ধর্মঘটে যাচ্ছে ১৮ হাজার বেকার নার্স


প্রকাশিত: ০৮:৪৯ এএম, ১৮ জানুয়ারি ২০১৬

লাগাতার অবস্থান ধর্মঘটে নামছে ১৮ হাজার বেকার নার্স। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ও পরীক্ষার পরিবর্তে আগের নিয়মে ব্যাচ, মেধা ও সিনিয়রটির ভিত্তিতে নার্স নিয়োগের দাবিতে মঙ্গলবার থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান ধর্মঘট শুরু করবেন তারা।

বাংলাদেশ ডিপ্লোমা বেকার নার্সেস এসোসিয়েশন (বিডিবিএনএ) মহাসচিব ফারুক হোসাইন আজ  (সোমবার) এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ইতিপূর্বে ২৭ ডিসেম্বর তারা লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি শুরু করলেও তখন সিনিয়র নার্স নেতাদের অনুরোধে কর্মসূচি স্থগিত করেছিলেন। কিন্তু কাল থেকে শুরু হওয়া লাগাতার কর্মসূচি দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বিডিবিএনএ’র একাধিক নেতা জাগো নিউজকে জানান, বর্তমানে সারাদেশে ১৮ হাজার বেকার নার্স রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৪ হাজার নার্সের সরকারি চাকরির বয়স শেষ হতে চলেছে। ২০০৬ সালের পর থেকে তিন তিনবার ব্যাচ, মেধা ও সিনিয়রটির ভিত্তিতে নার্স নিয়োগ দেয়া হয়েছে।

তারা বলেন, দশ বছর আগে একসঙ্গে পাশ করেও বহু নার্স চাকরি পাননি। ফলে পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হলে অনেক সিনিয়র নার্স চাকরি বঞ্চিত হবেন। তাছাড়া পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেয়া হলে নিয়োগকে কেন্দ্র করে অর্থ বাণিজ্য শুরু হবে।  

এদিকে স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে অচিরেই ১০ হাজার নার্স নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি হবে। গত ১৩ জানুয়ারি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে নিয়োগ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্তসমুহ পাবলিক সার্ভিস কমিশন (পিএসসি) এ পাঠানো হয়েছে। খুব শিগগিরই পিএসসি নার্স নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করবে বলে আশা করছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

একসঙ্গে ১০ হাজার নার্স নিয়োগ দেয়া হবে এটি নি:সন্দেহে খুশীর খবর হলেও বেকার নার্সরা অখুশী। রোববার আগের নিয়মে নিয়োগের দাবিতে শত শত বেকার নার্স সেবা পরিদফতর ঘেরাও করে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। খবর পেয়ে স্বাস্থ্যসচিব সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম সেবা পরিদফতরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক নীলুফার ফারহাদ ও বিডিবিএনএ’র পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দলকে মন্ত্রণালয়ে ডেকে নেন। কিন্তু বিডিবিএনএ নেতারা তাদের দাবিতে অনড় থাকলে বৈঠক ভেস্তে যায়। এ খবর শুনে শত শত নার্স রাত পর্যন্ত সেবা পরিদফতর ঘেরাও করে রাখে।

সেবা পরিদফতরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক নীলুফার ফারহাদ আজ জাগো নিউজকে বলেন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও স্বাস্থ্যসচিবসহ সংশ্লিষ্ট সকলেই নার্স নিয়োগের ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ১০ হাজার নার্স নিয়োগের ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে গত ১৩ জানুয়ারী পাবলিক সার্ভিস কমিশনে (পিএসসি) প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট পাঠানো হয়। তারা কাগজপত্র পাওয়ার পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক করে কিভাবে নিয়োগ হবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

তিনি বলেন, আন্দোলনরত নার্সরা ভুল বুঝে আন্দোলন করছে। কি প্রক্রিয়ায় নিয়োগ হবে সে ব্যাপারে এখনও চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে একটি সূত্র জানান, নার্সরা এখন ২য় শ্রেনীর কর্মকর্তা। তাই তাদের পিএসসির মাধ্যমে পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দিতে হবে।

বিডিবিএনএ মহাসচিব ফারুক হোসাইনের কাছে এ বাধ্যবাধকতা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ইতিপূর্বেও পিএসসির মাধ্যমে  নার্স নিয়োগ ব্যাচ, মেধা ও সিনিয়রটির ভিত্তিতে দেয়া হয়েছে। এটি কোন সমস্যা নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।

এমইউ/এআরএস/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।