যন্ত্রাংশ চুরি করে বিক্রি করা হতো সেই গাড়ির মালিকের কাছেই

নিজস্ব প্রতিবেদক
নিজস্ব প্রতিবেদক নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০২:৪৮ পিএম, ২৭ এপ্রিল ২০২২
চুরি করা গাড়ির যন্ত্রাংশ উদ্ধার করে পুলিশ

রাজধানীতে দামি গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরির সঙ্গে জড়িত একটি চক্র। যেই যন্ত্রাংশের চাহিদা বেশি, কিন্তু মার্কেটে নেই, এমন গাড়ি লক্ষ্য করে চুরি করা হতো। এরপর এসব যন্ত্রাংশ চোরদের থেকে সংগ্রহ করে দোকানদাররা বেশি দামে গাড়ির মালিকের কাছেই বিক্রি করতো।

এভাবেই রাজধানীতে গাড়ির পার্টসের দোকানদারদের সঙ্গে যোগসাজশ করে চুরি করে আসছিলো একটি চক্র। চক্রটি গাড়ির সাইড লুকিং মিরর, মিরর কাভার, গ্লাসের বিট, গ্লাসের কর্নার বিটসহ দরজার বিট চুরি করতো।

দিনের বেলায় যেখানে লোকজন কম সেই জায়গা, আর রাতে যেখানে একটু অন্ধকার সেখান থেকে কৌশলে ২-৩ মিনিটে গাড়ির পার্টস খুলে নেওয়া হতো।

মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর পল্টন ও ভাটারায় অভিযান চালিয়ে গাড়ির পার্টস চোর চক্রের মূলহোতাসহ সাতজনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।

গ্রেফতাররা হলেন- মো. এনামুল মোল্লা (৩৫), মো. এনামুল হক ওরফে এনাম (৪৭), মো. বকুল চৌধুরী (২৪), শরিফ আহম্মেদ ওরফে কালু (৪০), বিল্লাল হোসেন (২৮), মো. ইকবাল হোসেন ওরফে পলাশ (৩৪) ও মো. ইকবাল খান (৩২)।

যন্ত্রাংশ চুরি করে বিক্রি করা হতো সেই গাড়ির মালিকের কাছেই

গ্রেফতারের সময় তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন মডেলের প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও জিপ গাড়ির সাইড লুকিং মিরর-১২৪ পিস, সাইড মিররের কভার-১৯ পিস, লুকিং গ্লাসের কর্নার বিট-১০৭ পিস, হেরিয়ার জিপ গাড়ির গ্রিল লোগো ২ পিস, কমপ্লিট মিরর-১২ পিস, এক্সিও প্রাইভেটকারের দরজার বিট-৩০ পিস, কমপ্লিট সাইড মিরর ১৮ পিস, বাম্পার ক্যাপ-৬ জোড়া, ২৬ পিস গাড়ির পেছনের ডালার বিট জব্দ করা হয়।

বুধবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (দক্ষিণ) পুলিশের যুগ্ম-কমিশনার মাহবুব আলম।

তিনি বলেন, চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরি করে কেনাবেচা করতো। এ চক্রের মূলহোতা মো. এনামুল মোল্লা নিজে চুরি না করলেও তার নিয়ন্ত্রণে বেশ কয়েকজন চুরি করতো। চুরির এসব যন্ত্রাংশ রাজধানীর পল্টন স্কাউট মার্কেট, মহাখালীর জেবা টাওয়ার, বারিধারার জে-বকুসহ একাধিক মার্কেটে পাওয়া যায়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা জানান, দীর্ঘদিন ধরে চোরদের কাছ থেকে গাড়ির চোরাই যন্ত্রাংশ সংগ্রহ করে কার প্লাস মার্কেটের কালু, বিল্লাল, স্কাউট মার্কেটের চুন্নু, পলাশ, বারিধারার ইকবাল, মহাখালীর জেবা মার্কেটের নাহিদ, পরান, মামুন ও ধোলাইখালের সানালদের কাছে বিক্রি করে আসছিল।

যন্ত্রাংশ চুরি করে বিক্রি করা হতো সেই গাড়ির মালিকের কাছেই

গ্রেফতারদের নামে আগেও চোরাই পার্টস কেনাবেচার মামলা রয়েছে। তারা গত ৭-৮ বছর ধরে গাড়ির চোরাই যন্ত্রাংশ কেনাবেচা কাজের সঙ্গে জড়িত। অনেক ক্ষেত্রে তারা যে মালিকের পার্টস চুরি করে, দোকানদার সেই পার্টস আবারও উচ্চদামে ওই মালিকের কাছেই বিক্রি করে।

ডিবির এই কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে সাতটি গাড়ির পার্টসের দোকানের সন্ধান পাওয়া যায়, যারা চোরাই পার্টস বিক্রি করে। এর মধ্যে রয়েছে- পল্টন স্কাউট মার্কেটের দুটি দোকান, মহাখালী জেবা টাওয়ারের তিনটি দোকান, ধোলাইখালের একটি দোকান ও বারিধারা জে-বক্লের একটি দোকান।

গোয়েন্দা লালবাগ বিভাগের সংঘবদ্ধ অপরাধ ও গাড়ি চুরি প্রতিরোধ টিমের সহকারী পুলিশ কমিশনার মধুসূদন দাস জাগো নিউজকে বলেন, গ্রেফতার চক্রের মূলহোতা এনামুল হকের চোর চক্রের সদস্যরা থাকতেন গুলশান, উত্তরা, মিরপুর ও ধানমন্ডি এলাকায়। আর কালুর সদস্যরা পল্টনে থাকতেন। বারিধারা এলাকায় থাকতেন ইকবালের নিয়ন্ত্রণে চোর চক্রের সদস্যরা।

টিটি/জেডএইচ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।