী সাতদিন কক্সবাজার ও সিলেটের টিকিটের চাহিদা বেশি রয়েছে। তবে তারা ফ্লাইট বাড়ায়নি বলে জানা গেছে।
এমএমএ/আরএডি/জিকেএস