ঈদে জমজমাট পুরান ঢাকার ফুটপাতের বেচাকেনা
আসন্ন রমজানের ঈদ উপলক্ষে জমজমাট হয়ে উঠেছে পুরান ঢাকার ফুটপাতের বেচাকেনা। ঈদকে সামনে রেখে সাধারণ মানুষ কেনাকাটা করছেন এখান থেকে। কম দামে পোশাক কিনতে সবাই বিশেষ করে মধ্যবিত্ত-নিম্নমধ্যবিত্তরা ফুটপাতের দারস্থ হচ্ছেন। এই বছর লকডাউনের প্রকোপ না থাকায় পুরান ঢাকার ফুটপাতের দোকানগুলো এখন সরগরম।
শুক্রবার (২২ এপ্রিল) সরেজমিনে রাজধানীর লক্ষ্মীবাজার, সদরঘাট, ধূপখোলার রায়সাহেব বাজার ও ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকার ফুটপাতে দেখা যায় ক্রেতা বিক্রেতাদের ভিড়। সাধ্যের মধ্যে ঈদের জন্য কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা।
সকাল থেকে ভিড় জমে রাস্তার পাশের এই অস্থায়ী দোকানগুলোতে। বিকেলে ভিড় একটু কম হলেও সন্ধ্যার পর শুরু হয় ক্রেতাদের জনসমাগম। অন্যান্য জায়গার তুলনায় সদরঘাট ও লক্ষ্মীবাজারে একটু বেশিই ভিড় দেখা যায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, লক্ষ্মীবাজার সংলগ্ন ফুটপাতে সব বয়সী নারী-পুরুষ ও শিশুদের রঙ-বেরঙের জামা-কাপড় বিক্রির ধুম পড়েছে। সালোয়ার-কামিজ, থ্রি-পিস, টপস, বোরকা, শাড়ি, ব্যাগ, নেইলপলিশ, লিপস্টিক, কাজল, চুড়ি, ফিতা, ক্লিপ, শার্ট, টি-শার্টসহ সব ধরনের পোশাক মিলছে এখানে।
ঈদ উপলক্ষে লক্ষ্মীবাজারের এই ফুটপাতে কেনাবেচা চলে রাত ১২টা পর্যন্ত। রোজার শুরু থেকেই এখানে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
সদরঘাটের ফুটপাতগুলোতে দেখা যায়, বাচ্চাদের পাঞ্জাবি ১৫০- ২০০ টাকা, শার্ট ১০০-১৫০ টাকা, প্যান্ট ২০০-২৫০ টাকা, গেঞ্জি ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বড়দের পাঞ্জাবি ৩০০-৩৫০ টাকা, শার্ট ২০০-২৫০ টাকা ও প্যান্ট ২৫০-৩০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
মেয়েদের থ্রি-পিস ৩০০-৩৫০ টাকা, সাধারণ জামা ৩৫০-৪০০ টাকা, ওড়না ১০০ টাকা ও হিজাব ১০০ টাকা করে বিক্রি করছেন এখানের দোকানিরা। তবে রঙ ও কাপড়ভেদে পোশাকের দাম ভিন্ন ভিন্ন।
এখানের ব্যবসায়ীরা জানান, সাধারণত সূত্রাপুর, শাখারী বাজার, কলতাবাজার ও বাংলাবাজার এই অঞ্চলের মানুষজন এসব ফুটপাত থেকে বেশি কেনাকাটা করেন। তবে নিম্নবিত্ত-মধ্যবিত্তদের পাশাপাশি উচ্চবিত্তরাও এখানে ভিড় করেন।
বিক্রেতারা বলেন, গত বছর ১৫ রমজান পর্যন্ত লকডাউন থাকায় বেচাকেনা ভালো হয়নি। এবার বেচাকেনা স্বাভাবিক অবস্থায় আছে। সব জিনিসের দাম বাড়ায় কাপড়ের দামও বাড়তি। তাই অনেক সময় কাস্টমাররা জিনিসপত্র ঘাটাঘাটি করে চলে যান। তবে আমরা যথেষ্ট কম দামেই বিক্রি করছি।
লক্ষ্মীবাজারের ফুটপাত থেকে কেনাকাটা করছেন গেন্ডারিয়ার বাসিন্দা শায়েরা আক্তার। তিনি বলেন, এখন ঈদের বাজার। বাচ্চাদের নিয়ে পোশাক কিনতে এসেছি। বাচ্চাদের জন্য গেঞ্জি ও থ্রী-পিস নিয়েছি।
‘এখানে মোটামুটি কম দামে ভালো মানের জিনিস পাওয়া যায়। এবার দাম একটু বেশি। কাটা কাপড় আগে নিতাম গজ ৫০ থেকে ৬০ টাকার মধ্যে, সেই কাপড় এখন গজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা করে নিচ্ছেন বিক্রেতারা।’
ফুটপাতে মার্কেট করতে আসা আরেক ক্রেতা রত্না বেগম বলেন, আমরা গরিব মানুষ। মানুষের বাসায় কাজ করি। কম টাকায় ফুটপাত থেকেই আমরা কেনাকাটা করি। এখানে কম দামে দেখে শুনে ভালো কাপড় পাওয়া যায়। তবে তিনি অভিযোগ করে বলেন, এবার কাপড়ের দাম তুলনামূলকভাবে একটু বেশিই।
রায়হান আহমেদ/এমপি/এএসএম