যৌন আবেদনে ব্যর্থ হয়েই হত্যাকাণ্ড


প্রকাশিত: ০৪:৩৮ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০১৬

নারায়ণগঞ্জ শহরের ২নং বাবুরাইল খানকা মোড় এলাকার ফ্ল্যাট বাসায় একই পরিবারের পাঁচজনকে হত্যার পেছনে নারীঘটিত বিষয় সম্পৃক্ত করে মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে।

অভিযোগে বলা হয়েছে, নিহতদের মধ্যে লামিয়া আক্তার নামের গৃহবধূকে যৌন আবেদনে ব্যর্থ হয়েই পরিকল্পিতভাবে হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয়েছে। তবে মামলায় ১২ লাখ টাকা ঋণের জের ধরেও হত্যাকাণ্ডের ঘটনার প্রথম একটি কারণ উল্লেখ করা হয়েছে।
 
রোববার নিহত তাসলিমা বেগমের স্বামী মো. শফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে ওই মামলাটি দায়ের করেন।
 
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মালেক মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এ ঘটনায় পুলিশ ইতোমধ্যে ১০ জনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। আটককৃতরা হলেন মাহফুজ, দেলোয়ার, শাহাদাত, রাসেল, নয়ন, নজিমুল ও সাইফুল ইসলাম।

মামলায় শফিকুল ইসলাম উল্লেখ করেন, আমার স্ত্রী তাসলিমা (২৮), মেয়ে সুমাইয়া (৪), ছেলে শান্ত (১০), ছোট ভাই শরীফ (২২) ও তার স্ত্রী লামিয়া (২০), শ্যালক মোর্শেদুল ওরফে মোশাররফ নারায়ণগঞ্জ শহরের বাবুরাইলে ইসমাইল হোসেনের বাড়ির নিচতলার ফ্ল্যাটে বসবাস করে আসছিলেন।

মামলায় বলা হয়, ১০ বছর ধরে আমি (শফিকুল) ঢাকার জনৈক জিয়ারুল হাসানের গাড়ির চালক হিসেবে কর্মরত রয়েছি। প্রতি সপ্তাহের বৃহস্পতিবার আমি নারায়ণগঞ্জ শহরের বাবুরাইলের বাসায় আসতাম। তবে গত শনিবার রাত ৮টা ৪০ মিনিটে আমার ছোট ভাই শরীফ আমার মোবাইলে ফোন করে অবহিত করে যে, কে বা কারা আমাদের বাবুরাইলের ফ্ল্যাটে তালা মেরে পালিয়ে গেছে। পরে আমরা তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে দুইটি কক্ষের মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পাঁচজনের মরদেহ দেখতে পাই।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, আমি পরস্পর জানতে পারি যে, আমার স্ত্রী তাসলিমার কাছে ঢাকার কলাবাগানের নাজমা ও শাহাজাহানসহ একাধিক ব্যক্তি প্রায় ১২ লাখ টাকা পেতেন যা মাসিক চক্রবৃদ্ধি সুদে নেয়া ছিল। ওই টাকা সময়মতো পরিশোধ করতে না পারায় পাওনাদাররা প্রায়ই টাকা পরিশোধের জন্য হুমকি দিতেন। এমনকি নাজমাও মাঝে মধ্যে আমার পরিবার ও সন্তানদের দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেবেন বলে হুমকি প্রদান করতেন। আমার শ্যালক মোর্শেদুল ওরফে মোশাররফের কাছেও টাকা পেতেন তারা। টাকা-পয়সা পাওয়ার সুবাধে পাওনাদাররা আমার বাসায় যাওয়া-আসা করতেন এবং এ ব্যাপারে চাপ প্রয়োগ করতেন।

এছাড়া আমার ভাগিনা মাহফুজ আমার ছোট ভাই শরীফের স্ত্রী লামিয়ার সঙ্গে ঢাকায় বসবসাসের সময়ে যৌন আবেদন করলে পরবর্তীতে মাহফুজকে আমরা ঢাকায় রেখে নারায়ণগঞ্জ চলে আসি। ভাগিনা মাহফুজ পুনরায় নারায়ণগঞ্জ এসে আমাদের বাসায় এসে শরীফের স্ত্রী লামিয়ার সঙ্গে একই ধরনের ব্যবহার ও আচরণ করতো। এতে আমার ভাইয়ের স্ত্রী লামিয়া অসন্তুষ্ট হয়। আমার স্ত্রী তাসলিমা ও ছোট ভাই শরীফের কাছে লামিয়া বিষয়টি প্রকাশ করে দেয়।

উল্লেখ্য, ১৬ জানুয়ারি রাতে নারায়ণগঞ্জ শহরের ২নং বাবুরাইল খানকা মোড় এলাকার একটি ফ্ল্যাট বাসায় একই পরিবারের পাঁচজনকে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।

নিহতরা হলেন গৃহবধূ তাসলিমা (৩৫), তার ছেলে শান্ত (১০) ও মেয়ে সুমাইয়া (৫), ছোট ভাই মোরশেদুল (২২) ও তাসলিমার জা লামিয়া (২৫)। এ ঘটনায় দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।

শাহাদাত হোসেন/এআরএ/বিএ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।